ট্যাক্সিস কাকে বলে :-
উদ্দীপকের নির্দেশ মোতাবেক যে ধরনের ওরিয়েন্টেশন ঘটে তাকে ট্যাক্সিস বলে।অর্থাৎ উদ্দীপকের উৎসের সাথে সম্পর্ক রেখে দেহ অক্ষের অবস্থানগত পরিবর্তনই ট্যাক্সিস। এটি অন্যতম সহজাত আচরণ এবং অভিযোজনযোগ্য।
ট্যাক্সিস এর প্রধান শর্ত হলো প্রাণীর স্থান পরিবর্তন। অন্য কথায়, কোন বাহ্যিক উদ্দীপক দ্বারা প্রাণীর চলাচলের গতিকে প্রভাবিত বা ত্বরান্বিত করাই হলো ট্যাক্সিস।
Herter (1927), Cellyot (1936), Tinbergen (1951) প্রমুখ প্রাণিবিদ প্রাণীর ট্যাক্সিস নিয়ে গবেষণা করেছেন।
ট্যাক্সিস এর প্রকারভেদ :-
ট্যাক্সিস ধনাত্মক বা ঋনাত্মক হতে পারে। কোন্ উদ্দীপকের অভিমুখে গমনকে ধনাত্মক ট্যাক্সিস এবং বিপরীতমুখী গমনকে ঋণাত্মক বলে। উদ্দীপনার উৎসের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীগণ ট্যাক্সিসকে নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করেছেন-আরও পড়ুন :- ট্যিসু কালচার কাকে বলে?
১. ফটোট্যাক্সিস (Phototaxis):
আলোক উদ্দীপকের প্রতি সাড়া দিয়ে প্রাণীর স্থানান্তরকে ফটোট্যাক্সিস বলে। আলোর উৎসের প্রতি আকর্ষণকে ধনাত্মক এবং বিকর্ষণকে ঋণাত্মক ফটোট্যাক্সিস বলে।
যেমন- আলোর প্রতি উইপোকা ধনাত্মক এবং আরশোলা ঋনাত্মক ফটোট্যাক্সিস প্রদর্শন করে।
২. থামেট্যিাক্সিস (Thermotaxis):
তাপ উদ্দীপকের প্রতি সাড়া দিয়ে প্রাণীর যে স্থানান্তর ঘটে তাকে থার্মোট্যাক্সিস বলে। গ্রীষ্মকালে ছারপোকার আক্রমণ ধনাত্মক ও ব্যাঙের শীতনিদ্রা ঋনাত্মক থার্মোট্যাক্সিস।
৩. কেমোট্যাক্সিস (Chemotaxis):
রাসায়নিক পদার্থের প্রতি সাড়া দিয়ে প্রাণীর গমনাগমনকে কেমোট্যাক্সিস বলে।
যেমন- চিনির প্রতি পিঁপড়ার আকর্ষণ ধনাত্মক কেমোট্যাক্সিস।
৪. থিগমোট্যাক্সিস (Thigmotaxis):
যখন প্রাণী তার চলার পথে স্পর্শ ইন্দ্রিয় দ্বারা স্থানান্তরে অনুপ্রাণিত হয় তখন তাকে থিগমোট্যাক্সিস বলে। এটি ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে।
৫. হাইড্রোট্যাক্সিস (Hydrotaxis):
পানি যখন প্রাণীর চলাচলকে প্রভাবিত করে তখন তাকে হাইড্রোট্যাক্সিস বলে। কেঁচোর ভেজা মাটিতে বসবাস ধনাত্মক হাইড্রোট্যাক্সিস।
৬. অ্যানিমোট্যাক্সিস (Anemotaxis) :
বায়ুপ্রবাহ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রাণীর চলাচলকে অ্যানিমোট্যাক্সিস বলে। বায়ুপ্রবাহের অনুকূলে পাখির উড্ডয়নকে ধনাত্মক এবং প্রতিকূলে উড্ডয়নকে ঋণাত্মক অ্যানিমোট্যাক্সিস বলে।
১. ফটোট্যাক্সিস (Phototaxis):
আলোক উদ্দীপকের প্রতি সাড়া দিয়ে প্রাণীর স্থানান্তরকে ফটোট্যাক্সিস বলে। আলোর উৎসের প্রতি আকর্ষণকে ধনাত্মক এবং বিকর্ষণকে ঋণাত্মক ফটোট্যাক্সিস বলে।
যেমন- আলোর প্রতি উইপোকা ধনাত্মক এবং আরশোলা ঋনাত্মক ফটোট্যাক্সিস প্রদর্শন করে।
২. থামেট্যিাক্সিস (Thermotaxis):
তাপ উদ্দীপকের প্রতি সাড়া দিয়ে প্রাণীর যে স্থানান্তর ঘটে তাকে থার্মোট্যাক্সিস বলে। গ্রীষ্মকালে ছারপোকার আক্রমণ ধনাত্মক ও ব্যাঙের শীতনিদ্রা ঋনাত্মক থার্মোট্যাক্সিস।
৩. কেমোট্যাক্সিস (Chemotaxis):
রাসায়নিক পদার্থের প্রতি সাড়া দিয়ে প্রাণীর গমনাগমনকে কেমোট্যাক্সিস বলে।
যেমন- চিনির প্রতি পিঁপড়ার আকর্ষণ ধনাত্মক কেমোট্যাক্সিস।
৪. থিগমোট্যাক্সিস (Thigmotaxis):
যখন প্রাণী তার চলার পথে স্পর্শ ইন্দ্রিয় দ্বারা স্থানান্তরে অনুপ্রাণিত হয় তখন তাকে থিগমোট্যাক্সিস বলে। এটি ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে।
৫. হাইড্রোট্যাক্সিস (Hydrotaxis):
পানি যখন প্রাণীর চলাচলকে প্রভাবিত করে তখন তাকে হাইড্রোট্যাক্সিস বলে। কেঁচোর ভেজা মাটিতে বসবাস ধনাত্মক হাইড্রোট্যাক্সিস।
৬. অ্যানিমোট্যাক্সিস (Anemotaxis) :
বায়ুপ্রবাহ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রাণীর চলাচলকে অ্যানিমোট্যাক্সিস বলে। বায়ুপ্রবাহের অনুকূলে পাখির উড্ডয়নকে ধনাত্মক এবং প্রতিকূলে উড্ডয়নকে ঋণাত্মক অ্যানিমোট্যাক্সিস বলে।
আরও পড়ুন :- নেফ্রন কি?
৭. রিওট্যাক্সিস (Rheotaxis):
পানির স্রোতের প্রতি সাড়া দিয়ে প্রাণীর স্থানাস্তরকে রিওট্যাক্সিস বলে। যেমন- কার্প জাতীয় মাছ প্রজননের সময় পানিস্রোতের বিপরীতে চলে ঋনাত্মক রিওট্যাক্সিস প্রদর্শন করে।
৮. জিওট্যাক্সিস (Geotaxis):
মাধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রাণীর চলাচলকে জিওট্যাক্সিস বলে। খাদ্যের সন্ধানে বিভিন্ন পোকার গাছ বেয়ে উপরের দিকে উঠা এবং এদের পিউপার নিচের দিকে নামা যথাক্রমে ঋণাত্মক ও ধনাত্মক জিওট্যাক্সিস।
৯. গ্যালভানোট্যাক্সিস ( Galvanotaxis):
বিদ্যুৎপ্রবাহ দ্বারা উদ্দীপিত হয়ে প্রাণীর স্থানাস্তরকে গ্যালভানোট্যাক্সিস বলে।
যেমন- চিংড়িধারী কোন অ্যাকুরিয়ামে দূর্বল তড়িৎপ্রবাহ চালানো হলে সকল চিংড়ি অ্যাকুরিয়ামের ধনাত্মক (অ্যানোড ) প্রান্তের দিকে ছুটতে থাকে।
১০. ফনোট্যাক্সিস (Phonotaxis):
শব্দের প্রতি সাড়া প্রদান করে প্রাণীর চলাচলকে ফনোট্যাক্সিস বলে। পানিতে শব্দ সৃষ্টি করলে কিছু মাছ ধনাত্মক এবং কিছু মাছ ঋণাত্মক ফনোট্যাক্সিস প্রদর্শন করে।
উদ্দীপক এবং গ্রাহক অঙ্গের সম্পর্কের উপর নির্ভর করে ট্যাক্সিকে নিম্নলিখিতভাবে বিভক্ত করা হয়েছে-
(ক) ট্রোপোট্যাক্সিস:
দুই বা ততোধিক গ্রাহক অঙ্গ দ্বারা কোন একটি উদ্দীপকের উদ্দীপনা যুগপৎ গৃহীত হলে একই সময়ে সংঘটিত প্রতিক্রিয়া তুলনা করে যে ভারসাম্য মূলক সঞ্চালন ঘটে তাকে ট্রোপোট্যাক্সিস বলে।
আরও পড়ুন :- নিষেক কাকে বলে?
৭. রিওট্যাক্সিস (Rheotaxis):
পানির স্রোতের প্রতি সাড়া দিয়ে প্রাণীর স্থানাস্তরকে রিওট্যাক্সিস বলে। যেমন- কার্প জাতীয় মাছ প্রজননের সময় পানিস্রোতের বিপরীতে চলে ঋনাত্মক রিওট্যাক্সিস প্রদর্শন করে।
৮. জিওট্যাক্সিস (Geotaxis):
মাধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রাণীর চলাচলকে জিওট্যাক্সিস বলে। খাদ্যের সন্ধানে বিভিন্ন পোকার গাছ বেয়ে উপরের দিকে উঠা এবং এদের পিউপার নিচের দিকে নামা যথাক্রমে ঋণাত্মক ও ধনাত্মক জিওট্যাক্সিস।
৯. গ্যালভানোট্যাক্সিস ( Galvanotaxis):
বিদ্যুৎপ্রবাহ দ্বারা উদ্দীপিত হয়ে প্রাণীর স্থানাস্তরকে গ্যালভানোট্যাক্সিস বলে।
যেমন- চিংড়িধারী কোন অ্যাকুরিয়ামে দূর্বল তড়িৎপ্রবাহ চালানো হলে সকল চিংড়ি অ্যাকুরিয়ামের ধনাত্মক (অ্যানোড ) প্রান্তের দিকে ছুটতে থাকে।
১০. ফনোট্যাক্সিস (Phonotaxis):
শব্দের প্রতি সাড়া প্রদান করে প্রাণীর চলাচলকে ফনোট্যাক্সিস বলে। পানিতে শব্দ সৃষ্টি করলে কিছু মাছ ধনাত্মক এবং কিছু মাছ ঋণাত্মক ফনোট্যাক্সিস প্রদর্শন করে।
উদ্দীপক এবং গ্রাহক অঙ্গের সম্পর্কের উপর নির্ভর করে ট্যাক্সিকে নিম্নলিখিতভাবে বিভক্ত করা হয়েছে-
(ক) ট্রোপোট্যাক্সিস:
দুই বা ততোধিক গ্রাহক অঙ্গ দ্বারা কোন একটি উদ্দীপকের উদ্দীপনা যুগপৎ গৃহীত হলে একই সময়ে সংঘটিত প্রতিক্রিয়া তুলনা করে যে ভারসাম্য মূলক সঞ্চালন ঘটে তাকে ট্রোপোট্যাক্সিস বলে।
আরও পড়ুন :- নিষেক কাকে বলে?
খাদ্যের ঘ্রাণবাহী পানি স্রোতের প্রতি Dugesia (Planaria) পজেটিভ ট্রোপোট্যাক্সিস প্রদর্শন করে।
(খ) ক্লিনোট্যাক্সিস :
যখন পরপর কয়েকটি উদ্দিপকের তীব্রতা তুলনা করে ওরিয়েন্টেশনের ধারা নির্ধারিত হয় তখন তাকে ক্লিনোট্যাক্সিস বলে। শুয়োপোকার মাথা ক্রমান্বয়ে ডান ও বাম দিকে ঘুরিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া।
(গ) টেলোট্যাক্সিস:
উদ্দীপকের উৎস দুটি হলে এবং এরা একই পদ্ধতিতে ক্রিয়াশীল থাকলে একটি মাত্র উদ্দীপকের দিকে। প্রাণীর ওরিয়েন্টেশন ঘটবে। সন্ন্যাসী কাঁকড়া (Hermit crab) উদ্দীপকের দুটি উৎসের যেকোন একটি অভিমুখে ওরিয়েন্টশন ঘটায়।
(ঘ) মেনোট্যাক্সিস :
উদ্দীপকের ক্রিয়ার সাথে নির্দিষ্ট কৌণিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রাণীর সাড়া প্রদান। পতঙ্গের আলোক দিক দর্শন প্রতিক্রিয়া এরূপ ওরিয়েন্টেশনের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
(ঙ) নেমোট্যাক্সিস :
স্মৃতির উপর ভিত্তি করে যে ওরিয়েন্টেশন ঘটে তাকে নেমোট্যাক্সিস বলে। জলজর স্মৃতি শক্তি বলে নিত্য একই পথ অনুসরণ করে বাসায় প্রত্যাবর্তন ।
আরও পড়ুন :- টিকা কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.