আমার আজকের ব্লগ পোস্টে আমি রাসায়নিক যোজনী কাকে বলে সে সম্পর্কে আলোচনা করবো। যোজনী শক্তি হল রাসায়নিক মৌলগুলির মধ্যে এমন একটি শক্তি যা তাদের অন্য মৌলের সাথে কোভালেন্ট বন্ধন গড়ে তোলার ক্ষমতা দেয়। এই বন্ধনগুলি আমাদের পরিচিত রাসায়নিক মৌলগুলি যেমন পানি, মিথেন, ইথানল ইত্যাদি গঠন করে।
যোজনী শক্তি ছাড়া বিভিন্ন মৌলের মধ্যে এই ধরনের কোভালেন্ট বন্ধন গড়ে উঠতে পারত না। আজকে আমরা যোজনী শক্তির প্রকৃতি এবং এর কাজের উপর আলোচনা করবো। আশা করি এই ব্লগ পোস্ট থেকে আপনারা যোজনী শক্তি সম্পর্কে কিছু জানতে পারবেন।
যাইহোক, চলুন আমরা শুরু করি!
যোজনী বলতে রাসায়নিক মৌলগুলির সেই ক্ষমতা বোঝায় যা তাদের অন্য মৌলের সাথে কোভালেন্ট বন্ধন গড়ে তোলার সামর্থ্য দান করে।
অন্য ভাবে বললে, যোজনী বলতে একটি মৌল অন্য মৌলের সাথে কতটা সংযুক্ত হতে পারে তার ক্ষমতাকে বোঝায়।
আরও সহজ ভাবে বললে, একটি মৌল যতগুলি হাইড্রোজেন অথবা অন্য মৌলের সমতুল্য পরমাণুর সাথে সংযুক্ত হয়, তার সংখ্যাকে তার যোজনী বলে।
যেমন, মিথেনে কার্বন চারটি হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত হয়েছে, সুতরাং কার্বনের যোজনী চার।
এভাবেই পানিতে অক্সিজেনের যোজনী দুই কারণ সেখানে অক্সিজেন দুইটি হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত।
যোজনী সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য:
সারমর্মে, যোজনী হল একটি মৌলের অন্য মৌলের সাথে কতগুলো কোভালেন্ট বোন্ড তৈরি করার ক্ষমতা। এটি মৌলের রাসায়নিক গুণাবলী নির্ধারণ করে।
1. পরিবর্তনশীল যোজনী:
এতে মৌলের যোজনী পরিবেশের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তনশীল যোজনী বলতে এমন যোজনীকে বোঝায় যার মান পরিবেশের উপর নির্ভর করে পরিবর্তন করে। কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হল:
সুতরাং, পরিবেশের পরিবর্তনের ফলে যোজনীর পরিবর্তনকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলে।
2. সক্রিয় যোজনী:
সক্রিয় যোজনী বলতে এমন যোজনীকে বোঝায় যা রাসায়নিক অভিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। কিছু উদাহরণ:
সুতরাং, যে যোজনী রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেয় সেটিকে সক্রিয় যোজনী বলে।
3. সর্বোচ্চ যোজনী:
সর্বোচ্চ যোজনী বলতে একটি মৌলের সবচেয়ে বেশি সম্ভাব্য যোজনীকে বোঝায়। একটি মৌলের সর্বোচ্চ যোজনী নির্ধারণ করা হয় নিম্নরূপভাবে:
উদাহরণ:
এভাবে প্রতিটি মৌলের একটি নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ যোজনী থাকে।
4. সুপ্ত যোজনী:
সুপ্ত যোজনী বলতে এমন যোজনীকে বোঝায় যার মান সেই মৌলের সর্বোচ্চ যোজনীর চেয়ে কম। অর্থাৎ যোজনীর সংখ্যা যতটুকু কম হবে সেটুকু সুপ্ত যোজনী বলা হবে।
কিছু উদাহরণ:
এভাবে সর্বোচ্চ যোজনীর থেকে কম হলে তাকে সুপ্ত যোজনী বলে।
1. লুইস স্ট্রাকচার ব্যবহার করে:
2. মৌলকের সংজ্ঞা দেখে:
3. ভ্যালেন্স ইলেকট্রন ব্যবহার করে:
4. অক্সিডেশন স্টেট ব্যবহার করে:
এভাবে যোজনী বের করা যায়। প্রতিটি পদ্ধতিতে মৌলের রাসায়নিক বোন্ডিং ক্ষমতা বিবেচনা করে যোজনী নির্ধারণ করা হয়।
কারণ:
সুতরাং, এই কারণে অক্সিজেনের যোজনী দুই।
এছাড়াও,
এভাবে প্রতিটি মৌলের একটি নির্দিষ্ট যোজনী থাকে যা তার রাসায়নিক মিলনশীলতা নির্ধারণ করে।
যোজনী শক্তি ছাড়া বিভিন্ন মৌলের মধ্যে এই ধরনের কোভালেন্ট বন্ধন গড়ে উঠতে পারত না। আজকে আমরা যোজনী শক্তির প্রকৃতি এবং এর কাজের উপর আলোচনা করবো। আশা করি এই ব্লগ পোস্ট থেকে আপনারা যোজনী শক্তি সম্পর্কে কিছু জানতে পারবেন।
যাইহোক, চলুন আমরা শুরু করি!
যোজনী কাকে বলে :-
কোন মৌল বা যৌগ যে পরিমাণ ইলেকট্রন ছেড়ে দিয়ে বা গ্রহণ করে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে তাকে তার যোজনী বলে।যোজনী বলতে রাসায়নিক মৌলগুলির সেই ক্ষমতা বোঝায় যা তাদের অন্য মৌলের সাথে কোভালেন্ট বন্ধন গড়ে তোলার সামর্থ্য দান করে।
অন্য ভাবে বললে, যোজনী বলতে একটি মৌল অন্য মৌলের সাথে কতটা সংযুক্ত হতে পারে তার ক্ষমতাকে বোঝায়।
আরও সহজ ভাবে বললে, একটি মৌল যতগুলি হাইড্রোজেন অথবা অন্য মৌলের সমতুল্য পরমাণুর সাথে সংযুক্ত হয়, তার সংখ্যাকে তার যোজনী বলে।
যেমন, মিথেনে কার্বন চারটি হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত হয়েছে, সুতরাং কার্বনের যোজনী চার।
এভাবেই পানিতে অক্সিজেনের যোজনী দুই কারণ সেখানে অক্সিজেন দুইটি হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত।
যোজনী সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য:
- - যোজনী একটি মৌলের রাসায়নিক বোন্ডিংয়ের ক্ষমতাকে নির্ধারণ করে। একটি মৌল যত বেশি অন্য মৌলের সাথে বোন্ড তৈরি করতে পারে, তার যোজনী তত বেশি।
- - প্রতিটি উপাদানের একটি নির্দিষ্ট যোজনী থাকে যা তার রাসায়নিক প্রকৃতি নির্ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ, হাইড্রোজেনের যোজনী এক, অক্সিজেনের দুই, নাইট্রোজেনের তিন, কার্বনের চার ইত্যাদি।
- - একটি মৌলের যোজনী বোঝার জন্য সেটির লুইস স্ট্রাকচার ব্যবহার করা হয়। এতে দেখা যায় মূল মৌলটি অন্য কতগুলো মৌলের সাথে বোন্ড তৈরি করেছে।
- - একই মৌলের বিভিন্ন যৌগিকে যোজনী ভিন্ন হতে পারে। যেমন CO2 এ কার্বনের যোজনী চার, কিন্তু CO এ কার্বনের যোজনী দুই।
সারমর্মে, যোজনী হল একটি মৌলের অন্য মৌলের সাথে কতগুলো কোভালেন্ট বোন্ড তৈরি করার ক্ষমতা। এটি মৌলের রাসায়নিক গুণাবলী নির্ধারণ করে।
যোজনী কত প্রকার ও কি কি :-
যোজনীর প্রধান চার প্রকার এবং তাদের বিস্তারিত আলোচনা:1. পরিবর্তনশীল যোজনী:
এতে মৌলের যোজনী পরিবেশের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তনশীল যোজনী বলতে এমন যোজনীকে বোঝায় যার মান পরিবেশের উপর নির্ভর করে পরিবর্তন করে। কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হল:
- - লৌহের যোজনী অক্সিডাইজিং এজেন্ট বা রিডাক্ট্যান্টের সাথে মিশিয়ে দেওয়ার ফলে +2 থেকে +3 হয়ে যায়।
- - সালফারের যোজনী অক্সিডাইজিং এজেন্টে +6 থেকে +4 হয়ে যায়।
- - নাইট্রোজেনের যোজনী অক্সিডাইজিং এজেন্টে +5 থেকে +4 হয়ে যায়।
- - ক্লোরিনের যোজনী জলের সাথে মিশিয়ে দেওয়ার ফলে -1 থেকে 0 হয়ে যায়।
সুতরাং, পরিবেশের পরিবর্তনের ফলে যোজনীর পরিবর্তনকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলে।
2. সক্রিয় যোজনী:
সক্রিয় যোজনী বলতে এমন যোজনীকে বোঝায় যা রাসায়নিক অভিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। কিছু উদাহরণ:
- - H2SO4 এর মধ্যে H-এর যোজনী সক্রিয় যোজনী যা অন্য মৌলের সাথে রিয়্যাক্ট করে।
- - NaOH এর মধ্যে Na-এর যোজনী সক্রিয় যা অ্যাসিড-বেস রিয়্যাকশনে অংশগ্রহণ করে।
- - KMnO4 এর মধ্যে Mn-এর যোজনী অক্সিডাইজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।
- - FeCl3 এর মধ্যে Fe-এর যোজনী লবণ হিসেবে কাজ করে।
সুতরাং, যে যোজনী রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেয় সেটিকে সক্রিয় যোজনী বলে।
3. সর্বোচ্চ যোজনী:
সর্বোচ্চ যোজনী বলতে একটি মৌলের সবচেয়ে বেশি সম্ভাব্য যোজনীকে বোঝায়। একটি মৌলের সর্বোচ্চ যোজনী নির্ধারণ করা হয় নিম্নরূপভাবে:
- - প্রতিটি মৌলের একটি নির্দিষ্ট ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা থাকে।
- - সেই ভ্যালেন্স অর্বিটাল পূর্ণ করার জন্য যতগুলো বোন্ডিং ইলেকট্রন প্রয়োজন সেটিই হল সর্বোচ্চ যোজনী।
উদাহরণ:
- - কার্বনের ভ্যালেন্স ইলেকট্রন চারটি। সুতরাং কার্বনের সর্বোচ্চ যোজনী চার।
- - অক্সিজেনের ভ্যালেন্স ইলেকট্রন দুটি। সুতরাং তার সর্বোচ্চ যোজনী দুই।
এভাবে প্রতিটি মৌলের একটি নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ যোজনী থাকে।
4. সুপ্ত যোজনী:
সুপ্ত যোজনী বলতে এমন যোজনীকে বোঝায় যার মান সেই মৌলের সর্বোচ্চ যোজনীর চেয়ে কম। অর্থাৎ যোজনীর সংখ্যা যতটুকু কম হবে সেটুকু সুপ্ত যোজনী বলা হবে।
কিছু উদাহরণ:
- - কার্বনের সর্বোচ্চ যোজনী চার। কিন্তু CO তে কার্বনের যোজনী দুই। সুতরাং CO-এ কার্বনের যোজনী সুপ্ত।
- - অক্সিজেনের সর্বোচ্চ যোজনী দুই। কিন্তু O3 তে অক্সিজেনের যোজনী এক। সুতরাং O3-এ অক্সিজেনের যোজনী সুপ্ত।
- - নাইট্রোজেনের সর্বোচ্চ যোজনী পাঁচ। কিন্তু NH3 তে নাইট্রোজেনের যোজনী তিন। সুতরাং NH3-এ নাইট্রোজেনের যোজনী সুপ্ত।
এভাবে সর্বোচ্চ যোজনীর থেকে কম হলে তাকে সুপ্ত যোজনী বলে।
যোজনী বের করার সূত্র:-
যোজনী বের করার কিছু প্রধান সূত্র:1. লুইস স্ট্রাকচার ব্যবহার করে:
- - মৌলটির লুইস স্ট্রাকচার দেখতে হবে।
- - মূল মৌলটি অন্য কতগুলো মৌলের সাথে বোন্ড তৈরি করেছে, তা গণনা করতে হবে।
- - সেই সংখ্যাই হল মৌলটির যোজনী।
2. মৌলকের সংজ্ঞা দেখে:
- - মৌলকের সংজ্ঞায় উপাদানগুলোর সাথে লেখা সাবস্ক্রিপ্ট সংখ্যাগুলো হল যোজনী।
- - যেমন, মিথেন CH4, এখানে C-এর সাবস্ক্রিপ্ট 4, তাই কার্বনের যোজনী 4।
3. ভ্যালেন্স ইলেকট্রন ব্যবহার করে:
- - মূল মৌলের ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা দেখতে হবে।
- - ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যাই হল যোজনী।
4. অক্সিডেশন স্টেট ব্যবহার করে:
- - মূল মৌলের অক্সিডেশন স্টেট জানতে হবে।
- - অক্সিডেশন স্টেটের সংখ্যাই হল যোজনী।
এভাবে যোজনী বের করা যায়। প্রতিটি পদ্ধতিতে মৌলের রাসায়নিক বোন্ডিং ক্ষমতা বিবেচনা করে যোজনী নির্ধারণ করা হয়।
অক্সিজেনের যোজনী কত :-
অক্সিজেনের যোজনী ২ ।কারণ:
- - অক্সিজেনের রাসায়নিক চিহ্ন O। এটির ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা দুই।
- - অক্সিজেনের সাধারণ অক্সিডেশন স্টেট হল +2।
- - অক্সিজেন দুইটি কোভালেন্ট বোন্ড তৈরি করতে পারে।
- - অক্সিজেন অন্য মৌলের সাথে যুক্ত হলে তার সাবস্ক্রিপ্ট সংখ্যা সাধারণত 2 থাকে (যেমন H2O)।
সুতরাং, এই কারণে অক্সিজেনের যোজনী দুই।
যোজনী চার্ট বা তালিকা:-
বিভিন্ন মৌলের যোজনী এবং যোজ্যতার একটি তালিকা নিচে দেওয়া হল:- - ধাতুর যোজনী তার অক্সিডেশন স্টেট অনুসারে পরিবর্তনশীল।
- - ট্রানজিশন মেটালগুলোর যোজনীও পরিবর্তনশীল।
- - অনেক বিকর্মি মৌলের যোজনীও এক থেকে বেশি মানের হতে পারে।
এভাবে প্রতিটি মৌলের একটি নির্দিষ্ট যোজনী থাকে যা তার রাসায়নিক মিলনশীলতা নির্ধারণ করে।
যোজনীর বৈশিষ্ট্য :-
যোজনীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:- - যোজনী বলে একটি মৌলের অন্য মৌলের সাথে সংযুক্ত হওয়ার ক্ষমতাকে।
- - যোজনী মৌলের রাসায়নিক বোন্ডিংয়ের ক্ষমতা নির্ধারণ করে।
- - প্রতিটি মৌলের একটি নির্দিষ্ট যোজনী থাকে যা তার রাসায়নিক গুণাবলী নির্ধারণ করে।
- - যোজনী উপাদানের ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হয়।
- - যোজনী সাধারণত পরিবর্তনশীল হয় এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে।
- - প্রতিটি উপাদানের একটি নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ যোজনী থাকে।
- - যোজনী যৌগিকের রাসায়নিক ফর্মুলা ও গুণ নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.