সাইটোপ্লাজম কাকে বলে :-
সাইটোপ্লাজম গ্রিক শব্দ Cytos = কোষ এবং Plasma = সংগঠন। নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থিত এবং কোষ ঝিল্পী দিয়ে পরিবেষ্টিত প্রোটোপ্লাজমীয় অংশই হলো সাইটোপ্লাজম।অর্থাৎ প্রোটোপ্লাজমের নিউক্লিয়াসকে বাদ দিলে যে স্বচ্ছ, ঘন ও তরল পদার্থ থাকে, তাকেই সাইটোপ্লাজম বলে।
এটি জেলির ন্যায় অর্ধতরল হওয়ায় এবং প্রাণের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী বিভিন্ন ধরনের অঙ্গাণু ও উপাদান ধারণ করায় একে বাংলাতে কোষের প্রাণপঙ্ক বলা হয়।
সাইটোপ্লাজম কত প্রকার ও কি কি :-
সাইটোপ্লাজম এবং এর মধ্যস্থ বিভিন্ন প্রকার সজীব ও নির্জীব বস্তুর প্রকৃতি অনুসারে সাইটোপ্লাজমকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-১. সাইটোপ্লাজমীয় মাতৃকা বা হায়ালোপ্লাজম,
২. সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণুসমূহ এবং
৩. নির্জীব বা জড়বস্তু।
আরও পড়ুন :- হেমাটোপরেসিস কি?
১. সাইটোপ্লাজমীয় মাতৃকা :
এটি সাইটোপ্লাজমের ভিত্তি পদার্থ। মাতৃকা একটি অর্ধতরল, দানাদার, অর্ধস্বচ্ছ, সমধর্মী, কলয়ডাল পদার্থ। একে হায়ালোপ্লাজমও বলে। বর্তমানে একে সাইটোসল বলা হয়। এতে অজৈব এবং জৈব এ দু'ধরনের দ্রব্য বিরাজ করে।
মাতৃকায় অপেক্ষাকৃত ঘন ও কম দানাদার বহিঃস্থ ঘন অঞ্চলকে এক্টোপ্লাজম (Ectoplasm) বলে এবং কেন্দ্রস্থ অপেক্ষাকৃত কম ঘন অঞ্চলকে এন্ডোপ্লাজম (Endoplasm) বলে। সাইটোপ্লাজমের আপেক্ষিক গুরুত্ব পানি অপেক্ষা বেশি।
২. সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণুসমূহ :
সাইটোপ্লাজমে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গাণু বিরাজ করে। এগুলো হলো- প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, রাইবোসোম, গলগি বডি লাইসোসোম, সেন্ট্রোসোম, প্লাইঅক্সিসোম, মাইক্রোটিউবিউলস ইত্যাদি ক্ষুদ্রাঙ্গ এবং উদ্ভিদ কোষের ক্ষেত্রে বৃহৎ কোষ গহবর।
৩. নির্জীব বা জড়বস্তু :
কোষের সাইটোপ্লাজমে সাধারণত তিন ধরনের জড়বস্তু বিদ্যমান থাকে। যথা- সঞ্চিত বস্তু, নিঃসৃত পদার্থ ও বর্জ্য পদার্থ ।
আরও পড়ুন :- প্লাস্টিড কাকে বলে?
সাইটোপ্লাজমের রাসায়নিক উপাদান ও প্রকৃতি :-
সাইটোপ্লাজমের রাসায়নিক উপাদানকে অজৈব এবং জৈব এ দু'শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। অজৈব দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে পানি, খনিজ লবণ, আয়ন, পানিতে দ্রবীভূত গ্যাস প্রভৃতি এবং জৈব দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে শর্করা, জৈব অ্যাসিড, লিপিড, প্রোটিন, হরমোন, ভিটামিন, রঞ্জক পদার্থ। পানির পরিমাণ কোষভেদে ৬৫ ৯৬% ।সাইটোপ্লাজমের কাজ :-
সাইটোপ্লাজমের কাজগুলো হলো১. কোষের আকার বজায় রাখতে সহায়তা করে।
২. বিভিন্ন ক্ষুদ্রাঙ্গ ধারণ করে, কতিপয় জৈবিক কাজ করে।
৩. কোষের অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব নিয়ন্ত্রণ করে।
৪. রেচন প্রতিনার সৃষ্ট বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনে সাহায্য করে।
৫. উত্তেজনায় সাড়া দিয়ে জীবিঘ্ন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে।
৬. জল পরিশোষণে সাহায্য করে।
৭. আবর্তনের মাধ্যমে অঙ্গাণুসমূহকে নড়াচড়ায় সহায়তা করে।
আরও পড়ুন :- সিন্যাপস কি?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.