কঙ্কালতন্ত্র কাকে বলে :-
আমাদের দেহের গঠন কাঠামো হলো কঙ্কাল (Skeleton) । অস্থি (Bone) ও তরুণাস্থি (Cartilage) দ্বারা গঠিত যে তন্ত্র দেহের মূল কাঠামো গঠন করে এবং অভ্যন্তরীণ নরম অঙ্গগুলোকে রক্ষা করে দেহের ভার বহন করে এবং পেশি সংযোজনের জন্য উপযুক্ত স্থান সৃষ্টি করে তাকে কঙ্কালতন্ত্র (Skeletal system) বলে।
মানবদেহের কঙ্কালতন্ত্র মোট ২০৬টি অস্থি নিয়ে গঠিত। হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, পাকস্থলী, যকৃত, মাজ ইত্যাদি দেহের কোমল অঙ্গসমূহকে অস্থির আবরণে সুরক্ষিত রাখে। অস্থিগুলো ঐচ্ছিক মাংসপেশি দ্বারা পরস্পর যুক্ত থাকায় ইচ্ছাকৃত অঙ্গ সঞ্চালন ও চলাফেরা করা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন:- অস্থিসন্ধি কাকে বলে?
মানবদেহের কঙ্কালতন্ত্র মোট ২০৬টি অস্থি নিয়ে গঠিত। হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, পাকস্থলী, যকৃত, মাজ ইত্যাদি দেহের কোমল অঙ্গসমূহকে অস্থির আবরণে সুরক্ষিত রাখে। অস্থিগুলো ঐচ্ছিক মাংসপেশি দ্বারা পরস্পর যুক্ত থাকায় ইচ্ছাকৃত অঙ্গ সঞ্চালন ও চলাফেরা করা সম্ভব হয়।
কঙ্কালতন্ত্রের শ্রেণিবিভাগ :-
মানব দেহের কঙ্কালতন্ত্রকে সাধারণত দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-আরও পড়ুন:- অস্থিসন্ধি কাকে বলে?
১. বহিঃকঙ্কাল (Exoskeleton)- কঙ্কালের এ অংশগুলো বাইরে অবস্থান করে। যেমন- নখ, চুল, লোম ইত্যাদি।
২. অন্তঃকঙ্কাল (Endoskeleton)- কমালের এ অংশগুলো আমরা বাইরে থেকে দেখতে পাই না। অস্থি ও তরুণাস্থি সমন্বয়ে এ কঙ্কালতন্ত্র গঠিত।
কঙ্কালতন্ত্রের কাজ :-
কঙ্কালতন্ত্রের সাহায্যে নিম্নলিখিত কাজগুলো সম্পন্ন হয়। যথা-কাঠামো দান- কঙ্কাল দেহকে একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো বা আকার দান করে। এটা নিচের অঙ্গকে উপরের অঙ্গের সাথে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখে।
সংরক্ষণ- করোটিতে, মেরুরজ্জু মেরুদন্ডে এবং হৃদপিন্ড ও ফুসফুস প্রভৃতি নরম অঙ্গগুলো বক্ষ গহবরের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকে। বক্ষগহবরের কাঠামো গঠনে বক্ষপিঞ্জরের গুরুত্ব অপরিসীম।
নড়াচড়া - হাত, পা, স্কন্ধচক্র শ্রোণীচক্র নড়াচড়ায় সাহায্য করে। কোন কোন ক্ষেত্রে অস্থি লিভার রূপে এবং এর অস্থিসন্ধি ফালাক্রমের ন্যায় কাজ করে। ফলে অস্থি সঞ্চালন সম্ভবপর হয়।
সংযোজন- পেশি বন্ধনি, লিগামেন্ট বা অস্থিবন্ধনি প্রভৃতি অস্থি বা হাড়ের সাথে সংযুক্ত থেকে অস্থি সঞ্চালনে সাহায্য করে।
রক্ত কণিকা উৎপাদন- দেহের সিংহভাগ রক্ত কণিকা অস্থিমজ্জা থেকে উৎপন্ন হয়।
আরও পড়ুন :- পেশীট্যিসু কাকে বলে?
খনিজ লবণ সঞ্চয় - দেহের অস্থিগুলো বিভিন্ন খনিজ লবণ, যেমন- ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস প্রভৃতি সঞ্চয় করে রাখে। দেহের অধিকাংশ ক্যালসিয়ামই অস্থিতে সঞ্চিত থাকে।
ভারবহন- দেহের সকল পেশি, নরম অঙ্গসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কঙ্কালের সাথে আটকে থাকে এবং দেহের ভারবহনে সম্পৃক্ত।
চলাচল - অস্থির সাথে পেশি আটকানোর ফলে অস্থি নাড়ানো সম্ভব হয় এবং আমরা চলাচল করতে পারি।
অস্থি বা হাড়:
খনিজ লবণ সঞ্চয় - দেহের অস্থিগুলো বিভিন্ন খনিজ লবণ, যেমন- ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস প্রভৃতি সঞ্চয় করে রাখে। দেহের অধিকাংশ ক্যালসিয়ামই অস্থিতে সঞ্চিত থাকে।
ভারবহন- দেহের সকল পেশি, নরম অঙ্গসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কঙ্কালের সাথে আটকে থাকে এবং দেহের ভারবহনে সম্পৃক্ত।
চলাচল - অস্থির সাথে পেশি আটকানোর ফলে অস্থি নাড়ানো সম্ভব হয় এবং আমরা চলাচল করতে পারি।
কঙ্কালের গঠন :-
অস্থি ও তরুণাস্থি দিয়ে কঙ্কাল গঠিত।অস্থি বা হাড়:
অস্থিকে একটি নিরেট অংশ বলে মনে হয়। আসলে তা নয়, অস্থি হল এক ধরণের জীবন্ত টিস্যু। এ টিস্যু শক্ত ও স্পঞজাতীয় পদার্থে গঠিত।
অস্থির ভিতরে অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে যুক্ত থাকে অস্থিমজ্জা, আর বাইরে থাকে অস্থি আবরণী স্তর। অস্থি মজ্জার শতকরা ৪০ ভাগ জৈব পদার্থ ও বাকী ৬০ ভাগ অজৈব পদার্থ। অজৈব অংশ ক্যালসিয়াম ফসফেট ও ক্যালসিয়াম কার্বনেট দ্বারা গঠিত।
স্বাভাবিক অবস্থায় অস্থিতে শতকরা ৪০-৫০ ভাগ পানি থাকে। অন্যান্য অঙ্গের মত প্রতিটি অস্থিতে রক্ত, লসিকা ও স্নায়ু সরবরাহ থাকে।
তরুণাস্থি :
একটি তরুণাস্থি টিস্যু দিয়ে গঠিত এবং অস্থির প্রান্তভাগে নীলাভ আবরণের মত দেখা যায়। তরুণাস্থি অস্থি নড়াচড়া ও অস্থিসন্ধি গঠনে সাহায্য করে। তরুণাস্থির উপরিভাগ সাধারণত মসৃণ থাকে।
নবজাত শিশুর অস্থি তরুণাস্থি দিয়ে গঠিত, বয়স বাড়ার সাথে সাথে এসব তরুণাস্থি শক্ত অস্থিতে পরিণত হয়।
স্পঞ্জি অস্থি :
অস্থির এ অংশটুকু স্পঞ্জের মত ছিদ্রযুক্ত। অস্থির দু'প্রান্ত প্রধানত স্পঞ্জি অস্থি দিয়ে তৈরি।
আরও পড়ুন :- পেশি কলা কাকে বলে?
লোহিত অস্থিমজ্জা :
অস্থির কেন্দ্রে অবস্থিত নলাকার গহ্বর যে টিস্যু দ্বারা পূর্ণ থাকে তাকে অস্থিমজ্জা বলে। অস্থিমজ্জা লাল ও হলুদ বর্ণের হতে পারে। লোহিত অস্থিমজ্জা থেকে লোহিত কণিকা তৈরি হয়।
অস্থি আবরণী :
অস্থির বাইরে একটি মজবুত ও পাতলা আবরণ শক্তভাবে আটকে থাকে, একে বহিরাবরণ (Periosteum) বলে। বহিরাবরণের ভিতর দিয়ে রক্তনালী ও শামু যাতায়াত করতে পারে। মাংসপেশী ও পেশীবন্ধনী এর উপর এসে আটকায়। ফলে অস্থি সঞ্চালন সম্ভবপর হয়।
নিরেট অস্থি :
নিরেট অস্থি অস্থির সবচেয়ে কঠিন ও শক্ত অংশ। এখানে অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম ফসফেট ও অন্যান্য খনিজ লবণ জমা হয়ে শক্ত হয়।
মানবদেহের অস্থিগুলো বিভিন্নভাবে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়ে অন্তঃকঙ্কাল তৈরি করেছে। দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে।
প্রতিটি সন্ধির অস্থিপ্রান্তগুলো এক রকম স্থিতিস্থাপক রজ্জুর মত বন্ধনী দিয়ে দৃঢ়ভাবে আটকানো থাকে, ফলে অস্থিগুলো সহজে সন্ধিস্থল হতে বিচ্যুত হতে পারে না। পেশীর সংকোচন অস্থি টেনে নড়াচড়া করাতে সক্ষম হয়। কোনো কোনো অস্থিসন্ধি একেবারে অনড়, যেমন- করোটির অস্থিসন্ধি ও শ্রেণীচক্রের সন্ধি।
কিছু অস্থিসন্ধি আবার সামান্য নড়াচড়া করতে পারে, ফলে আমরা দেহকে সামনে, পিছনে ও পাশে বাঁকাতে পারি, যেমন- মেরুদন্ডের অস্থিসন্ধি। এগুলো ছাড়া দেহে প্রায় ৭০টিরও বেশি সহজে সঞ্চালনক্ষম বা সাইনোভিয়াল সন্ধি আছে। সাইনোভিয়াল সন্ধিতে, সন্ধিস্থলে একটি অস্থির একদিকের বলের মত গোল অংশটি অন্য অস্থির কোটরে এমনভাবে স্থাপিত হয় যে, অস্থির সকল দিকে চলাচল সম্ভব হয়; এক্ষেত্রে অস্থি দুটি তন্তুময় ঝিল্লি বা লিগামেন্ট দ্বারা সংযুক্ত থাকে।
মানবদেহের অস্থিগুলো বিভিন্নভাবে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়ে অন্তঃকঙ্কাল তৈরি করেছে। দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে।
প্রতিটি সন্ধির অস্থিপ্রান্তগুলো এক রকম স্থিতিস্থাপক রজ্জুর মত বন্ধনী দিয়ে দৃঢ়ভাবে আটকানো থাকে, ফলে অস্থিগুলো সহজে সন্ধিস্থল হতে বিচ্যুত হতে পারে না। পেশীর সংকোচন অস্থি টেনে নড়াচড়া করাতে সক্ষম হয়। কোনো কোনো অস্থিসন্ধি একেবারে অনড়, যেমন- করোটির অস্থিসন্ধি ও শ্রেণীচক্রের সন্ধি।
কিছু অস্থিসন্ধি আবার সামান্য নড়াচড়া করতে পারে, ফলে আমরা দেহকে সামনে, পিছনে ও পাশে বাঁকাতে পারি, যেমন- মেরুদন্ডের অস্থিসন্ধি। এগুলো ছাড়া দেহে প্রায় ৭০টিরও বেশি সহজে সঞ্চালনক্ষম বা সাইনোভিয়াল সন্ধি আছে। সাইনোভিয়াল সন্ধিতে, সন্ধিস্থলে একটি অস্থির একদিকের বলের মত গোল অংশটি অন্য অস্থির কোটরে এমনভাবে স্থাপিত হয় যে, অস্থির সকল দিকে চলাচল সম্ভব হয়; এক্ষেত্রে অস্থি দুটি তন্তুময় ঝিল্লি বা লিগামেন্ট দ্বারা সংযুক্ত থাকে।
আরও পড়ুন :- কোষ রস কাকে বলে?
এ ধরনের সন্ধিতে সাইনোভিয়াল রস নামক এক প্রকার তৈলাক্ত রস থাকায় অস্থি দুটি সহজে নড়াচড়া করতে পারে। হাতের কনুই, হাটু ও কাধের সন্ধি সাইনোভিয়াল সন্ধির অন্তর্ভুক্ত।
এ ধরনের সন্ধিতে সাইনোভিয়াল রস নামক এক প্রকার তৈলাক্ত রস থাকায় অস্থি দুটি সহজে নড়াচড়া করতে পারে। হাতের কনুই, হাটু ও কাধের সন্ধি সাইনোভিয়াল সন্ধির অন্তর্ভুক্ত।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.