ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতির পার্থক্য :-
ব্যষ্টিক অর্থনীতি (Microeconomics) :
ব্যষ্টিক শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Micro যা গ্রীক শব্দ Micros হতে উৎপত্তি লাভ করেছে যার অর্থ ক্ষুদ্র। অর্থনীতির যে অংশে অর্থনীতির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে আলোকপাত করা হয় অর্থাৎ ব্যক্তি, পরিবার তথা ফার্ম ইত্যাদির আচরণ ব্যাখ্যা করা হয় তাকে ব্যষ্টিক অর্থনীতি বলে।এখানে একজন ব্যক্তির চাহিদা, ভোগ, সঞ্চয় ইত্যাদি গুরুত্ব পায়। একজন ভোক্তা কিভাবে সর্বোচ্চ উপযোগ পেতে পারে, একজন উৎপাদক কিভাবে সর্বনিম্ন ব্যয়ে সর্বোচ্চ মুনাফা পেতে পারে সেই আলোচনা করা হয় ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে।
এখানে উৎপাদিত দ্রব্যের দাম কত হবে, ফার্মে নিয়োজিত শ্রমিকের মজুরি কিভাবে নির্ধারিত হয় তা ব্যষ্টিক অর্থনীতি বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়। তাই বলা হয়, ব্যষ্টিক অর্থনীতি হচ্ছে অর্থনীতির বিশাল বিশ্বের ক্ষুদ্র আলোচনা।
সামষ্টিক অর্থনীতি (Macroeconomics) :
সামষ্টিক শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Macro যা গ্রীক শব্দ Macros হতে উৎপত্তি লাভ করেছে যার অর্থ বিশাল বা বৃহৎ। সামষ্টিক অর্থনীতি সামগ্রিক অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করে। অর্থনীতির বিষয়গুলোকে এখানে কতগুলো কম্পার্টমেন্ট বা সেক্টরে ভাগ করা হয়।যেমন- ব্যক্তির আয়ের পরিবর্তে জাতীয় আয়, ব্যক্তিগত চাহিদার পরিবর্তে সামগ্রিক চাহিদা, ব্যক্তিগত যোগানের পরিবর্তে সামগ্রিক যোগান, ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের পরিবর্তে মোট সঞ্চয়, মূল্যস্তর, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্বের হার একটি দেশের আমদানি-রপ্তানি ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা কাকে বলে?
ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতির সংজ্ঞা থেকেই বোঝা যায় এদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। ১৯৯৩ সালে ওসলো (Oslo ) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাখনার ফ্রিশ (Ragnar Frisch) অর্থনীতিতে 'মাইক্রো' ও 'ম্যাক্রো' শব্দ দু'টোর প্রচলন করেন। ১৯৩৬ সালে কেইনসের 'General Theory of Employment Interest and Money তে অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে মাইক্রো ও ম্যাক্রো এ দুঃখাতে প্রবাহিত করা হয়। বান্ধিক ও সমষ্টিগত অর্থনীতির পার্থক্যগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-
১. ব্যষ্টিক শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Micro যা গ্রীক শব্দ Micros হতে উৎপত্তি লাভ করেছে যার অর্থ ক্ষুদ্র। পক্ষান্তরে, সামষ্টিক শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Macro যা গ্রীক শব্দ Macros হতে উৎপত্তি লাভ করেছে যার অর্থ বিশাল।
২. অর্থনীতির যে অংশে অর্থনীতির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে আলোকপাত করা হয় অর্থাৎ ব্যক্তি, পরিবার তথা ফার্ম ইত্যাদির আচরণ ব্যাখ্যা করা হয় তাকে ব্যষ্টিক অর্থনীতি বলে। অন্যদিকে সামষ্টিক অর্থনীতি সামগ্রিক অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করে।
৩. ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে যেগুলো স্থির চলক সামষ্টিক অর্থনীতিতে অনেক সময় সেগুলো পরিবর্তনশীল চলক।
৪. ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে আংশিক ভারসাম্য ব্যাখ্যা করা হয়। অপরদিকে সামষ্টিক অর্থনীতিতে সামগ্রিক ভারসাম্য বিশ্লেষণ করা হয়।
৫. ব্যষ্টিক অর্থনীতির চিত্র দেখে একটি দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না। কিন্তু, সামষ্টিক অর্থনীতির চিত্র দেখে কোনো দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
এভাবে ব্যষ্টিক এবং সামষ্টিক অর্থনীতির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পূর্ণ প্রতিযোগিতার বাজার কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.