বর্তমানে পৃথিবীতে উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ (অনেকের মতে এর চেয়েও বেশি)। এ পাঁচ লক্ষ প্রজাতির উদ্ভিদ একটি থেকে অন্যটি ভিন্নতর। বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে এদের প্রতিটি প্রজাতিকে শনাক্ত করা যায়। ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির উপস্থিতিকে বলা হয় প্রজাতিগত বৈচিত্র্য।
বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে যেমন গঠনগত বৈচিত্র্য রয়েছে, তেমনি কার্যগত বৈচিত্র্যও রয়েছে। সৃষ্টির প্রথমদিকে উদ্ভিদ ছিল সরল প্রকৃতির। সময়ের বিবর্তনে উদ্ভিদের গঠনগত কার্যগত ও সংখ্যাগত বিবর্তনও হয়েছে। একই প্রজাতির মধ্যে আবার প্রকরণগত ভিন্নতা দেখা যায়। যেমন- ধান বা আম এর বিভিন্ন প্রকরণ এর একটি উদাহরণ। জিনগত পার্থক্যের কারণে এমনটি হয়। একে জিনগত বৈচিত্র্য বলা হয়।
বিভিন্ন ইকোসিস্টেমে নানা ধরনের উদ্ভিদ। একে পরিবেশগত বৈচিত্র্য বলা হয়।
তাই উদ্ভিদের জিনগত বৈচিত্র্য্য, প্রজাতিগত বৈচিত্র্য ও পরিবেশগত বৈচিত্র্যাকে একসাথে উদ্ভিদ বৈচিত্র্য বলা হয়।
সামগ্রিকভাবে জীবের জিনগত, প্রজাতিগত ও পরিবেশগত বৈচিত্র্য্যকে একসাথে জীববৈচিত্র্য বলা হয়।
আরও পড়ুন :- ছত্রাক কাকে বলে?
উদ্ভিদের আকার, আকৃতি ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যাবলীর পারস্পরিক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে এদেরকে কিংডম, বিভাগ, শ্রেণী, বর্ণ, গোত্র, গণ ও প্রজাতি প্রভৃতি দল-উপদলে বিন্যস্ত করার পদ্ধতিকে বলা হয় উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস।
১. কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি,
২. প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি এবং
৩. জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি।
এগুলো সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হয়েছে -
১. কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি :
কোন একটি বা বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে উদ্ভিদজগতের যে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তাকে কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি বলা হয়।
থিয়োফ্রাস্টাস এবং পিনিয়াসের শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির উদাহরণ।
২. প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি :
বিভিন্ন উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ গোষ্ঠীর মধ্যে সামগ্রিক অঙ্গসংস্থানিক সাদৃশ্যের উপর নির্ভর করে যে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তাকে প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি বলা হয়।
আরও পড়ুন :- কোষ বিভাজন কাকে বলে?
বেনথাম- হুকার এর শ্রেণিবিন্যাস প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির উদাহরণ।
৩. জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি :
বিভিন্ন উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ গোষ্ঠীকে তাদের উৎপত্তিগত সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে বিবর্তন ধারা অনুযায়ী আদি হতে আধুনিক ক্রমধারায় সাজিয়ে যে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তাকে জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি বলা হয়।
এসলার প্রান্টল, হাচিনসন, বেসি, এনকুইস্ট, তাতাইয়ান প্রমুখ বিজ্ঞানীর দেয়া শ্রেণিবিন্যাস জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির উদাহরণ।
১. উদ্ভিদ জগতের জ্ঞানার্জনে :
আমাদের দরকারে বিশ্বের সব উদ্ভিদকে জানা আবশ্যক। কিন্তু সারা বিশ্বের প্রায় পাঁচ লক্ষ প্রজাতির প্রতিটিকে পৃথক পৃথকভাবে জানা অসমান, অথচ আমাদেরকে তা জানতে হবে। সহজ উপায়ে সব উদ্ভিদকে জানতে উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস সাহায্য করে।
২. শনাক্তকরণে :
উদ্ভিদ শ্রেণিবিন্যাস উদ্ভিদের সঠিক শনাক্তকরণকে সহজতর করে।
৩. পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়ে :
উদ্ভিদ সম্পর্কিত আমাদের জ্ঞানকে সংক্ষেপে প্রকাশ করতে শ্রেণিবিন্যাস সহায়তা করে।
৪. আদি উন্নত নির্ধারণ এবং বিবর্তনে :
আধুনিক শ্রেণিবিন্যাস উদ্ভিদের আদি উন্নত নির্ধারণে সাহায্য করে এবং বিবর্তন ধারার নির্দেশ দান করে।
৫. আন্তর্জাতিক পরিচিতিতে:
বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে যেমন গঠনগত বৈচিত্র্য রয়েছে, তেমনি কার্যগত বৈচিত্র্যও রয়েছে। সৃষ্টির প্রথমদিকে উদ্ভিদ ছিল সরল প্রকৃতির। সময়ের বিবর্তনে উদ্ভিদের গঠনগত কার্যগত ও সংখ্যাগত বিবর্তনও হয়েছে। একই প্রজাতির মধ্যে আবার প্রকরণগত ভিন্নতা দেখা যায়। যেমন- ধান বা আম এর বিভিন্ন প্রকরণ এর একটি উদাহরণ। জিনগত পার্থক্যের কারণে এমনটি হয়। একে জিনগত বৈচিত্র্য বলা হয়।
বিভিন্ন ইকোসিস্টেমে নানা ধরনের উদ্ভিদ। একে পরিবেশগত বৈচিত্র্য বলা হয়।
তাই উদ্ভিদের জিনগত বৈচিত্র্য্য, প্রজাতিগত বৈচিত্র্য ও পরিবেশগত বৈচিত্র্যাকে একসাথে উদ্ভিদ বৈচিত্র্য বলা হয়।
সামগ্রিকভাবে জীবের জিনগত, প্রজাতিগত ও পরিবেশগত বৈচিত্র্য্যকে একসাথে জীববৈচিত্র্য বলা হয়।
উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস কাকে বলে :-
অসংখ্য ও বিচিত্র উদ্ভিদরাজিকে কীভাবে তুলনামুলকভাবে কম সময়ে সহজে জানা যায় তার জন্য চাই সুচিন্তিত এবং সুবিন্যস্ত একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিকেই বলা হয় উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস।আরও পড়ুন :- ছত্রাক কাকে বলে?
উদ্ভিদের আকার, আকৃতি ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যাবলীর পারস্পরিক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে এদেরকে কিংডম, বিভাগ, শ্রেণী, বর্ণ, গোত্র, গণ ও প্রজাতি প্রভৃতি দল-উপদলে বিন্যস্ত করার পদ্ধতিকে বলা হয় উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস।
উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস কত প্রকার ও কি কি:-
উদ্ভিদজগতকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্ভিদবিদ বিভিন্নভাবে শ্রেণিবিন্যাস করেছেন। এ সমস্ত শ্রেণিবিন্যাসকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-১. কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি,
২. প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি এবং
৩. জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি।
এগুলো সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হয়েছে -
১. কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি :
কোন একটি বা বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে উদ্ভিদজগতের যে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তাকে কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি বলা হয়।
থিয়োফ্রাস্টাস এবং পিনিয়াসের শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি কৃত্রিম শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির উদাহরণ।
২. প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি :
বিভিন্ন উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ গোষ্ঠীর মধ্যে সামগ্রিক অঙ্গসংস্থানিক সাদৃশ্যের উপর নির্ভর করে যে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তাকে প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি বলা হয়।
আরও পড়ুন :- কোষ বিভাজন কাকে বলে?
বেনথাম- হুকার এর শ্রেণিবিন্যাস প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির উদাহরণ।
৩. জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি :
বিভিন্ন উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ গোষ্ঠীকে তাদের উৎপত্তিগত সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে বিবর্তন ধারা অনুযায়ী আদি হতে আধুনিক ক্রমধারায় সাজিয়ে যে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তাকে জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি বলা হয়।
এসলার প্রান্টল, হাচিনসন, বেসি, এনকুইস্ট, তাতাইয়ান প্রমুখ বিজ্ঞানীর দেয়া শ্রেণিবিন্যাস জাতিজনি শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির উদাহরণ।
উদ্ভিদ শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা :-
উদ্ভিদ শ্রেণিবিন্যাসের নানাবিধ প্রয়োজনীয়তার মধ্যে নিচে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো১. উদ্ভিদ জগতের জ্ঞানার্জনে :
আমাদের দরকারে বিশ্বের সব উদ্ভিদকে জানা আবশ্যক। কিন্তু সারা বিশ্বের প্রায় পাঁচ লক্ষ প্রজাতির প্রতিটিকে পৃথক পৃথকভাবে জানা অসমান, অথচ আমাদেরকে তা জানতে হবে। সহজ উপায়ে সব উদ্ভিদকে জানতে উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাস সাহায্য করে।
২. শনাক্তকরণে :
উদ্ভিদ শ্রেণিবিন্যাস উদ্ভিদের সঠিক শনাক্তকরণকে সহজতর করে।
৩. পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়ে :
উদ্ভিদ সম্পর্কিত আমাদের জ্ঞানকে সংক্ষেপে প্রকাশ করতে শ্রেণিবিন্যাস সহায়তা করে।
৪. আদি উন্নত নির্ধারণ এবং বিবর্তনে :
আধুনিক শ্রেণিবিন্যাস উদ্ভিদের আদি উন্নত নির্ধারণে সাহায্য করে এবং বিবর্তন ধারার নির্দেশ দান করে।
৫. আন্তর্জাতিক পরিচিতিতে:
পৃথিবীর সকল উদ্ভিদকে সহজে আন্তর্জাতিক পরিচিতি প্রদানে শ্রেণিবিন্যাসের জ্ঞান সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন :- লাইকেন কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.