কোষ রস (Cell sap):-
আমরা জানি, পাতা থেকে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় তৈরি শর্করা জাতীয় খাদ্য পানির সঙ্গে কান্ডের ফ্রোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশে পরিবাহিত হয়।অনুরূপভাবে কান্ডের জাইলেম টিস্যুর মাধ্যমে পানি ও খনিজ লবণ মূল থেকে পাতায় পৌঁছায়। এটি উদ্ভিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ পাতায় পানি ও খনিজ লবণ না পৌঁছালে উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করতে পারতো না।
কোষস্থ পানি এবং পানিতে দ্রবীভূত খনিজ লবণকে একত্রে কোষ রস বলা হয়।
এ কোষ রস মূল থেকে উদ্ভিদের সর্বোচ্চ শাখা-প্রশাখা এবং পাতায় পৌঁছায়।
উদ্ভিদে রস উত্তোলন :-
যে প্রক্রিয়ায় জাইলেম টিস্যুর মাধ্যমে উদ্ভিদের মূল কর্তৃক শোষিত পানি এবং খনিজ লবণ শোষণ অঞ্চল থেকে মাধ্যাকর্ষণের বিপরীতে উদ্ভিদের উচ্চতর অংশে অর্থাৎ বিপাকীয় অঞ্চলে উঠে আসে তাকে বলা হয় উদ্ভিদে রস উত্তোলন।আরও পড়ুন :- শ্বসন কাকে বলে?
এ রসকে জীববিজ্ঞানের ভাষায় কোষ রস বলা হয়। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে সর্বজন স্বীকৃত যে- জাইলেম টিস্যুর ভেসেল এবং ট্রাকিড-এর মাধ্যমেই কোষ রস শোষণ অঞ্চল থেকে বিপাকীয় অঞ্চলে আরোহিত হয়।
রস ও লবণ মূল কর্তৃক শোষণ শেষে কর্টেক্স অঞ্চল পার হয়ে এক সময় জাইলেম টিস্যুতে প্রবেশ করে এবং এর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়।
উদ্ভিদে কোষ রস উত্তোলন প্রক্রিয়া :-
মূলরোম থেকে পানি ও খনিজ লবণ উদ্ভিদ দেহের ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তা কোষ রস হিসেবে জাইলেম টিস্যুর মাধ্যমে উদ্ভিদের অগ্রপান্তে পৌঁছায়।জাইলেম টিস্যুর কোষীয় উপাদান চারটি। যথা- ট্রাকিড, ট্রাকিয়া, জাইলেম প্যারেনকাইমা এবং জাইলেম তন্ত্র।
জাইলেমের চারটি উপাদানের মধ্যে ট্রাকিড এবং ট্রাকিয়ার মধ্য দিয়ে সরাসরি কোষ রস পরিবাহিত হয়। উক্ত কোষ দুটি বড় বড় নলাকৃতি গঠন বিশেষ। এদের উভয় প্রান্তের প্রস্থ প্রাচীর বিলুপ্ত হয়ে ছিদ্র সৃষ্টি করে। এ সকল কোষে প্রোটোপ্লাস্ট থাকে না এবং এরা মৃত। ফলে কোষগুলো লম্বাভাবে কোষ প্রান্তে পরপর সজ্জিত হয়ে নলের আকার সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুন :- অভিশ্রবন নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে?
এ কোষগুলো মূল থেকে পাতা পর্যন্ত সজ্জিত। তাই কোষ রস সরাসরি জাইলেমের ট্রাকিড এবং ট্রাকিয়ার নলাকার ফাঁকা স্থান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পাতার মেসোফিল টিস্যুতে পৌঁছায়। খুবই সামান্য পরিমাণ পানি কোষ প্রাচীর দিয়েও পরিবাহিত হতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.