সিন্যাপস কাকে বলে :-
দুটি নিউরনের সংযোগস্থলকে অথবা একটি নিউরন ও একটি ইফেক্টরের (যেমন পেশি অথবা গ্রন্থি) সংযোগস্থলকে সিন্যাপস (Synapse) বলে।সিন্যাপস এর মাধ্যমে উত্তেজনা বা তথ্য এক নিউরন থেকে অন্য নিউরনে প্রেরিত হয়। এগুলোর মাধ্যমেই প্রান্তীয় স্নায়ু দ্বারা গৃহীত উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরিত হয় এবং কেন্দ্রের নির্দেশাবলি প্রান্তের সুনির্দিষ্ট অঙ্গে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন:- হৃদপিন্ড কাকে বলে?
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সকল উচ্চতর কার্যাবলি যেমন- সমন্বয়, শিক্ষণ, স্মৃতি ইত্যাদি সবকিছুই সম্ভব হয় কেবল সিন্যাপসের জন্য। স্নায়ুতন্ত্রের সিন্যাপস অসংখ্য এবং ধারণা করা হয় এর সংখ্যা প্রায় 10¹⁴। এসব সিন্যাপস বিভিন্ন ধরনের ও বিভিন্ন নামের হয়ে থাকে।
সিন্যাপসের গঠন :-
দুটি নিউরনের অংশ মিলিত হয়ে সিন্যাপস গঠন করে। যে নিউরনের অ্যাক্সন সিন্যাপস গঠনে অংশ নেয় তাকে প্রিসিন্যাপটিক নিউরন বলে।সিন্যাপ গঠনকারী অন্য নিউরনকে পোস্ট সিন্যাপটিক নিউরন বলে।
প্রিসিন্যাপটিক নিউরনের প্রিসিন্যাপটিক মেমব্রেন এবং পোস্টসিন্যাপটিক নিউরনের পোস্টসিন্যাপটিক মেমব্রেন সম্মিলিতভাবে সিন্যাপস গঠন করে। এ দুটি মেমব্রেনের মাঝে প্রায় ২০ ন্যানোমিটার দৈর্ঘ্যের তরল পূর্ণ ফাঁক থাকে একে সিন্যাপটিক ক্লেফট (Synaptic cleft) বলে।
প্রিসিন্যাপটিক মেমব্রেন প্রকৃতপক্ষে প্রিসিন্যাপটিক নিউরনের অ্যাক্সনের স্ফীত প্রান্তের অংশ। অ্যাক্সনের স্ফীত প্রান্তকে সিন্যাপটিক নব (Synaptic knob) বলে।
আরও পড়ুন :- সালোকসংশ্লেষণ কি?
এ নবের ভিতরে অসংখ্য মাইটোকন্ড্রিয়া, মাইক্রোফিলামেট এবং নিউরোট্রান্সমিটার যুক্ত ভেসিকল থাকে। আর পোস্টসিন্যাপটিক মেমব্রেন, পোটসিন্যাপটিক নিউরনের সোমা বা ডেনড্রাইট বা অ্যাক্সনের অংশ।
নিউরোট্রান্সমিটার কাকে বলে :-
যে সব রাসায়নিক বস্তু স্নায়ুকোষ থেকে নিঃসৃত হয়ে স্নায়ু উদ্দীপনা এক নিউরন হতে অন্য নিউরন কিংবা পেশিকোষ অথবা কোন গ্রন্থিতে পরিবহনে সহায়তা করে তাদের নিউরোট্রান্সমিটার বলে।সিন্যাপসের কাজ :-
- এগুলো এক নিউরন থেকে অন্য নিউরনের তথ্যের প্রেরণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
- এরা উদ্দীপনা বাছাই করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে।
- এরা নিউরোট্রান্সমিটার বস্তু ক্ষরণ করে।
- এরা বিভিন্ন নিউরনের মধ্যে সমন্বয় ঘটায় এবং স্নায়ু উদ্দীপনার গতিপথ নির্ধারণ করে।
- স্নায়ুতন্ত্রের স্নায়ুসমূহ অতি উদ্দীপিত হলে অবসাদ গ্রস্থ (fatigued) হতে বাধা দেয়া।
- খুব অল্প মাত্রার স্নায়ু উদ্দীপনাকে ফিল্টার করে বাদ দেয়া (যেমন ঘড়ির কাটার খুব সামান্য শব্দ শুনি না)।
- সব উদ্দীপনার ক্রিয়াকে সমষ্টিবদ্ধ করে (summation) তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করা।
- স্মৃতি শক্তির ভৌত কাঠামো হিসেবে কাজ করা।
আরও পড়ুন :- ফার্মেন্টেশন এর কাজ কি?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.