অব্যয়ীভাব সমাস কাকে বলে উদাহরণ সহ?

অব্যয়ীভাব সমাস কাকে বলে :-

যে সমাসের পূর্বপদে অব্যয় থাকে এবং অব্যয়ের অর্থ প্রধানরূপে প্রকাশিত হয়, তাকে বলা হয় অব্যয়ীভাব সমাস।

অন্যভাবে বলা যায়, পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে অর্থের প্রাধান্য থাকলে, তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।

অব্যয়ীভাব সমাসের ব্যাসবাক্যে অব্যয় উল্লেখ হয় না, কেবল অব্যয়ের অর্থযোগে ব্যাসবাক্যটি গঠিত হয়।

যেমন- জানু পর্যন্ত লম্বিত = আজানুলম্বিত (কাছে), মরণ পর্যন্ত = আমরণ ইত্যাদি।

বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত অব্যয়ীভাব সমাসের উদাহরণ নিচে দেয়া হলো -

সামীপ্য (উপ) :

কূলের সমীপে = উপকূল, নগরীর সমীপে = উপনগরী, শহরের সমীপে = উপশহর, কণ্ঠের সমীপে = উপকণ্ঠ, অক্ষির সমীপে =সমক্ষ, ক্ষুদ্র মহাদেশ =উপমহাদেশ ইত্যাদি।

বীপ্সা (অনু, প্রতি):

রোজ রোজ = হররোজ, ক্ষণ ক্ষণ = অনুক্ষণ, বছর বছর = প্রতিবছর, দিন দিন = প্রতিদিন, ক্ষণ ক্ষণ = প্রতিক্ষণ, হপ্তা হপ্তা = প্রতিহপ্তা ইত্যাদি।

অভাব (নিঃ, নির):

ভিক্ষার অভাব = দুর্ভিক্ষ, মিলের অভাব = গরমিল, ভাবনার অভাব = নির্ভাবনা, জয়ের অভাব= পরাজয়, জলের অভাব = নির্জল, আমিষের অভাব = নিরামিষ, উৎসাহের অভাব = নিরুৎসাহ, জীবন পর্যন্ত = আজীবন ইত্যাদি।


পর্যন্ত (আ):


কন্ঠ পর্যন্ত = আকণ্ঠ, পা থেকে মাথা পর্যন্ত = আপাদমস্তক, জীবন পর্যন্ত = আজীবন ইত্যাদি ।

সাদৃশ্য (উপ) :

বনের সদৃশ =উপবন, শহরের সদৃশ = উপশহর, গ্রামের সদৃশ = উপগ্রাম, গ্রহের সদৃশ = উপগ্রহ, দ্বীপের সদৃশ = উপদ্বীপ, নদীর সদৃশ = উপনদী, ভাষার সদৃশ = উপভাষা ইত্যাদি।

অনতিক্রমতা (যথা):

সাধ্যকে অতিক্রম না করে= যথাসাধ্য, শক্তিকে অতিক্রম না করে = যথাশক্তি, শাস্ত্রকে অতিক্রম না করে = যথাশাস্ত্র, রীতিকে অতিক্রম না করে = যথারীতি, ইচ্ছাকে অতিক্রম না করে = যথা ইচ্ছা ইত্যাদি।

অতিক্রান্ত (উৎ) :

বেলাকে অতিক্রান্ত = উদ্বেল, শৃঙ্খলাকে অতিক্রান্ত = উচ্ছৃঙ্খল ইত্যাদি।

বিরোধ (প্রতি):

বিরুদ্ধ কূল = প্রতিকূল, বিরুদ্ধ বাদ = প্রতিবাদ ইত্যাদি।

পশ্চাৎ (অনু) :

গমনের পশ্চাৎ = অনুগমন, ক্রমের পশ্চাৎ = অনুক্রম, তাপের পশ্চাৎ = অনুতাপ, ধাবনের পশ্চাৎ =অনুধাবন প্রভৃতি।

ঈষৎ (আ) :

ঈষৎ নত = আনত, ঈষৎ রক্তিম = আরক্তিম প্রভৃতি।

ক্ষুদ্র অর্থে (উপ) :

ক্ষুদ্র শাখা = প্রশাখা, ক্ষুদ্র বিভাগ = উপবিভাগ, ক্ষুদ্র অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, ক্ষুদ্র নদী = উপনদী ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ তদ্ভব শব্দ কাকে বলে? 

যোগ্যতা অর্থে :

গুণের যোগ্য = অনুগুণ, প্রেরণার যোগ্য = অনুপ্রেরণা, ভোগের যোগ্য = উপভোগ, রূপের যোগ্য = অনুরূপ, ভাবের যোগ্য = অনুভব, জ্ঞানের যোগ্য = অভিজ্ঞ ইত্যাদি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ