বৃত্তস্থ কোণ হল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্যামিতিক ধারণা। বৃত্তের কোণগুলি বৃত্তের কেন্দ্র থেকে শীর্ষে ও বৃত্তাকার রেখার সাথে তৈরি করে যেকোন দুই রেখার মধ্যবর্তী কোণকে বৃত্তস্থ কোণ বলে।
১) কোন বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণ সরাসরি সেই বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণের উপর নির্ভরশীল।
২) কোন বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণ সরাসরি সেই বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ।
৩) কোন বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণ সেই বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণের অর্ধেক।
৪) কোন বৃত্তে যদি কেন্দ্রস্থ কোণটির মান জানা থাকে, তাহলে সেখানে বৃত্তস্থ কোণটির মান বের করা যায়।
৫) কোন বৃত্তে যদি বৃত্তস্থ কোণটির মান জানা থাকে, তাহলে সেখানে কেন্দ্রস্থ কোণটির মান বের করা যায়।
এগুলোই হল বৃত্তস্থ কোণ ও কেন্দ্রস্থ কোণের মধ্যে থাকা প্রধান সম্পর্ক।
প্রমাণ:
ধরুন, ABC একটি বৃত্ত।
এবং, AD এবং AE হল বৃত্তাংশ AB-এর দুটি বৃত্তস্পর্শরেখা।
তাহলে, বৃত্তকেন্দ্র O-থেকে AD = OE (বৃত্তস্পর্শরেখাসমূহ কেন্দ্র হতে সমান দূরত্বে অবস্থিত)
এবং, OD ও OE উভয়েই বৃত্তপ্রস্থের লম্বসম।
∴ ∠AOD = ∠AOE (লম্বসম বৃত্তপ্রস্থসমূহে গঠিত কোণসমান)
অর্থাৎ, একই বৃত্তাংশ AB-এর দুটি বৃত্তস্থ কোণ ∠AOD এবং ∠AOE এর মান সমান।
∴ প্রমাণিত যে, একই বৃত্তাংশস্থ সকল বৃত্তস্থ কোণের মান সমান।
সুতরাং, একই বৃত্তাংশের সকল বৃত্তস্থ কোণ সমান মানের হয়।
এই কোণগুলি বৃত্তের কেন্দ্র থেকে সমান দূরত্বে থাকে। বৃত্তস্থ কোণগুলির যোগফল ৩৬০ ডিগ্রি হয় এবং এই কোণগুলি বৃত্তের চাপের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। জ্যামিতিতে বৃত্তস্থ কোণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
অর্থাৎ বৃত্তের একই চাপের উপর দন্ডায়মান কেন্দ্রস্থ কোণ বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ হবে।
চিত্রে <ACB একটি বৃত্তস্থ কোণ। প্রত্যেক বৃত্তস্থ কোণ বৃত্তে একটি চাপ খণ্ডিত করে। এই চাপ উপচাপ, অর্ধবৃত্ত অথবা অধিচাপ হতে পারে।
একটি বৃত্তস্থ কোণ বৃত্তে যে চাপ খণ্ডিত করে, কোণটি সেই চাপের ওপর দণ্ডায়মান এবং খণ্ডিত চাপের অনুবন্ধী চাপে অস্তলিখিত বলা হয়।
চিত্রে <ACB বৃত্তস্থ কোণটি APB চাপকে খণ্ডিত করে। অতএব, <ACB, APB চাপের ওপর দণ্ডায়মান এবং ACB চাপে অন্তর্লিখিত একটি বৃত্তস্থ কোণ। এখানে APB ও ACB একে অপরের অনুবন্ধী চাপ।
বৃত্তস্থ কোণ হল কোন বৃত্তের কেন্দ্র থেকে বৃত্তপ্রস্থের সাথে গঠিত কোণ।
ঠিক আছে, আমি উপরেরর দেওয়া ACB বৃত্তস্থ কোণটির বৃত্তস্থ কোণ কত ডিগ্রি সেটি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি:
ধরুন, একটি বৃত্তের কেন্দ্র O এবং ব্যাস AB।
এখানে,
∠AOB = কেন্দ্রস্থ কোণ
∠ACB = বৃত্তস্থ কোণ
বৃত্তস্থ কোণ কেন্দ্রস্থ কোণের অর্ধেক। অর্থাৎ কেন্দ্রস্থ কোণ বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ।
আসুন ধরি,
∠AOB = 60 ডিগ্রি
তাহলে,
∠ACB = ∠AOB/2
= 60/2
= 30 ডিগ্রি
অর্থাৎ, যদি ∠AOB কেন্দ্রস্থ কোণ 60 ডিগ্রি হয়, তাহলে ∠ACB বৃত্তস্থ কোণ হবে 30 ডিগ্রি।
সুতরাং, যদি কোন বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণ 60 ডিগ্রি হয়, তাহলে সেই বৃত্তের ACB এই বৃত্তস্থ কোণটি 30 ডিগ্রি হবে।
এভাবে বৃত্তস্থ কোণের মাপ কেন্দ্রস্থ কোণের উপর নির্ভর করে। কেন্দ্রস্থ কোণ যত ডিগ্রি হবে, বৃত্তস্থ কোণ হবে তার অর্ধেক ডিগ্রি।
ধরুন, একটি বৃত্তের কেন্দ্র O এবং ব্যাস AB
এখানে,
∠AOB = কেন্দ্রস্থ কোণ
∠ACB = বৃত্তস্থ কোণ
কেন্দ্রস্থ কোণ = বৃত্তস্থ কোণ x 2
আসুন ধরি,
∠ACB = 30 ডিগ্রি
তাহলে,
∠AOB = ∠ACB x 2
= 30 x 2
= 60 ডিগ্রি
অর্থাৎ, যদি ∠ACB বৃত্তস্থ কোণটি 30 ডিগ্রি হয়, তাহলে ∠AOB কেন্দ্রস্থ কোণ হবে 60 ডিগ্রি (বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ)।
সুতরাং, কেন্দ্রস্থ কোণ সবসময়ই বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ হয়। একটি নির্দিষ্ট বৃত্তে, যদি বৃত্তস্থ কোণটি জানা থাকে, তাহলে কেন্দ্রস্থ কোণটি বের করা যায় বৃত্তস্থ কোণকে ২ দিয়ে গুণ করে।
২) বৃত্তের কোন বৃত্তাংশের বৃত্তস্থ কোণের মান সেই বৃত্তাংশের দৈর্ঘ্যের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। বৃত্তাংশটি যত দৈর্ঘ্যবান, বৃত্তস্থ কোণও তত বড়।
৩) কোন বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণ সবসময় সেই বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ।
৪) কোন বৃত্তাংশের বৃত্তস্থ কোণের অর্ধেকই সেই বৃত্তাংশের কেন্দ্রস্থ কোণ।
৫) বৃত্তস্থ কোণ হল বৃত্তপ্রস্থ এবং বৃত্তকেন্দ্র দিয়ে গঠিত কোণ।
এগুলোই বৃত্তস্থ কোণের প্রধান বৈশিষ্ট্য বা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহ।
বৃত্তস্থ কোণ কাকে বলে :-
একটি কোণের শীর্ষবিন্দু কোনো বৃত্তের একটি বিন্দু হলে এবং কোণটির প্রত্যেক বাহুতে শীর্ষবিন্দু ছাড়াও বৃত্তের একটি বিন্দু থাকলে কোণটিকে বৃত্তস্থ কোণ বা বৃত্তে অন্তর্লিখিত কোণ বলা হয়।অর্থাৎ বৃত্তের একই চাপের উপর দন্ডায়মান কেন্দ্রস্থ কোণ বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ হবে।
চিত্রে <ACB একটি বৃত্তস্থ কোণ। প্রত্যেক বৃত্তস্থ কোণ বৃত্তে একটি চাপ খণ্ডিত করে। এই চাপ উপচাপ, অর্ধবৃত্ত অথবা অধিচাপ হতে পারে।
একটি বৃত্তস্থ কোণ বৃত্তে যে চাপ খণ্ডিত করে, কোণটি সেই চাপের ওপর দণ্ডায়মান এবং খণ্ডিত চাপের অনুবন্ধী চাপে অস্তলিখিত বলা হয়।
চিত্রে <ACB বৃত্তস্থ কোণটি APB চাপকে খণ্ডিত করে। অতএব, <ACB, APB চাপের ওপর দণ্ডায়মান এবং ACB চাপে অন্তর্লিখিত একটি বৃত্তস্থ কোণ। এখানে APB ও ACB একে অপরের অনুবন্ধী চাপ।
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্ৰস্থ কোণ কাকে বলে?
বৃত্তস্থ কোণ কত ডিগ্রি :-
বৃত্তস্থ কোণ কত ডিগ্রি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিম্নে দেওয়া হল:বৃত্তস্থ কোণ হল কোন বৃত্তের কেন্দ্র থেকে বৃত্তপ্রস্থের সাথে গঠিত কোণ।
ঠিক আছে, আমি উপরেরর দেওয়া ACB বৃত্তস্থ কোণটির বৃত্তস্থ কোণ কত ডিগ্রি সেটি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি:
ধরুন, একটি বৃত্তের কেন্দ্র O এবং ব্যাস AB।
এখানে,
∠AOB = কেন্দ্রস্থ কোণ
∠ACB = বৃত্তস্থ কোণ
বৃত্তস্থ কোণ কেন্দ্রস্থ কোণের অর্ধেক। অর্থাৎ কেন্দ্রস্থ কোণ বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ।
আসুন ধরি,
∠AOB = 60 ডিগ্রি
তাহলে,
∠ACB = ∠AOB/2
= 60/2
= 30 ডিগ্রি
অর্থাৎ, যদি ∠AOB কেন্দ্রস্থ কোণ 60 ডিগ্রি হয়, তাহলে ∠ACB বৃত্তস্থ কোণ হবে 30 ডিগ্রি।
সুতরাং, যদি কোন বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণ 60 ডিগ্রি হয়, তাহলে সেই বৃত্তের ACB এই বৃত্তস্থ কোণটি 30 ডিগ্রি হবে।
এভাবে বৃত্তস্থ কোণের মাপ কেন্দ্রস্থ কোণের উপর নির্ভর করে। কেন্দ্রস্থ কোণ যত ডিগ্রি হবে, বৃত্তস্থ কোণ হবে তার অর্ধেক ডিগ্রি।
কেন্দ্রস্থ কোণ বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ :-
কেন্দ্রস্থ কোণ বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ সেটি নিয়ে আমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করছি:ধরুন, একটি বৃত্তের কেন্দ্র O এবং ব্যাস AB
এখানে,
∠AOB = কেন্দ্রস্থ কোণ
∠ACB = বৃত্তস্থ কোণ
কেন্দ্রস্থ কোণ = বৃত্তস্থ কোণ x 2
আসুন ধরি,
∠ACB = 30 ডিগ্রি
তাহলে,
∠AOB = ∠ACB x 2
= 30 x 2
= 60 ডিগ্রি
অর্থাৎ, যদি ∠ACB বৃত্তস্থ কোণটি 30 ডিগ্রি হয়, তাহলে ∠AOB কেন্দ্রস্থ কোণ হবে 60 ডিগ্রি (বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ)।
সুতরাং, কেন্দ্রস্থ কোণ সবসময়ই বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ হয়। একটি নির্দিষ্ট বৃত্তে, যদি বৃত্তস্থ কোণটি জানা থাকে, তাহলে কেন্দ্রস্থ কোণটি বের করা যায় বৃত্তস্থ কোণকে ২ দিয়ে গুণ করে।
বৃত্তস্থ কোণের বৈশিষ্ট্য :-
১) বৃত্তের একই বৃত্তাংশের সকল বৃত্তস্থ কোণ সমান মানের।২) বৃত্তের কোন বৃত্তাংশের বৃত্তস্থ কোণের মান সেই বৃত্তাংশের দৈর্ঘ্যের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। বৃত্তাংশটি যত দৈর্ঘ্যবান, বৃত্তস্থ কোণও তত বড়।
৩) কোন বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণ সবসময় সেই বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ।
৪) কোন বৃত্তাংশের বৃত্তস্থ কোণের অর্ধেকই সেই বৃত্তাংশের কেন্দ্রস্থ কোণ।
৫) বৃত্তস্থ কোণ হল বৃত্তপ্রস্থ এবং বৃত্তকেন্দ্র দিয়ে গঠিত কোণ।
এগুলোই বৃত্তস্থ কোণের প্রধান বৈশিষ্ট্য বা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহ।
বৃত্তস্থ কোণ ও কেন্দ্রস্থ কোণের সম্পর্ক :-
বৃত্তস্থ কোণ ও কেন্দ্রস্থ কোণের মধ্যে নিম্নোক্ত সম্পর্ক রয়েছে:১) কোন বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণ সরাসরি সেই বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণের উপর নির্ভরশীল।
২) কোন বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণ সরাসরি সেই বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ।
৩) কোন বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণ সেই বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণের অর্ধেক।
৪) কোন বৃত্তে যদি কেন্দ্রস্থ কোণটির মান জানা থাকে, তাহলে সেখানে বৃত্তস্থ কোণটির মান বের করা যায়।
৫) কোন বৃত্তে যদি বৃত্তস্থ কোণটির মান জানা থাকে, তাহলে সেখানে কেন্দ্রস্থ কোণটির মান বের করা যায়।
এগুলোই হল বৃত্তস্থ কোণ ও কেন্দ্রস্থ কোণের মধ্যে থাকা প্রধান সম্পর্ক।
প্রমাণ করো যে, একই বৃত্তাংশস্থ সকল বৃত্তস্থ কোণের মান সমান?
একই বৃত্তাংশস্থ সকল বৃত্তস্থ কোণের মান সমান সেটি নিম্নরূপ প্রমাণ করা যায়:প্রমাণ:
ধরুন, ABC একটি বৃত্ত।
এবং, AD এবং AE হল বৃত্তাংশ AB-এর দুটি বৃত্তস্পর্শরেখা।
তাহলে, বৃত্তকেন্দ্র O-থেকে AD = OE (বৃত্তস্পর্শরেখাসমূহ কেন্দ্র হতে সমান দূরত্বে অবস্থিত)
এবং, OD ও OE উভয়েই বৃত্তপ্রস্থের লম্বসম।
∴ ∠AOD = ∠AOE (লম্বসম বৃত্তপ্রস্থসমূহে গঠিত কোণসমান)
অর্থাৎ, একই বৃত্তাংশ AB-এর দুটি বৃত্তস্থ কোণ ∠AOD এবং ∠AOE এর মান সমান।
∴ প্রমাণিত যে, একই বৃত্তাংশস্থ সকল বৃত্তস্থ কোণের মান সমান।
সুতরাং, একই বৃত্তাংশের সকল বৃত্তস্থ কোণ সমান মানের হয়।
আরও পড়ুনঃ স্থূলকোণ কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.