সকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে? সকর্মক ক্রিয়ার উদাহরণ?

এই পোস্টে আমরা সকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে? সকর্মক ক্রিয়ার উদাহরণ সহ সহজ উপায়ে বোঝার চেষ্টা করবো। কিন্তু তার আগে আমাদের ক্রিয়া কাকে বলে তা জানা অত্যন্ত জরুরী।

বাক্য তৈরির জন্য ক্রিয়াপদের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। যে কোনো বাক্যে ক্রিয়াপদ থাকবেই। তবে কখনও কখনও হয়ত তার চেহারা চোখে পড়ে না, তার সাহচর্য মেনে আড়ালে। যেমন- রহিম ভালো ছেলে। এখানে ক্রিয়াপদটি উহ্য, রহিম হয় ভালো ছেলে- এমন লেখা হলে 'হ' ধাতু থেকে তৈরি ক্রিয়াপদটি লক্ষ্যযোগ্য হত। কিন্তু বাক্য গঠনে 'হয়' ক্রিয়াপদটির প্রয়োজন নেই। ক্রিয়া বর্তমানকালে প্রায়ই উহ্য থাকে। বাক্যে সাধারণত 'হ' এবং 'আছ' ধাতু দ্বারা গঠিত ক্রিয়াপদ উহা থাকে।

যে পদ দ্বারা কোনো কার্য সম্পাদনা করা বুঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে।

আমারা জানি এই ক্রিয়াপদকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা - সমাপিকা ক্রিয়া এবং অসমাপিকা ক্রিয়া।

কিন্তু এই সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার পাশাপাশি বিবিধ অর্থে ক্রিয়াকে আরো কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন

  1. অকর্মক ক্রিয়া
  2. সকর্মক ক্রিয়া
  3. দ্বিকর্মক ক্রিয়া
  4. প্রযোজক ক্রিয়া
  5. যৌগিক ক্রিয়া এবং
  6. মিশ্র ক্রিয়া।

আরও পড়ুনঃ
 ধ্বনি পরিবর্তনের রীতি বা ধারা

তাহলে সকর্মক ক্রিয়া হলো ক্রিয়ার নানা বিভাগের মধ্যে অন্যতম একটি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সকর্মক ক্রিয়া কি তা জানা তো শুরু করা যাক।

সকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে :-

যে ক্রিয়ার কর্ম পদ আছে তা-ই সকর্মক ক্রিয়া।

ক্রিয়ার সাথে কী বা কাকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা-ই ক্রিয়ার কর্মপদ। কর্মপদযুক্ত ক্রিয়াই সকর্মক ক্রিয়া।

যেমন-বাবা আমাকে একটা বই কিনে দিয়েছেন।

প্রশ্ন : কী দিয়েছেন? উত্তর : বই (কর্মপদ)।

প্রশ্ন : কাকে দিয়েছেন? উত্তর : আমাকে (কর্মপদ)।

কাজেই 'দিয়েছেন' ক্রিয়াপদটির কর্ম পদ থাকায় এটি সকর্মক ক্রিয়া।

সকর্মক ক্রিয়ার অকর্মকরূপ :-

প্রয়োগ বৈশিষ্ট্যে সকর্মক ক্রিয়াও অকর্মক হতে পারে। যেমন -

সকর্মক: আমি রাতে ভাত খাব না। অকর্মক : আমি রাতে খাব না।

সকর্মক : আকাশে চাঁদ দেখি না। অকর্মক : আমি চোখে দেখি না।

অকর্মক, সকর্মক ও দ্বিকর্মক করিয়া :-

বাক্যে ব্যবহৃত কর্মপদের ওপর নির্ভর করে ক্রিয়াকে অকর্মক সকর্মক ও দ্বিকর্মক— এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বাক্যে যে সকল পদকে আশ্রয় করে জিয়া তার কাজ সম্পাদন বা সংঘটন করে, তাকে বা তাদের কর্মপদ বলে।


ক্রিয়াপদকে 'কী/ কাকে' দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, সেটিই কর্মপদ। যেমন- মেয়েটি তার বন্ধুকে কামটি দিল। এই বাক্যে 'কে', 'কী' এবং 'কাকে' এই তিনটি প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া সম্ভব। উল্লেখ্য যে, 'কে' প্রশ্ন দিয়ে বাকোর কর্তাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব। সাধারণত বাক্যে কর্তা উহা বা প্রত্যক্ষ হিসেবে থাকে। এর বাইরে এই বাক্যে 'কী' এবং 'কাকে'-র উত্তর মেলে; অর্থাৎ এই বাকো দুটি কর্ম রয়েছে। তাই একে বলা হয় বিকর্মক ক্রিয়া। আবার, 'মেয়েটি ছবি আঁকে' বাকো একটি কর্ম রয়েছে। তাই এটি সকর্মক জিনার বাক্যের উদাহরণ। অপরদিকে, বাক্যে যদি কেবল কর্তা ও ক্রিয়া থাকে কিন্তু কোনো কর্ম না থাকে তবে সেই ক্রিয়াকে অকর্মক ক্রিয়া বলা হয়। যেমন মেয়েটি হাসে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ