অর্থের অবনতি বা অপকর্ষ কাকে বলে?

অর্থের অবনতি বা অপকর্ষ কাকে বলে:-

যখন কোনো শব্দ অর্থপরিবর্তনের ফলে তার মূল উন্নত অর্থটি হারিয়ে ফেলে নিম্নতর বা অবনত অর্থ প্রকাশ করে, তখন তাকে শব্দের অর্থাপকর্ন বা অর্থাবনতি বলে।

কোনো শব্দ অর্থপরিবর্তনের ফলে যদি এমন হয় যে, মূল অর্থ অপেক্ষা তুচ্ছ বা হীন কোনো বস্তু বা বিষয়কে, নতুন অর্থের দ্বারা বোঝান হচ্ছে, তবে তাকে বলে অর্থের অবনতি বা অর্থাপকর্ষ

শব্দের বাচ্যার্থ উৎকর্যমূলক হলেও অনেক ক্ষেত্রে হীন, অপকৃষ্ট, তুচ্ছ, অর্থকে গ্রহণ করে প্রযুক্ত হয় শব্দটি। তাকেই শব্দের অর্থাপকর্ষ বা অর্ধাবনতি বলে। যেমন—

(১) 'অর্বাচীন' একটি শব্দ। এর আদি অর্থ ছিল নবীন। এখন অর্থ দাঁড়িয়েছে মূর্খ। নবীন অর্থটি উৎকর্ষ জ্ঞাপক। মূর্খ শব্দটি অবশ্যই অপকর্ষ সূচক। এইযে শব্দের উন্নতঅর্থ হারিয়ে অবনত-অর্থে ব্যবহার, এই হলো অর্থাপকর্ষ ।

(২) 'অসুখ' একটি শব্দ। এর আদিতে অর্থ ছিল- সুখের অভাব (এটি উন্নত অর্থ)। কিন্তু এখন অসুখ শব্দের অর্থের অবনতি ঘটে দাঁড়িয়েছে রোগ।

আরও পড়ুনঃ আগন্তুক শব্দ কাকে বলে?

(৩) 'বাড়ন্ত' একটি শব্দ। এর আদি অর্থ ছিল যা বাড়ছে। কিন্তু এর অর্থের অবনতি হয়ে দাঁড়িয়েছে ফুরিয়ে যাওয়া। ঘরে চাল বাড়ন্ত মানে চাল নেই।

(৪) অর্থাবনতি / অর্থাপকর্ষের আরো কিছু নমুনা :

১. ইতর একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ-অন্য, অপর; অবনতার্থ-অভদ্র, অমার্জিত।

২. নাগর একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ- নগরবাসী, অবনতার্থ অবৈধ প্রণয়ী।

৩. ঝি একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ- মেয়ে, অবনতার্থ পরিচারিকা।

৪. মহাজন একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ-মহৎ ব্যক্তি, অবনতার্থ—সুদের ব্যবসায়ী।

৫. আদিম একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ—প্রথম, অবনতার্থ—বন্য, জংলি।

৬. বাই একটি শব্দ, এর বাচ্যার্থ- ভদ্র মহিলা, অবনতার্থ - নাচিয়ে, নর্তকী।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ