আমাদের চারপাশে থাকা প্রত্যেকটি জিনিসই কোন না কোন পদার্থ দিয়ে তৈরি। পদার্থ বলতে বোঝায় যেকোন জিনিস যা আমাদের চোখে পড়ে, আমরা স্পর্শ করতে পারি।
টেবিল, কুর্সি, গ্লাস, পানি - সবই পদার্থের উদাহরণ। আমরাও এক ধরনের পদার্থ। আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচলের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাই-অক্সাইড বের করে দেওয়া হয়। এই অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডও পদার্থের এক রূপ।
আমাদের চারপাশের পৃথিবীতে অত্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পদার্থ রয়েছে। পদার্থের তিন প্রধান অবস্থা রয়েছে - কঠিন, তরল এবং বায়বীয়। বিভিন্ন পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের কীভাবে পরিবর্তন করে তা নিয়েই আলোচনা করা হবে এই পোস্টে।
পদার্থ সম্পর্কে এছাড়া আলোচনা করা যাবে - বিভিন্ন পদার্থের গুণধর্ম, তাদের পরিবর্তন এবং পরস্পর প্রভাব। পদার্থগুলো কীভাবে আমাদের প্রত্যন্ত জীবনে প্রয়োজনীয় তাও আলোচিত হবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পদার্থবিদ্যার বিষয়বস্তু নিয়ে একটি সম্পূর্ণ আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে এই পোস্টে।
আশা করি এই বিষয়টি আপনাদের কাছে আকর্ষণীয় মনে হবে এবং পদার্থ সম্পর্কে আপনার ধারণা সমৃদ্ধ করবে। বিস্তারিত পড়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
প্রকৃতপক্ষে যার ওজর আছে, স্থান দখল করে, প্রযুক্ত বলকে প্রতিরোধ করতে পারে ও গতির স্থানান্তর করতে পারে তারাই পদার্থ ।
যেকোন বস্তু যার নিজস্ব ওজন আছে, নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা দখল করে, বাহ্যিক বলের প্রতিরোধ করতে পারে এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যেতে পারে, সেটিকেই পদার্থ বলে।
অর্থাৎ, যেকোন বস্তু যদি ওজন, আয়তন, অবস্থান এবং গতিশীলতার মত মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি থাকে, তাহলে সেটিকে পদার্থ বলা হয়।
কিন্তু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সব কিছুই পদার্থ নয়। যেমন- আলো, তাপ প্রভৃতিকে আমরা ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করতে পারি, কিন্তু এগুলো পদার্থ নয়। এগুলো হচ্ছে শক্তি।
কঠিন পদার্থ:
কিছু কিছু পদার্থ আছে যেমন- স্বর্ণ, রৌপ্য, কাঠ, চক্ ইত্যাদি যেগুলোর নির্দিষ্ট আকার, আয়তন এবং ওজন রয়েছে। এদের বলা হয় কঠিন পদার্থ।
তরল পদার্থ :
আবার, কিছু কিছু পদার্থের আয়তন এবং ওজন থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার থাকে না যেমন- পানি, দুধ, তৈল ইত্যাদি— এগুলো হচ্ছে তরল পদার্থ। এদের যখন যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রের আকার ধারণ করে।
বায়বীয় পদার্থ:
আর যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট ওজন থাকে কিন্তু কোন নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন থাকে না তারা হচ্ছে- বায়বীয় পদার্থ। যেমন- অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন ইত্যাদি। এদের যখন যে পাত্রে রাখা হয় তখন সে পাত্রের আকার ও আয়তন ধারণ করে।
প্লাজমা অবস্থা :
আমরা কঠিন, তরল এবং বায়বীয় ছাড়া আরও একটি শব্দের সাথে পরিচিত। এটি হলো 'প্লাজমা'। এটিও পদার্থের একটি। অবস্থা। চারটি অবস্থাই পদার্থের অভ্যন্তরের তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে।
প্লাজমা পদার্থের চতুর্থ অবস্থা। প্লাজমা হলো অতি উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস। এ অবস্থায় বস্তুর অণুগুলো ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনে রূপান্তরিত হয়। প্লাজমা অবস্থা সচরাচর আমাদের চোখে ধরা পড়ে না। সূর্যসহ মহাবিশ্বের নক্ষত্রসমূহের অভ্যন্তরভাগ প্লাজমা অবস্থার উদাহরণ।
তরল পদার্থের মধ্যে কণিকাগুলো গতির বিস্তার বৃদ্ধি পায় বা কণাগুলো পারস্পরিক দূরত্ব বেশি হয়, আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বলের প্রভাব কমে যায়।
বায়বীয় অবস্থায় পদার্থের মধ্যে আরও অনেক বেশি শক্তি যোগ হয় তখন কণিকাগুলোর গতি অত্যন্ত বেড়ে যায়। ফলে এলোমেলোভাবে সবদিকে ছুটাছুটি করে পরস্পরের থেকে অনেক দূরত্বে চলে যায়।
ভর: কোন বস্তুর মধ্যকার মোট পদার্থের পরিমাণই হচ্ছে তার ভর। নির্দিষ্ট কোন বস্তুর ভর সর্বত্র সমান ।
ওজন: কোন বস্তুকে পৃথিবী আকর্ষণ বল দ্বারা নিজের (পৃথিবীর) কেন্দ্রের দিকে টানে তাকে ঐ বস্তুর ওজন বলে। তাই কোন বস্তুর ওজন স্থান ভেদে বিভিন্ন হতে পারে।
আয়তন: সব পদার্থই কিছুটা জায়গা দখল করে। একে তার বিস্তৃতি বা আয়তন বলে।
ঘণত্ব: একক আয়তনের কোন বস্তুর ভরই হচ্ছে তার ঘণত্ব ।
সচ্ছিদ্রতা ধর্ম: প্রতিটি পদার্থের মধ্যে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে। একে পদার্থের সচ্ছিদ্রতা ধর্ম বলে।
সংসক্তি: আবার, প্রত্যেকটি বস্তুর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনার মধ্যে রয়েছে এক বিশেষ আকর্ষণ বল। এটাই । তার সংসক্তি।
স্থিতিস্থাপকতা: পদার্থের রয়েছে স্থিতিস্থাপকতা ধর্ম; আর এজন্যই বাইরে থেকে কোন বল প্রয়োগ করে তার দৈর্ঘ্য, আকার বা আয়তন পরিবর্তিত করতে চাইলে বাধা দেয়।
এছাড়াও পদার্থের আরও কিছু সাধারণ ধর্ম থাকে। যথা- ঘর্ষণ, সংনম্যতা, আসঞ্জন, অভেদ্যতা, মহাকর্ষ, জড়তা ও বিভাজ্যতা।
যাদের জীবন আছে তাদের জীব এবং যাদের জীবন নেই তাদের জড় পদার্থ বলা হয়।
আবার- উপাদানের উপর ভিক্তি করেও পদার্থকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-
এছাড়াও অবস্থানভেদে পদার্থ চার প্রকার,যথা
অবস্থানভেদে চার প্রকার পদার্থ উপরের আলোচনা করা হয়েছে। পদার্থের ধর্ম হিসেবে আর বাকি পদার্থের প্রকারভেদ নীচে আলোচনা করা হলো -
অর্থাৎ যেসব পদার্থকে সম্পূর্ণ রূপে বিভাজন বা পৃথক করলে শুধুমাত্র ঐ পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তাদেরকেই মৌলিক পদার্থ বলে।
কিছু উদাহরণ:
এ পর্যন্ত মোট ১০৫টি মৌলিক পদার্থ আবিস্কৃতি হয়েছে। এদের মধ্যে প্রাকৃতিক মৌলিক সংখ্যা ৯২টি এবং কৃত্রিমভাবে পাওয়া যায় ১৩টি মৌল।
১. ধাতু - যেমন লোহা, সোনা, তামা ইত্যাদি। এগুলো শক্ত, আলোকবর্ষণকারী এবং বিদ্যুতযোগ্য।
২. অধাতু - যেমন অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ক্লোরিন ইত্যাদি। এগুলো অ-ধাতুর মত আচরণ করে।
৩. ধাতুকল্প বা মিশ্রধাতু - যেমন সিলিকন, জার্মেনিয়াম, আর্সেনিক ইত্যাদি। এগুলো ধাতু ও অধাতুর মধ্যবর্তী গুণ প্রদর্শন করে।
৪. নিষ্ক্রিয় মৌল - যেমন হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, নিয়ন ইত্যাদি। এগুলো অনন্য ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে।
যৌগিক পদার্থ বলতে বোঝায় এমন পদার্থকে যা একাধিক মৌলিক পদার্থের সংযোগ বা সংযোজনের মাধ্যমে তৈরি। যৌগিক পদার্থগুলো হল মৌলিক পদার্থগুলোর উপর ভিত্তি করে গঠিত।
কিছু উদাহরণ:
পৃথিবীতে মোট যৌগিক পদার্থের সংখ্যা ৫০ লক্ষের ও বেশি।
জৈব যৌগ পদার্থ:
যে সমস্ত পদার্থ জীব কোষ থেকে তৈরি হয় তাকে জৈব পদার্থ বলে। সাধারণত এদের উপাদানে কার্বন হাইড্রোজেন নাইট্রোজেন অক্সিজেন ফসফরাস সালফার প্রভৃতি মৌলিক পদার্থ থাকে তবে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা সম্ভব প্রথম যে জৈব পদার্থ তৈরি করা হয়েছিল তা ছিল ইউরিয়া।
অজৈব যৌগ পদার্থ:
যে সকল যৌগে কার্বন-হাইড্রোজেন বন্ধন থাকে না, তাকে অজৈব যৌগ বলে। অর্থাৎ কার্বন ছাড়া সকল যৌগই অজৈব যৌগ। কারণ, হাইড্রোজেন ছাড়াও কোনো যৌগ জৈব যৌগ হতে পারে। যেমন: CCL4
- পরিবর্তনশীলতা: যৌগিক পদার্থের গুণধর্ম পরিবর্তন করা যায়।
- অশুদ্ধতা: যৌগিক পদার্থগুলো শুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় না, অন্য পদার্থের সাথে মিশ্রণের রূপে পাওয়া যায়।
- বিয়োগের ক্ষমতা: যৌগিক পদার্থকে মৌলিক পদার্থে বিয়োগ করা যায়।
- বৃহৎ পরিমাণ: যৌগিক পদার্থের পরিমাণ বৃহৎ হয়।
- বিশিষ্ট গুণধর্ম: প্রতিটি যৌগিকের নিজস্ব গুণধর্ম থাকে।
টেবিল, কুর্সি, গ্লাস, পানি - সবই পদার্থের উদাহরণ। আমরাও এক ধরনের পদার্থ। আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচলের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাই-অক্সাইড বের করে দেওয়া হয়। এই অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডও পদার্থের এক রূপ।
আমাদের চারপাশের পৃথিবীতে অত্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পদার্থ রয়েছে। পদার্থের তিন প্রধান অবস্থা রয়েছে - কঠিন, তরল এবং বায়বীয়। বিভিন্ন পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের কীভাবে পরিবর্তন করে তা নিয়েই আলোচনা করা হবে এই পোস্টে।
পদার্থ সম্পর্কে এছাড়া আলোচনা করা যাবে - বিভিন্ন পদার্থের গুণধর্ম, তাদের পরিবর্তন এবং পরস্পর প্রভাব। পদার্থগুলো কীভাবে আমাদের প্রত্যন্ত জীবনে প্রয়োজনীয় তাও আলোচিত হবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পদার্থবিদ্যার বিষয়বস্তু নিয়ে একটি সম্পূর্ণ আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে এই পোস্টে।
আশা করি এই বিষয়টি আপনাদের কাছে আকর্ষণীয় মনে হবে এবং পদার্থ সম্পর্কে আপনার ধারণা সমৃদ্ধ করবে। বিস্তারিত পড়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
পদার্থ কাকে বলে :-
দৈনন্দিন জীবনে আমরা যে দিকেই তাকাই কিছু না কিছু পদার্থ আমাদের চোখে পড়ে, যেমন, চেয়ার, টেবিল, বই, কাগজ, কলম, পানি, বাতাস ইত্যাদি।প্রকৃতপক্ষে যার ওজর আছে, স্থান দখল করে, প্রযুক্ত বলকে প্রতিরোধ করতে পারে ও গতির স্থানান্তর করতে পারে তারাই পদার্থ ।
যেকোন বস্তু যার নিজস্ব ওজন আছে, নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা দখল করে, বাহ্যিক বলের প্রতিরোধ করতে পারে এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যেতে পারে, সেটিকেই পদার্থ বলে।
অর্থাৎ, যেকোন বস্তু যদি ওজন, আয়তন, অবস্থান এবং গতিশীলতার মত মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি থাকে, তাহলে সেটিকে পদার্থ বলা হয়।
কিন্তু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সব কিছুই পদার্থ নয়। যেমন- আলো, তাপ প্রভৃতিকে আমরা ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করতে পারি, কিন্তু এগুলো পদার্থ নয়। এগুলো হচ্ছে শক্তি।
পদার্থের ভৌত অবস্থা :
- দৃশ্যমান জগতে পদার্থের তিনটি অবস্থা- কঠিন, তরল ও বায়বীয়।
- কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন আছে।
- তরল পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন আছে; কিন্তু আকার নাই এবং যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারণ করে।
- বায়বীয় পদার্থের আকার আয়তন কোনটিই নির্দিষ্ট নয়।
কঠিন পদার্থ:
কিছু কিছু পদার্থ আছে যেমন- স্বর্ণ, রৌপ্য, কাঠ, চক্ ইত্যাদি যেগুলোর নির্দিষ্ট আকার, আয়তন এবং ওজন রয়েছে। এদের বলা হয় কঠিন পদার্থ।
তরল পদার্থ :
আবার, কিছু কিছু পদার্থের আয়তন এবং ওজন থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার থাকে না যেমন- পানি, দুধ, তৈল ইত্যাদি— এগুলো হচ্ছে তরল পদার্থ। এদের যখন যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রের আকার ধারণ করে।
বায়বীয় পদার্থ:
আর যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট ওজন থাকে কিন্তু কোন নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন থাকে না তারা হচ্ছে- বায়বীয় পদার্থ। যেমন- অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন ইত্যাদি। এদের যখন যে পাত্রে রাখা হয় তখন সে পাত্রের আকার ও আয়তন ধারণ করে।
প্লাজমা অবস্থা :
আমরা কঠিন, তরল এবং বায়বীয় ছাড়া আরও একটি শব্দের সাথে পরিচিত। এটি হলো 'প্লাজমা'। এটিও পদার্থের একটি। অবস্থা। চারটি অবস্থাই পদার্থের অভ্যন্তরের তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে।
প্লাজমা পদার্থের চতুর্থ অবস্থা। প্লাজমা হলো অতি উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস। এ অবস্থায় বস্তুর অণুগুলো ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনে রূপান্তরিত হয়। প্লাজমা অবস্থা সচরাচর আমাদের চোখে ধরা পড়ে না। সূর্যসহ মহাবিশ্বের নক্ষত্রসমূহের অভ্যন্তরভাগ প্লাজমা অবস্থার উদাহরণ।
পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্ব :-
বস্তু অসংখ্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণিকা দ্বারা গঠিত। কণিকাগুলি অবিরত গতিশীল। কঠিন পদার্থের মধ্যে প্রতিটি কণা একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে থেকে অবিরত কম্পিত হয়। এদের মধ্যের প্রবল আন্তঃআণবিক শক্তি কণিকাগুলোকে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেয় না। তাই কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার আয়তন বজায় থাকে।তরল পদার্থের মধ্যে কণিকাগুলো গতির বিস্তার বৃদ্ধি পায় বা কণাগুলো পারস্পরিক দূরত্ব বেশি হয়, আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বলের প্রভাব কমে যায়।
বায়বীয় অবস্থায় পদার্থের মধ্যে আরও অনেক বেশি শক্তি যোগ হয় তখন কণিকাগুলোর গতি অত্যন্ত বেড়ে যায়। ফলে এলোমেলোভাবে সবদিকে ছুটাছুটি করে পরস্পরের থেকে অনেক দূরত্বে চলে যায়।
পদার্থের ধর্ম :-
প্রতিটি পদার্থেরই কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে যার সাহায্যে পদার্থের ভিন্নতা বোঝা যায়। এগুলোই হচ্ছে পদার্থের সাধারণ ধর্ম। এগুলো নিম্নরূপ-ভর: কোন বস্তুর মধ্যকার মোট পদার্থের পরিমাণই হচ্ছে তার ভর। নির্দিষ্ট কোন বস্তুর ভর সর্বত্র সমান ।
ওজন: কোন বস্তুকে পৃথিবী আকর্ষণ বল দ্বারা নিজের (পৃথিবীর) কেন্দ্রের দিকে টানে তাকে ঐ বস্তুর ওজন বলে। তাই কোন বস্তুর ওজন স্থান ভেদে বিভিন্ন হতে পারে।
আয়তন: সব পদার্থই কিছুটা জায়গা দখল করে। একে তার বিস্তৃতি বা আয়তন বলে।
ঘণত্ব: একক আয়তনের কোন বস্তুর ভরই হচ্ছে তার ঘণত্ব ।
সচ্ছিদ্রতা ধর্ম: প্রতিটি পদার্থের মধ্যে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে। একে পদার্থের সচ্ছিদ্রতা ধর্ম বলে।
সংসক্তি: আবার, প্রত্যেকটি বস্তুর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনার মধ্যে রয়েছে এক বিশেষ আকর্ষণ বল। এটাই । তার সংসক্তি।
স্থিতিস্থাপকতা: পদার্থের রয়েছে স্থিতিস্থাপকতা ধর্ম; আর এজন্যই বাইরে থেকে কোন বল প্রয়োগ করে তার দৈর্ঘ্য, আকার বা আয়তন পরিবর্তিত করতে চাইলে বাধা দেয়।
এছাড়াও পদার্থের আরও কিছু সাধারণ ধর্ম থাকে। যথা- ঘর্ষণ, সংনম্যতা, আসঞ্জন, অভেদ্যতা, মহাকর্ষ, জড়তা ও বিভাজ্যতা।
পদার্থ কত প্রকার ও কি কি :-
পদার্থকে প্রধানতঃ দু'শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়, যথা-- জীব ও
- জড়।
যাদের জীবন আছে তাদের জীব এবং যাদের জীবন নেই তাদের জড় পদার্থ বলা হয়।
আবার- উপাদানের উপর ভিক্তি করেও পদার্থকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-
- মৌলিক পদার্থ ও
- যৌগিক পদার্থ।
এছাড়াও অবস্থানভেদে পদার্থ চার প্রকার,যথা
- কঠিন পদার্থ
- তরল পদার্থ
- বায়বীয় পদার্থ
- প্লাজমা
অবস্থানভেদে চার প্রকার পদার্থ উপরের আলোচনা করা হয়েছে। পদার্থের ধর্ম হিসেবে আর বাকি পদার্থের প্রকারভেদ নীচে আলোচনা করা হলো -
মৌলিক পদার্থ কাকে বলে :-
মৌলিক পদার্থ বলতে বোঝায় যে পদার্থগুলো আরও সাধারণ উপ-পদার্থে ভাগ করা যায় না। একটি মৌলিক পদার্থ হল সবচেয়ে ছোট একক যার থেকে অন্য সব পদার্থ গঠিত।অর্থাৎ যেসব পদার্থকে সম্পূর্ণ রূপে বিভাজন বা পৃথক করলে শুধুমাত্র ঐ পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তাদেরকেই মৌলিক পদার্থ বলে।
কিছু উদাহরণ:
- - ইলেকট্রন: একটি ঋণাত্মক আবেদনযুক্ত সাব-এটমিক কণিকা। এটি একটি মৌলিক পদার্থ।
- - প্রোটন: একটি ধনাত্মক আবেদনযুক্ত সাব-এটমিক কণিকা। এটিও একটি মৌলিক পদার্থ।
- - কোয়ার্ক: প্রোটন ও নিউট্রনের মিশ্রণ যা হ্যাড্রন গঠন করে। এটি মৌলিক পদার্থের একটি উদাহরণ।
- - ফোটন: কাণ্টাম সিদ্ধান্তে বর্ণিত কণিকা যা আলোর একটি কোয়ান্টাম। এটিও একটি মৌলিক পদার্থ।
এ পর্যন্ত মোট ১০৫টি মৌলিক পদার্থ আবিস্কৃতি হয়েছে। এদের মধ্যে প্রাকৃতিক মৌলিক সংখ্যা ৯২টি এবং কৃত্রিমভাবে পাওয়া যায় ১৩টি মৌল।
মৌলিক পদার্থ কত প্রকার ও কি কি :-
মৌলিক পদার্থগুলো তাদের ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মূলত চারটি শ্রেণীতে বিভাগ করা হয়:১. ধাতু - যেমন লোহা, সোনা, তামা ইত্যাদি। এগুলো শক্ত, আলোকবর্ষণকারী এবং বিদ্যুতযোগ্য।
২. অধাতু - যেমন অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ক্লোরিন ইত্যাদি। এগুলো অ-ধাতুর মত আচরণ করে।
৩. ধাতুকল্প বা মিশ্রধাতু - যেমন সিলিকন, জার্মেনিয়াম, আর্সেনিক ইত্যাদি। এগুলো ধাতু ও অধাতুর মধ্যবর্তী গুণ প্রদর্শন করে।
৪. নিষ্ক্রিয় মৌল - যেমন হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, নিয়ন ইত্যাদি। এগুলো অনন্য ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে।
মৌলিক পদার্থের কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:
- - অভাগ্য: মৌলিক পদার্থগুলো আরও ছোট অংশে ভাগ করা যায় না। এগুলো হল সবচেয়ে ছোট একক।
- - অপরিবর্তনীয়তা: মৌলিক পদার্থের মৌলিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করা যায় না।
- - বিশুদ্ধতা: মৌলিক পদার্থগুলো অন্য কোন পদার্থের সাথে মিশ্রণ ছাড়া বিশুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
- - সংযোজন ক্ষমতা: মৌলিক পদার্থগুলো একে অপরের সাথে সংযোজন করে নতুন পদার্থ গঠন করে।
- - অতি সামান্য পরিমাণ: মৌলিক পদার্থগুলোর পরিমাণ খুব কম হয়।
- - বিশিষ্ট গুণধর্ম: প্রতিটি মৌলিক পদার্থের নিজস্ব এবং অনন্য গুণধর্ম থাকে।
যৌগিক পদার্থ কাকে বলে:-
রাসায়নিক বিশ্লেষণ দ্বারা যে সকল পদার্থ হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্ম বিশিষ্ট একাধিক পদার্থ পাওয়া যায় তাদের যৌগিক পদার্থ বা যৌগ বলে।যৌগিক পদার্থ বলতে বোঝায় এমন পদার্থকে যা একাধিক মৌলিক পদার্থের সংযোগ বা সংযোজনের মাধ্যমে তৈরি। যৌগিক পদার্থগুলো হল মৌলিক পদার্থগুলোর উপর ভিত্তি করে গঠিত।
কিছু উদাহরণ:
- পানি (হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সংযোগ থেকে গঠিত)
- কার্বন ডাই-অক্সাইড (কার্বন ও অক্সিজেনের সংযোগ থেকে গঠিত)
- চিনি (কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সংযোগ থেকে গঠিত)
- অ্যাসিটিক অ্যাসিড (হাইড্রোজেন, কার্বন ও অক্সিজেনের সংযোগ থেকে গঠিত)
- সোডিয়াম ক্লোরাইড (সোডিয়াম, ক্লোরিন ও হাইড্রোজেনের সংযোগ থেকে গঠিত)
পৃথিবীতে মোট যৌগিক পদার্থের সংখ্যা ৫০ লক্ষের ও বেশি।
যৌগিক পদার্থ কত প্রকার ও কি কি:
যৌগিক পদার্থ দুই প্রকার যথা- জৈব যৌগ এবং
- অজৈব যৌগ পদার্থ।
জৈব যৌগ পদার্থ:
যে সমস্ত পদার্থ জীব কোষ থেকে তৈরি হয় তাকে জৈব পদার্থ বলে। সাধারণত এদের উপাদানে কার্বন হাইড্রোজেন নাইট্রোজেন অক্সিজেন ফসফরাস সালফার প্রভৃতি মৌলিক পদার্থ থাকে তবে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা সম্ভব প্রথম যে জৈব পদার্থ তৈরি করা হয়েছিল তা ছিল ইউরিয়া।
অজৈব যৌগ পদার্থ:
যে সকল যৌগে কার্বন-হাইড্রোজেন বন্ধন থাকে না, তাকে অজৈব যৌগ বলে। অর্থাৎ কার্বন ছাড়া সকল যৌগই অজৈব যৌগ। কারণ, হাইড্রোজেন ছাড়াও কোনো যৌগ জৈব যৌগ হতে পারে। যেমন: CCL4
যৌগিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য:
- বিভাজন: যৌগিক পদার্থগুলো ছোট ছোট অংশে ভাগ করা যায়।- পরিবর্তনশীলতা: যৌগিক পদার্থের গুণধর্ম পরিবর্তন করা যায়।
- অশুদ্ধতা: যৌগিক পদার্থগুলো শুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় না, অন্য পদার্থের সাথে মিশ্রণের রূপে পাওয়া যায়।
- বিয়োগের ক্ষমতা: যৌগিক পদার্থকে মৌলিক পদার্থে বিয়োগ করা যায়।
- বৃহৎ পরিমাণ: যৌগিক পদার্থের পরিমাণ বৃহৎ হয়।
- বিশিষ্ট গুণধর্ম: প্রতিটি যৌগিকের নিজস্ব গুণধর্ম থাকে।
- মৌলিক পদার্থ থেকে গঠিত: যৌগিক পদার্থগুলো মৌলিক পদার্থ থেকে গঠিত।
১. ওজন: প্রতিটি পদার্থের নিজস্ব ওজন থাকে। ওজন একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য।
২. আয়তন: প্রতিটি পদার্থ একটি নির্দিষ্ট জায়গা দখল করে বা আয়তন থাকে।
৩. ঘনত্ব: পদার্থের ওজন এবং আয়তনের উপর নির্ভর করে পদার্থের ঘনত্ব নির্ধারিত হয়।
৪. গতিশীলতা: পদার্থ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাসরি সরে যেতে পারে। একই পদার্থের জন্য ভিন্ন অবস্থায় গতির পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।
৫. তাপমাত্রা: প্রতিটি পদার্থের একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা থাকে। পদার্থের অবস্থা তাপমাত্রার সাথে সম্পর্কিত।
৬. বিদ্যুৎ চালকতা: পদার্থের বিদ্যুৎ চালকতার ক্ষমতা তার মৌলিক গুণাবলীর ওপর নির্ভর করে।
৭. রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য: পদার্থের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য তার রাসায়নিক গুণাবলী এবং অন্য পদার্থ সঙ্গে পারস্পরিক প্রভাব বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়।
পদার্থের বৈশিষ্ট্য :-
পদার্থের কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:১. ওজন: প্রতিটি পদার্থের নিজস্ব ওজন থাকে। ওজন একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য।
২. আয়তন: প্রতিটি পদার্থ একটি নির্দিষ্ট জায়গা দখল করে বা আয়তন থাকে।
৩. ঘনত্ব: পদার্থের ওজন এবং আয়তনের উপর নির্ভর করে পদার্থের ঘনত্ব নির্ধারিত হয়।
৪. গতিশীলতা: পদার্থ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাসরি সরে যেতে পারে। একই পদার্থের জন্য ভিন্ন অবস্থায় গতির পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।
৫. তাপমাত্রা: প্রতিটি পদার্থের একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা থাকে। পদার্থের অবস্থা তাপমাত্রার সাথে সম্পর্কিত।
৬. বিদ্যুৎ চালকতা: পদার্থের বিদ্যুৎ চালকতার ক্ষমতা তার মৌলিক গুণাবলীর ওপর নির্ভর করে।
৭. রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য: পদার্থের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য তার রাসায়নিক গুণাবলী এবং অন্য পদার্থ সঙ্গে পারস্পরিক প্রভাব বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.