ফুল উচ্চশ্রেণির উদ্ভিদের একটি যৌন প্রজনন অঙ্গ। উদ্ভিদের বংশ রক্ষা ও বংশবিস্তারে সাহায্যকারী ফল ও বীজ উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে রূপান্তরিত বিটপকে পুষ্প বা ফুল বলা হয়।
(ক) পুষ্পাক্ষ,
(খ) বৃত্তি,
(গ) দলমন্ডল,
(ঘ) পুংস্তবক এবং
(ঙ) স্ত্রীস্তবক।
পুষ্পাক্ষ (Thalamus) :
ফুলের স্তবকগুলো যে অক্ষের উপর সাজানো থাকে তাকে বলা হয় পুষ্পাক্ষ। সাধারণত এটি গোলাকার এবং ফুলের বৃত্তশীর্ষে অবস্থান করে। পুষ্পাক্ষের উপর বাকি চারটি স্তবক পরপর সাজানো থাকে। এটি পুষ্প পত্রধারণ করে এবং ফুলকে কান্ডের সাথে আবদ্ধ রাখে।
বৃত্তি (Calyx) :
একটি ফুলের বাইরের স্তরককে বলা হয় বৃত্তি। এর প্রতিটি খণ্ডকে বৃত্যংশ বলা হয়। এটি মুকুল অবস্থায় ফুলের অন্য স্তকগুলোকে রোদ, বৃষ্টি, কীটপতঙ্গের আক্রমণ এবং বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা থেকে রক্ষা করে।
সবুজ বৃত্তি সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য প্রস্তুত করে। তবে বৃত্তি যখন রঙ বেরঙের হয় তখন তারা পরাগায়নে সাহায্য করে। অর্থাৎ পরাগায়নের মাধ্যম হিসেবে কীটপতঙ্গ, পশু-পাখি ইত্যাদিকে আকর্ষণ করে।
আরও পড়ুন :- ফার্মেন্টেশন এর কাজ কি?
দলমণ্ডল (Corolla) :
বৃত্তির উপরে পুষ্পাক্ষ সংলগ্ন দ্বিতীয় সহকারী স্তবকটি দলমণ্ডল। এর প্রতিটি খণ্ডকে দলাংশ বা পাপড়ি বলা হয়। এরা সাধারণত রঙ্গিন হয়। এরা ফুলের অত্যাবশ্যকীয় অংশগুলোকে রোদ ও বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করে। উজ্জ্বল ঝলমলে রঙের দলমণ্ডল পোকামাকড় ও পশু-পাখি আকর্ষণ করে এবং পরাগায়নে সহায়তা করে।
পুংস্তবক (Androecium) :
দলমন্ডলের ভেতরে পুষ্পাক্ষ সংলগ্ন পরাগরেণু উৎপাদনকারী স্তবককে পুংস্তবক বলা হয়। এটি ফুলের তৃতীয় স্তবক এবং একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ। এ স্তবকের প্রতিটি অংশকে পুংকেশর বলা হয়। একটি পুংস্তবকে এক বা একাধিক পুংকেশর থাকতে পারে। পুংকেশরে দন্ডের ন্যায় অংশকে পুংদণ্ড ( Filament) এবং শীর্ষে থলের ন্যায় অংশকে পরাগধানী বা পরাগরেণুগুলি (Anther) বলা হয়।
পরাগধানী ও পুংদন্ড সংযোগকারী অংশকে যোজনী বলা হয়। পরাগধানীর মধ্যে পরাগরেণু উৎপন্ন হয়। এ পরাগরেণু অঙ্কুরিত হয়ে পরাগনল (Pollen tube) গঠন করে। এ পরাগনলে পুংজনন কোষ উৎপন্ন হয়। পুংজনন কোষ সরাসরি জনন কাজে অংশ গ্রহণ করে।
স্ত্রীস্তবক (Gynoecium) :
পুষ্পের কেন্দ্রে অবস্থিত ফ্রাক্স আকৃতির ডিম্বক উৎপাদনকারী স্তবককে স্ত্রীস্তবক বলা হয়। এটি ফুলের আর একটি অত্যাবশ্যকীয় স্তবক। এর প্রতিটি অংশকে গর্ভপত্র বলা হয়। স্ত্রীস্তবকে এক বা একাধিক গর্ভপত্র থাকতে পারে। একটি গর্ভপত্রের তিনটি অংশ। যথা-
পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক প্রজননের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। এরা সরাসরি প্রজননে অংশ নেয়। তাই এরা অত্যাবশ্যকীয় স্তবক।
আরও পড়ুন :- প্লাস্টিড কাকে বলে?
কিন্তু পুষ্পাক্ষ, বৃতি ও দলমণ্ডল প্রজননে সরাসরি অংশ নেয় না। তাই এরা সাহায্যকারী স্তবক। তবে প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
উপরোক্ত পাঁচটি অংশ ছাড়াও ফুলের পরাগায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো পুষ্পমঞ্জরি। গাছের শাখায় ফুলগুলো একটি বিশেষ নিয়মে সাজানো থাকে। ফুলসহ এ শাখাকে পুষ্পমঞ্জরি বলে।
যে শাখায় ফুলগুলো সজ্জিত থাকে তাকে মঞ্জরিদণ্ড বলা হয়। এ শাখার বৃদ্ধি অসীম হলে অনিয়ত পুষ্পমঞ্জরি ও পুষ্প উৎপাদনের ফলে বৃদ্ধি থেমে গেলে তাকে নিয়ত পুষ্পমঞ্জরি বলা হয়।
অনিয়ত পুষ্পমঞ্জরিতে সবচেয়ে বয়োঃজ্যেষ্ঠ ফুলটি মঞ্জরির নিচে অবস্থান করে ফলে এর বৃদ্ধি ক্রমাগত হতে থাকে। অন্যদিকে নিয়ত পুষ্পমঞ্জরিতে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ফুলটি মঞ্জরির শীর্ষে অবস্থান করে এর বৃদ্ধি রহিত করে। পরাগায়নের জন্য পুষ্পমঞ্জরির গুরুত্ব খুব বেশী।
সম্পূর্ণ ও অসম্পূর্ণ ফুল কাকে বলে :-
এটি আবৃতবীজী উদ্ভিদে জননাঙ্গ ধারণ করে। যে ফুলে পাঁচটি অংশ উপস্থিত থাকে তাকে সম্পূর্ণ ফুল বলা হয়। এর যে কোনো একটি অংশ না থাকলে সে ফুলকে অসম্পূর্ণ ফুল বলা হয়।
বৃত্তযুক্ত ফুলকে সর্বম্ভক এবং বৃত্তহীন ফুলকে অবৃন্তক ফুল বলা হয়।
যখন কোন ফুলে পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক দুটোই উপস্থিত থাকে তখন সেটি উভলিঙ্গ ফুল।
আবার পুংস্তবক বা স্ত্রীস্তবকের যে কোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে তাকে একলিঙ্গ ফুল এবং দুটিই অনুপস্থিত থাকলে ক্লীব ফুল বলা হয়।
আরও পড়ুন :- রেচন ও রেচনতন্ত্র কাকে বলে?
বৃত্তযুক্ত ফুলকে সর্বম্ভক এবং বৃত্তহীন ফুলকে অবৃন্তক ফুল বলা হয়।
যখন কোন ফুলে পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক দুটোই উপস্থিত থাকে তখন সেটি উভলিঙ্গ ফুল।
আবার পুংস্তবক বা স্ত্রীস্তবকের যে কোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে তাকে একলিঙ্গ ফুল এবং দুটিই অনুপস্থিত থাকলে ক্লীব ফুল বলা হয়।
আরও পড়ুন :- রেচন ও রেচনতন্ত্র কাকে বলে?
একটি ফুলের বিভিন্ন অংশ :-
একটি আদর্শ ফুলের পাঁচটি অংশ থাকে। যথা-(ক) পুষ্পাক্ষ,
(খ) বৃত্তি,
(গ) দলমন্ডল,
(ঘ) পুংস্তবক এবং
(ঙ) স্ত্রীস্তবক।
পুষ্পাক্ষ (Thalamus) :
ফুলের স্তবকগুলো যে অক্ষের উপর সাজানো থাকে তাকে বলা হয় পুষ্পাক্ষ। সাধারণত এটি গোলাকার এবং ফুলের বৃত্তশীর্ষে অবস্থান করে। পুষ্পাক্ষের উপর বাকি চারটি স্তবক পরপর সাজানো থাকে। এটি পুষ্প পত্রধারণ করে এবং ফুলকে কান্ডের সাথে আবদ্ধ রাখে।
বৃত্তি (Calyx) :
একটি ফুলের বাইরের স্তরককে বলা হয় বৃত্তি। এর প্রতিটি খণ্ডকে বৃত্যংশ বলা হয়। এটি মুকুল অবস্থায় ফুলের অন্য স্তকগুলোকে রোদ, বৃষ্টি, কীটপতঙ্গের আক্রমণ এবং বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা থেকে রক্ষা করে।
সবুজ বৃত্তি সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য প্রস্তুত করে। তবে বৃত্তি যখন রঙ বেরঙের হয় তখন তারা পরাগায়নে সাহায্য করে। অর্থাৎ পরাগায়নের মাধ্যম হিসেবে কীটপতঙ্গ, পশু-পাখি ইত্যাদিকে আকর্ষণ করে।
আরও পড়ুন :- ফার্মেন্টেশন এর কাজ কি?
দলমণ্ডল (Corolla) :
বৃত্তির উপরে পুষ্পাক্ষ সংলগ্ন দ্বিতীয় সহকারী স্তবকটি দলমণ্ডল। এর প্রতিটি খণ্ডকে দলাংশ বা পাপড়ি বলা হয়। এরা সাধারণত রঙ্গিন হয়। এরা ফুলের অত্যাবশ্যকীয় অংশগুলোকে রোদ ও বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করে। উজ্জ্বল ঝলমলে রঙের দলমণ্ডল পোকামাকড় ও পশু-পাখি আকর্ষণ করে এবং পরাগায়নে সহায়তা করে।
পুংস্তবক (Androecium) :
দলমন্ডলের ভেতরে পুষ্পাক্ষ সংলগ্ন পরাগরেণু উৎপাদনকারী স্তবককে পুংস্তবক বলা হয়। এটি ফুলের তৃতীয় স্তবক এবং একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ। এ স্তবকের প্রতিটি অংশকে পুংকেশর বলা হয়। একটি পুংস্তবকে এক বা একাধিক পুংকেশর থাকতে পারে। পুংকেশরে দন্ডের ন্যায় অংশকে পুংদণ্ড ( Filament) এবং শীর্ষে থলের ন্যায় অংশকে পরাগধানী বা পরাগরেণুগুলি (Anther) বলা হয়।
পরাগধানী ও পুংদন্ড সংযোগকারী অংশকে যোজনী বলা হয়। পরাগধানীর মধ্যে পরাগরেণু উৎপন্ন হয়। এ পরাগরেণু অঙ্কুরিত হয়ে পরাগনল (Pollen tube) গঠন করে। এ পরাগনলে পুংজনন কোষ উৎপন্ন হয়। পুংজনন কোষ সরাসরি জনন কাজে অংশ গ্রহণ করে।
স্ত্রীস্তবক (Gynoecium) :
পুষ্পের কেন্দ্রে অবস্থিত ফ্রাক্স আকৃতির ডিম্বক উৎপাদনকারী স্তবককে স্ত্রীস্তবক বলা হয়। এটি ফুলের আর একটি অত্যাবশ্যকীয় স্তবক। এর প্রতিটি অংশকে গর্ভপত্র বলা হয়। স্ত্রীস্তবকে এক বা একাধিক গর্ভপত্র থাকতে পারে। একটি গর্ভপত্রের তিনটি অংশ। যথা-
- গর্ভাশয় (Ovary),
- গর্ভদণ্ড (Style) ও
- গর্ভমুক্ত (Stigma)।
পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক প্রজননের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। এরা সরাসরি প্রজননে অংশ নেয়। তাই এরা অত্যাবশ্যকীয় স্তবক।
আরও পড়ুন :- প্লাস্টিড কাকে বলে?
কিন্তু পুষ্পাক্ষ, বৃতি ও দলমণ্ডল প্রজননে সরাসরি অংশ নেয় না। তাই এরা সাহায্যকারী স্তবক। তবে প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
উপরোক্ত পাঁচটি অংশ ছাড়াও ফুলের পরাগায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো পুষ্পমঞ্জরি। গাছের শাখায় ফুলগুলো একটি বিশেষ নিয়মে সাজানো থাকে। ফুলসহ এ শাখাকে পুষ্পমঞ্জরি বলে।
যে শাখায় ফুলগুলো সজ্জিত থাকে তাকে মঞ্জরিদণ্ড বলা হয়। এ শাখার বৃদ্ধি অসীম হলে অনিয়ত পুষ্পমঞ্জরি ও পুষ্প উৎপাদনের ফলে বৃদ্ধি থেমে গেলে তাকে নিয়ত পুষ্পমঞ্জরি বলা হয়।
অনিয়ত পুষ্পমঞ্জরিতে সবচেয়ে বয়োঃজ্যেষ্ঠ ফুলটি মঞ্জরির নিচে অবস্থান করে ফলে এর বৃদ্ধি ক্রমাগত হতে থাকে। অন্যদিকে নিয়ত পুষ্পমঞ্জরিতে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ফুলটি মঞ্জরির শীর্ষে অবস্থান করে এর বৃদ্ধি রহিত করে। পরাগায়নের জন্য পুষ্পমঞ্জরির গুরুত্ব খুব বেশী।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.