প্রিয় পাঠকগণ, আমি আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো জ্যামিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা - অনুরূপ কোণ।
জ্যামিতি বলেই বোঝায়, এটি সংখ্যা, আকার এবং স্থানের বিজ্ঞান। জ্যামিতিতে বিভিন্ন ধরনের কোণ রয়েছে যা আমাদের আকার ও ছবির সাথে জড়িত। আজ আমরা আলোচনা করব 'অনুরূপ কোণ' সম্পর্কে।
অনুরূপ কোণ হলো কোন দুটি সমান্তরাল রেখার মাঝখানে অপর একটি রেখা দ্বারা সৃষ্ট কোণ যা পরস্পর সমান। এই ধারণা বোঝা জ্যামিতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমি আশা করি এই পোস্টে অনুরূপ কোণের ধারণা, তার বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব এবং কিছু উদাহরণের মাধ্যমে আপনারা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করি অনুরূপ কোণ কাকে বলে এই ধারণা নিয়ে।
আরও পড়ুনঃ প্রবৃদ্ধ কোণ কাকে বলে?
জ্যামিতি বলেই বোঝায়, এটি সংখ্যা, আকার এবং স্থানের বিজ্ঞান। জ্যামিতিতে বিভিন্ন ধরনের কোণ রয়েছে যা আমাদের আকার ও ছবির সাথে জড়িত। আজ আমরা আলোচনা করব 'অনুরূপ কোণ' সম্পর্কে।
অনুরূপ কোণ হলো কোন দুটি সমান্তরাল রেখার মাঝখানে অপর একটি রেখা দ্বারা সৃষ্ট কোণ যা পরস্পর সমান। এই ধারণা বোঝা জ্যামিতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমি আশা করি এই পোস্টে অনুরূপ কোণের ধারণা, তার বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব এবং কিছু উদাহরণের মাধ্যমে আপনারা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করি অনুরূপ কোণ কাকে বলে এই ধারণা নিয়ে।
অনুরূপ কোণ কাকে বলে :-
দুটি সমান্তরাল সরল রেখাকে অপর একটি সরলরেখা ছেদ করলে ছেদকের উভয় পাশে যে কোণগুলো তৈরি হয় সেগুলোকে অনুরূপ কোণ বলে।আরও পড়ুনঃ প্রবৃদ্ধ কোণ কাকে বলে?
অনুরূপ কোণ কাকে বলে এসম্পর্কে ছবি সহ আরো বিস্তারিত আলোচনা করা যেতে পারে! যেমন-
অর্থাৎ যে কোণগুলো সেই আবদ্ধ ক্ষেত্রের ভিতরে অবস্থিত, সেগুলোই সেই ক্ষেত্রের অন্তর্গত বা অন্তঃস্থ কোণ।
অর্থাৎ অনুরূপ কোণের আবদ্ধ ক্ষেত্রের চারপাশে থাকা সীমানারিখাগুলো দিয়ে ঘিরে ধরা ক্ষেত্রটির ভিতরে যে কোণগুলো তৈরি হয়, সেগুলোকে অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ বলা হয়।
অর্থাৎ যে কোণটি আবদ্ধ ক্ষেত্রের বাইরে অবস্থিত, সেটিই বহিঃস্থ কোণ।
অর্থাৎ অনুরূপ কোণের আবদ্ধ ক্ষেত্র থেকে যদি কোন একটি বাহুকে বাইরের দিকে বর্ধিত করা হয়, ফলে যে কোণ তৈরি হয়, সেটিই অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ।
1- <RZX ও <PXM
2- < XZS ও <MXQ
3- < PXZ ও < RZL
4- <QXZ ও <SZL
এর মধ্যে অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও বহিঃস্থ কোণ হলো -
1- <RZX অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও <PXM অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ
2- < XZS অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও <MXQ অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ
3- < PXZ অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও < RZL অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ
4- <QXZ অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও <SZL অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ
2. একটি সূক্ষ্মকোণ হলে অপরটিও সূক্ষ্মকোণ - অনুরূপ কোণ দুটির মধ্যে যদি একটি সূক্ষ্মকোণ হয়, অর্থাৎ ০-৯০ ডিগ্রির মধ্যে, তাহলে অপরটিও অবশ্যই সূক্ষ্মকোণ হতে হবে।
3. একই দিকে অবস্থান করে - অনুরূপ কোণ দুটি ছেদক রেখার একই দিকে অবস্থান করে। একটি ডান দিকে থাকলে অপরটিও ডান দিকেই থাকবে।
4. অভ্যন্তরস্থ বিন্দু সাধারণ হতে পারে না - দুটি অনুরূপ কোণের ভিতরের বিন্দুগুলো পরস্পর সাধারণ হতে পারে না।
5. অন্তঃস্থ-বহিঃস্থ কোণের সম্পর্ক - যদি একটি কোণ অন্তঃস্থ হয় তাহলে অপরটি অবশ্যই বহিঃস্থ হবে এবং উল্টোটাও প্রযোজ্য।
6. ৯০ ডিগ্রির কোণ হলে - যদি ছেদক রেখা প্রতিটি সমান্তরাল রেখার উপর লম্ব হয় তাহলে অনুরূপ কোণ প্রত্যেকটি ৯০ ডিগ্রি বা এক সমকোণ হয়।
7. স্থুলকোণ-স্থুলকোণের সম্পর্ক - একটি স্থুলকোণ হলে অপরটিও অবশ্যই স্থুলকোণ হবে।
8. একই সমতলে অবস্থান করে - অনুরূপ কোণ দুটি একই সমতলে অবস্থান করে, একই প্রকৃতির বিশিষ্ট হয়।
১. পরিমাপের দিক থেকে:
অনুরূপ কোণের ক্ষেত্রে কোণ দুটির পরিমাপ একই হতে হবে। কিন্তু একান্তর কোণের ক্ষেত্রে কোণগুলোর পরিমাপ একই হতে হবে না, পার্থক্য থাকতে পারে।
২. অবস্থানের দিক থেকে:
অনুরূপ কোণ একই সমতলে অবস্থান করতে পারে অথবা আলাদা সমতলেও থাকতে পারে। কিন্তু একান্তর কোণ একই সমতলে অবস্থান করে।
৩. কোণের ধরন অনুসারে:
অনুরূপ কোণ হতে পারে - সূক্ষ্মকোণ, স্থুলকোণ, সমকোণ ইত্যাদি। কিন্তু একান্তর কোণ সবসময়ই সমকোণ হয়।
৪. সমপার্শ্বতার দিক থেকে:
অনুরূপ কোণ সমপার্শ্বিক হতে হবে না। কিন্তু একান্তর কোণ সর্বদা সমপার্শ্বিক হয়।
এগুলো হলো অনুরূপ কোণ ও একান্তর কোণের মূল পার্থক্যগুলো।
আমাদের দুটি সমান্তরাল সরলরেখা AB এবং CD আছে। একটি অপর সরলরেখা EF এদের ছেদ করেছে।
অর্থাৎ, যে কোণগুলো EF দ্বারা AB এবং CD এর উভয় পাশে < G এবং <H তৈরি হয়েছে সেগুলো পরস্পর সমান।
সুতরাং, এই দুটি G এবং H কোণকে অনুরূপ কোণ বলে।
একইভাবে, যদি দুটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অন্য কোন সরলরেখা ছেদ করে, তাহলেও ছেদকের উভয় পাশে উৎপন্ন কোণগুলো অনুরূপ হবে।
অন্য ভাবে অনুরূপ কোণ কাকে বলে তা বললে, দুটি সমান্তরাল রেখাকে অপর একটি রেখা তির্যকভাবে ছেদ করলে ছেদক রেখার একই দিকে সমান্তরাল রেখার পাশে যে কোণগুলো তৈরি হয়, সেগুলোকে অনুরূপ কোণ বলে।
উপরোক্ত ছবিতে চারটি অনুরূপ কোণ রয়েছে। যেমন -
1- <RZX ও <PXM
2- < XZS ও <MXQ
3- < PXZ ও < RZL
4- <QXZ ও <SZL
অর্থাৎ, যে কোণগুলো EF দ্বারা AB এবং CD এর উভয় পাশে < G এবং <H তৈরি হয়েছে সেগুলো পরস্পর সমান।
সুতরাং, এই দুটি G এবং H কোণকে অনুরূপ কোণ বলে।
একইভাবে, যদি দুটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অন্য কোন সরলরেখা ছেদ করে, তাহলেও ছেদকের উভয় পাশে উৎপন্ন কোণগুলো অনুরূপ হবে।
অন্য ভাবে অনুরূপ কোণ কাকে বলে তা বললে, দুটি সমান্তরাল রেখাকে অপর একটি রেখা তির্যকভাবে ছেদ করলে ছেদক রেখার একই দিকে সমান্তরাল রেখার পাশে যে কোণগুলো তৈরি হয়, সেগুলোকে অনুরূপ কোণ বলে।
অনুরূপ কোণের উদাহরণ :-
অর্থাৎ, যদি PQ ও RS হয় দুটি সমান্তরাল রেখা এবং LM হয় এদের তির্যকভাবে ছেদ করে অন্য একটি রেখা, তাহলে রেখা LM এর একই দিকে রেখা PQ এবং RS এর সাথে যে ∠Z ও ∠X কোণগুলো তৈরি হয়, সেগুলোই অনুরূপ কোণ।উপরোক্ত ছবিতে চারটি অনুরূপ কোণ রয়েছে। যেমন -
1- <RZX ও <PXM
2- < XZS ও <MXQ
3- < PXZ ও < RZL
4- <QXZ ও <SZL
আরও পড়ুনঃ পূরক কোণ কাকে বলে?
অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ কাকে বলে :-
যে কোনও আবদ্ধ ক্ষেত্রের চারপাশে থাকা সীমানারিখাগুলো দিয়ে ঘিরে ধরা ক্ষেত্রটির ভিতরে যে কোণগুলো তৈরি হয়, সেগুলোকে ঐ আবদ্ধ ক্ষেত্রের অন্তর্গত বা অন্তঃস্থ কোণ বলা হয়।অর্থাৎ যে কোণগুলো সেই আবদ্ধ ক্ষেত্রের ভিতরে অবস্থিত, সেগুলোই সেই ক্ষেত্রের অন্তর্গত বা অন্তঃস্থ কোণ।
অর্থাৎ অনুরূপ কোণের আবদ্ধ ক্ষেত্রের চারপাশে থাকা সীমানারিখাগুলো দিয়ে ঘিরে ধরা ক্ষেত্রটির ভিতরে যে কোণগুলো তৈরি হয়, সেগুলোকে অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ বলা হয়।
অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ কাকে বলে :-
কোন আবদ্ধ ক্ষেত্র থেকে যদি কোন একটি বাহুকে বাইরের দিকে বর্ধিত করা হয়, ফলে যে কোণ তৈরি হয়, সেটিই ঐ আবদ্ধ ক্ষেত্রের বহির্গত বা বহিঃস্থ কোণ।অর্থাৎ যে কোণটি আবদ্ধ ক্ষেত্রের বাইরে অবস্থিত, সেটিই বহিঃস্থ কোণ।
অর্থাৎ অনুরূপ কোণের আবদ্ধ ক্ষেত্র থেকে যদি কোন একটি বাহুকে বাইরের দিকে বর্ধিত করা হয়, ফলে যে কোণ তৈরি হয়, সেটিই অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ।
অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও বহিঃস্থ কোণের উদাহরণ :-
যেমন উপরের চিত্রের দিকে লক্ষ্য করলে এখানে চার জোড়া অনুরূপ কোণ দেখা যায়। যথা -1- <RZX ও <PXM
2- < XZS ও <MXQ
3- < PXZ ও < RZL
4- <QXZ ও <SZL
এর মধ্যে অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও বহিঃস্থ কোণ হলো -
1- <RZX অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও <PXM অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ
2- < XZS অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও <MXQ অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ
3- < PXZ অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও < RZL অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ
4- <QXZ অনুরূপ অন্তঃস্থ কোণ ও <SZL অনুরূপ বহিঃস্থ কোণ
অনুরূপ কোণের বৈশিষ্ট্য :
1. অনুরূপ কোণ দুটির শীর্ষবিন্দু পরস্পর ভিন্ন হয় - অনুরূপ কোণ বলতে বুঝায় দুটি কোণ যার শীর্ষবিন্দু পরস্পর ভিন্ন। যদি দুটি কোণের শীর্ষবিন্দু একই হয় তাহলে সেটি একই কোণ হিসেবে গণ্য হবে, অনুরূপ কোণ হিসেবে গণ্য হবে না।2. একটি সূক্ষ্মকোণ হলে অপরটিও সূক্ষ্মকোণ - অনুরূপ কোণ দুটির মধ্যে যদি একটি সূক্ষ্মকোণ হয়, অর্থাৎ ০-৯০ ডিগ্রির মধ্যে, তাহলে অপরটিও অবশ্যই সূক্ষ্মকোণ হতে হবে।
3. একই দিকে অবস্থান করে - অনুরূপ কোণ দুটি ছেদক রেখার একই দিকে অবস্থান করে। একটি ডান দিকে থাকলে অপরটিও ডান দিকেই থাকবে।
4. অভ্যন্তরস্থ বিন্দু সাধারণ হতে পারে না - দুটি অনুরূপ কোণের ভিতরের বিন্দুগুলো পরস্পর সাধারণ হতে পারে না।
5. অন্তঃস্থ-বহিঃস্থ কোণের সম্পর্ক - যদি একটি কোণ অন্তঃস্থ হয় তাহলে অপরটি অবশ্যই বহিঃস্থ হবে এবং উল্টোটাও প্রযোজ্য।
6. ৯০ ডিগ্রির কোণ হলে - যদি ছেদক রেখা প্রতিটি সমান্তরাল রেখার উপর লম্ব হয় তাহলে অনুরূপ কোণ প্রত্যেকটি ৯০ ডিগ্রি বা এক সমকোণ হয়।
7. স্থুলকোণ-স্থুলকোণের সম্পর্ক - একটি স্থুলকোণ হলে অপরটিও অবশ্যই স্থুলকোণ হবে।
8. একই সমতলে অবস্থান করে - অনুরূপ কোণ দুটি একই সমতলে অবস্থান করে, একই প্রকৃতির বিশিষ্ট হয়।
অনুরূপ কোণ ও একান্তর কোণের পার্থক্য :-
অনুরূপ কোণ এবং একান্তর কোণের মধ্যে নিম্নলিখিত পার্থক্য রয়েছে:১. পরিমাপের দিক থেকে:
অনুরূপ কোণের ক্ষেত্রে কোণ দুটির পরিমাপ একই হতে হবে। কিন্তু একান্তর কোণের ক্ষেত্রে কোণগুলোর পরিমাপ একই হতে হবে না, পার্থক্য থাকতে পারে।
২. অবস্থানের দিক থেকে:
অনুরূপ কোণ একই সমতলে অবস্থান করতে পারে অথবা আলাদা সমতলেও থাকতে পারে। কিন্তু একান্তর কোণ একই সমতলে অবস্থান করে।
৩. কোণের ধরন অনুসারে:
অনুরূপ কোণ হতে পারে - সূক্ষ্মকোণ, স্থুলকোণ, সমকোণ ইত্যাদি। কিন্তু একান্তর কোণ সবসময়ই সমকোণ হয়।
৪. সমপার্শ্বতার দিক থেকে:
অনুরূপ কোণ সমপার্শ্বিক হতে হবে না। কিন্তু একান্তর কোণ সর্বদা সমপার্শ্বিক হয়।
এগুলো হলো অনুরূপ কোণ ও একান্তর কোণের মূল পার্থক্যগুলো।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.