শব্দভাণ্ডার কাকে বলে?

ভাষাপাঠ বলতে বোঝায় ভাষার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে পড়াশুনা। এই সব নিয়ম কানুনের মধ্যে একটা বিষয় হচ্ছে ভাষায় যত শব্দ ব্যবহৃত হয় সেগুলি কোথা থেকে এসেছে তার পরিচয় নিয়ে। বিষয়টি অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায় বাংলা শব্দভাণ্ডারের উৎসগত শ্রেণিবিভাগ ।

বংশধারার দিক থেকে বাংলা ভাষা ভারতীয় আর্য ভাষাবংশের সঙ্গে যুক্ত। এই ভাষাবংশের প্রাচীনতম ভাষারূপ পাওয়া যায় বৈদিক ও সংস্কৃত সাহিত্যে। বৈদিক-সংস্কৃত ভাষা কালক্রমে পরিবর্তিত হতে হতে আধুনিক ভারতের অনেকগুলি ভাষার সৃষ্টি করেছে। বাংলা তাদের মধ্যে একটি। তবে বাংলা ভাষার উৎপত্তির মূলে। সংস্কৃত ভাষা থাকলেও তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আর্যদের আসার আগে বাংলা দেশে বসবাসকারী কিছু প্রাক্-আর্য জাতির আদিবাসীদের ব্যবহৃত ভাষার শব্দ। এছাড়াও বহু বিদেশি ভাষার শব্দও বাংলা ভাষা গ্রহণ করেছে - বলায় ও লেখায়। এই সবটা নিয়েই বাংলার শব্দভাণ্ডার

আরও পড়ুনঃ তদ্ভব শব্দ কাকে বলে? 

বাংলা শব্দভাণ্ডারের প্রাথমিক শ্রেণিবিভাগ :-

উৎস অনুযায়ী বাংলা ভাষার শব্দ প্রধানত চার শ্রেণিতে

বিভক্ত করা হয়েছে। যথা -

  • মৌলিক শব্দ
  • আগন্তুক শব্দ
  • সংকর বা মিশ্র দেশি শব্দ,
  • দেশি শব্দ।

1) মৌলিক শব্দ : আগেই বলা হয়েছে বাংলা ভাষার উৎপত্তির মূলে একদিকে রয়েছে সংস্কৃত ও তার বিবর্তিত ভাষারূপ। এইগুলিই মৌলিক শব্দ। এই শব্দ তিন রকম : (ক) তৎসম, (খ) তদ্ভব, (গ) অর্ধতৎসম।

2) আগন্তুক শব্দ : বাংলা ভাষার উদ্ভাবের পর বাংলা দেশের বাইরে থেকে আসা মানুষদের ভাষা থেকে যেসব শব্দ বাংলা শব্দভাণ্ডারে এসেছে সেগুলি আগন্তুক শব্দ। আগন্তুক শব্দ দুরকম (১) বিদেশি (২) প্রতিবেশী

3) সংকর বা মিশ্র শব্দ: বিভিন্ন শ্রেণির শব্দের মিশ্রণে তৈরি শব্দ।

4) দেশি শব্দ: বাংলা ভাষায় এমন শব্দ আছে যারা কোথা থেকে এসেছে জানা যায় না। তাছাড়া প্রাচীনতম অধিবাসীদের ভাষা (যেমন কোল, ভিল, সাঁওতালি ইত্যাদি) থেকে অনেক শব্দ এসেছে। এগুলি দেশি শব্দ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ