অঙ্গ কাকে বলে :-
এক বা একাধিক টিস্যুর সমন্বয়ে গঠিত এবং নির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনে সক্ষম প্রাণীদেহের অংশবিশেষকে অঙ্গ বলা হয়।কোন অঙ্গে একই অথবা একাধিক ধরনের টিস্যু থাকে। এ সকল অঙ্গ কোন না কোন নির্দিষ্ট কাজ করতে পারে। অবস্থানভেদে মানবদেহে দু'ধরনের অঙ্গ রয়েছে। যথা-
১. বাহ্যিক এবং
২. অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহ।
চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, হাত, পা, মাথা ইত্যাদি মানবদেহের বাহ্যিক অঙ্গসমূহ এবং পাকস্থলি, ডিওডেনাম, ইলিয়াম, মলাশয়, হৃদপিন্ড, যকৃত, অগ্ন্যাশয়, প্লীহা, ফুসফুস, বৃক্ক, অক্রাশয়, ডিম্বাশয় ইত্যাদি অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহ।
তন্ত্র কাকে বলে :-
একাধিক অঙ্গ মিলিত হয়ে একই ধরনের কাজ সম্পন্ন করলে তাকে তন্ত্র বলা হয়।আরও পড়ুন:- স্ত্রী প্রোজনন তন্ত্র কি?
যেমন- শ্বসন কাজ পরিচালনার জন্য শ্বাসনালী, ফুসফুস ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত হয় প্রাণীর শ্বসন তন্ত্র। এ রকম আরও কিছু তন্ত্র হলো পরিপাক তন্ত্র, স্নায়ু তন্ত্র, রেচন তন্ত্র, প্রজনন তন্ত্র ইত্যাদি।
অঙ্গ ও অঙ্গতন্ত্রের ধারণা ও গুরুত্ব :-
একাধিক অঙ্গ বা অঙ্গতন্ত্রের সমন্বয়ে গঠিত হয় একটি উন্নত বা জটিল জীবদেহ। কোনও বিশেষ তন্ত্র আবার কয়েকটি সংশ্লিষ্ট অঙ্গ নিয়ে গঠিত। এ সকল অঙ্গের প্রতিটির যেমন নির্দিষ্ট গঠন রয়েছে তেমন রয়েছে নির্দিষ্ট কাজ। প্রতিটি তন্ত্রের অঙ্গগুলোর কাজের মধ্যে আবার রয়েছে সমন্ব্যয়।আরও পড়ুন:- জীবন বিজ্ঞান কাকে বলে?
প্রতিটি তন্ত্র পৃথক পৃথক হলেও সুনির্দিষ্ট কাজ ঠিকঠাকভাবে করে। যেমন- পরিপাকতন্ত্রের প্রধান কাজ খাদ্য পরিপাক, পরিপাককৃত খাদ্য শোষণের পর অপাচ্য অংশ সাময়িকভাবে জমা রাখা এবং দেহ থেকে নিষ্কাশন করা। এ তন্ত্রের লালাগ্রন্থি, যকৃত এবং অগ্ন্যাশয় নামে পুষ্টি গ্রন্থিসমূহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় রস নিঃসৃত করে পরিপাকে অংশ নেয়।
এ তন্ত্রের গলবিল ও অন্ননালী খানা গলাধঃকরণ করায়, পাকস্থলি ও ডিওডেনাম খাদ্য পরিপাক করায়, ইলিয়াম খাদ্য পরিপাক ও শোষণ উভয়ই এবং মলাশয় অপাচ্য খাদ্য জমা রাখায় অংশ নেয়।
তন্ত্রগুলো আবার পরস্পর পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। তাই কোন নির্দিষ্ট তন্ত্রের প্রতিটি অঙ্গের সঠিকভাবে কাজ করার মাধ্যমেই সে তন্ত্রের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। বিভিন্ন তন্ত্রের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্যই মানুষসহ সকল প্রাণীর দেহের স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ সম্পাদিত হয়। সকল উন্নত প্রাণিদের ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্র ও অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিতন্ত্র সন্মিলিতভাবে সকল অঙ্গের অর্থাৎ সকল তন্ত্রের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে দেহকে সচল ও কর্মক্ষম রাখে।
এদের মধ্যে স্নায়ুতন্ত্রের কাজ প্রত্যক্ষ এবং সাধারণত ক্ষিপ্রতার সাথে সম্পাদিত হয়। অপরপক্ষে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বা নালিবিহীন গ্রন্থিসমূহ কর্তৃক নিঃসৃত হরমোনের কার্যকারিতা তুলনামূলকভাবে ধীর। উপরোক্ত আলোচনা থেকে অঙ্গ এবং তন্ত্রের গুরুত্ব সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:- হৃদপিন্ড কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.