অর্থসংক্রম বা অর্থসংশ্লেষ বা অর্থরূপান্তর :-
শব্দের অর্থপরিবর্তন কতগুলি স্তর অনুযায়ী ঘটে। এই ধাপগুলি অতিক্রম করার পর শেষপর্যন্ত শব্দটির যে অর্থ দাঁড়ায়, সেই নতুন অর্থের সঙ্গে মূল অর্থের কোনো যোগ সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। মনে হয়, শব্দটির অর্থ এক বস্তু থেকে একেবারে ভিন্ন কোনো বস্তুতে সরে এসেছে। এইভাবেই অর্থসংক্রম ঘটে।
এই প্রক্রিয়ার সবচেয়ে পরিচিত দৃষ্টান্ত হ'ল 'সন্দেশ' শব্দটি। এর মূল অর্থ ছিল সংবাদ, খবর'। প্রেরক সংবাদ নিয়ে যেতেন কিছু মিষ্টান্নসহ। এই অনুষঙ্গেই শব্দটি মূল অর্থটিকে হারিয়ে 'মিষ্টান্ন" অর্থটিকে আঁকড়ে ধরেছে। এখন প্রশ্ন হলো অর্থসংক্রম কাকে বলে তা নিয়ে আলোচনা করা।
অন্যভাবে বলা যায়, আভিধানিক মানে শব্দে থাকলেও তা কালের ধারায় সংকুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে। একসময় বাচ্যার্থ বিচ্ছিন্ন, বাচ্যার্থ থেকে দূরত্বজ্ঞাপক নতুন অর্থ প্রচলিত হয়, যা ব্যুৎপত্তিগত অর্থের সঙ্গে একেবারে মিলহীন ও বিসদৃশ। তাকেই শব্দের অর্থসংক্রম বা অর্থ সংশ্লেষ বলে। যেমন
(১) 'সান্দেশ' একটি শব্দ। তার আদি অর্থ ছিল সংবাদ। সেকালে ডাক ব্যবস্থা ছিল না। তখন লোকে আত্মীয়ের বাড়ীতে সংবাদ নিতে যেতো কিছু মিষ্টান্ন নিয়ে। এই হিসেবে একদা এর অর্থ দড়িয়েছিল মিষ্টান্ন। তখন যে কোনো মিষ্টান্নকেই সন্দেশ বলতো (সেটা হল অর্থপ্রসার)। তারপর অর্থসংকোচ হয়ে এখন সন্দেশের অর্থ দাঁড়িয়েছে এক বিশেষ শ্রেণীর মিষ্টি।
এই প্রক্রিয়ার সবচেয়ে পরিচিত দৃষ্টান্ত হ'ল 'সন্দেশ' শব্দটি। এর মূল অর্থ ছিল সংবাদ, খবর'। প্রেরক সংবাদ নিয়ে যেতেন কিছু মিষ্টান্নসহ। এই অনুষঙ্গেই শব্দটি মূল অর্থটিকে হারিয়ে 'মিষ্টান্ন" অর্থটিকে আঁকড়ে ধরেছে। এখন প্রশ্ন হলো অর্থসংক্রম কাকে বলে তা নিয়ে আলোচনা করা।
অর্থসংক্রম কাকে বলে :-
যদি কোনো শব্দের অর্থ ধাপে ধাপে বারবার পরিবর্তিত হতে হতে এমন ধাপে এসে দাঁড়ায়. যখন তার আদি অর্থের সঙ্গে শেষ অর্থের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না, (বা এক বস্তুকে অন্যবস্তু বলে মনে হয়) তখন তাকে অর্থরূপান্তর বা অর্থসংশ্লেষ বলে।অন্যভাবে বলা যায়, আভিধানিক মানে শব্দে থাকলেও তা কালের ধারায় সংকুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে। একসময় বাচ্যার্থ বিচ্ছিন্ন, বাচ্যার্থ থেকে দূরত্বজ্ঞাপক নতুন অর্থ প্রচলিত হয়, যা ব্যুৎপত্তিগত অর্থের সঙ্গে একেবারে মিলহীন ও বিসদৃশ। তাকেই শব্দের অর্থসংক্রম বা অর্থ সংশ্লেষ বলে। যেমন
(১) 'সান্দেশ' একটি শব্দ। তার আদি অর্থ ছিল সংবাদ। সেকালে ডাক ব্যবস্থা ছিল না। তখন লোকে আত্মীয়ের বাড়ীতে সংবাদ নিতে যেতো কিছু মিষ্টান্ন নিয়ে। এই হিসেবে একদা এর অর্থ দড়িয়েছিল মিষ্টান্ন। তখন যে কোনো মিষ্টান্নকেই সন্দেশ বলতো (সেটা হল অর্থপ্রসার)। তারপর অর্থসংকোচ হয়ে এখন সন্দেশের অর্থ দাঁড়িয়েছে এক বিশেষ শ্রেণীর মিষ্টি।
আরও পড়ুনঃ সমাস কাকে বলে?
সন্দেশ > সংবাদ > মিষ্টান্ন > বিশিষ্ট মিষ্টি। এই হল অর্থরূপাত্তর বা অর্থ সংক্রম।
(২) 'চক্রান্ত' একটি শব্দ। এর আদি অর্থ ছিল --- চাকার শেষভাগ। তারপর বার বার অর্থ পরিবর্তন হতে হতে এখন চক্রান্তের অর্থ দাঁড়িয়েছে ষড়যন্ত্র। কিন্তু চাকার শেষ—এই প্রাচীন অর্থের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের কোনো মিলই খুঁজে পাওয়া যায় না। এই হলো শব্দের অর্থরূপান্তর বা অর্থসংক্রম।
(৩) 'গবাক্ষ' একটি শব্দ। এর আদি অর্থ ছিল গোরুর চোখ। তারপর কালে কালে তার অর্থ পরিবর্তিত হয়ে এখন অর্থ দাঁড়িয়েছে জানালা। একদা গৃহস্থের মাটির বাড়িতে এখনকার গোল-ঘুলঘুলির মতো ঘরের দেওয়ালের কোনোস্থানে ছোট ছিদ্র রাখা হতো। তাতে জানালার মতো হাওয়া বাতাস ঢুকতো। ঘর থেকেও বাইরের জিনিস দেখা যেতো। কিন্তু সেই অর্থ এখন লুপ্ত হয়েছে। এই যে গোরুর চোখের সঙ্গে এখনকার জানালার আকারের কোনো মিল নেই অর্থ আছে—এই হলো অর্থ রূপান্তর।
(৪) অর্থ সংশ্লেষের আরও কিছু উদাহরণ :
১. চক্রান্ত একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ— চাকার শেষাংশ, সংক্রমিত অর্থ – ষড়যন্ত্র।
২. অর্ধচন্দ্র একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ-আধখানা চাঁদ, সংক্রমিত অর্থ—গলাধাক্কা।
৩. কৃপণ একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ-কৃপার পাত্র, সংক্রমিত অর্থ-কস, কিপটে।
৪. ভূত একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ-বিগত, অতীত, সংক্রমিত অর্থ--প্রেতযোনি।
৫. বিরক্ত একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ-রক্তহীন, সংক্রমিত অর্থ—অসন্তুষ্ট।
৬. কাজ একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ-গুঁড়ি, সংক্রমিত অর্থ—ব্যাপার।
আরও পড়ুনঃ অর্থ সংকোচ কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.