কোষ প্রাচীর কাকে বলে :-
প্রতিটি উদ্ভিদ কোষ সাধারণত বাইরের দিকে একটি নির্জীব জড় আবরণী দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে। একে কোষ প্রাচীর বলে।প্লাসমা মেমব্রেনের বাইরে যে অপ্রোটোপ্লাসমীয় জড় পদার্থ প্রতিটি উদ্ভিদকোষকে বেষ্টন করে তাকে রক্ষা করে ও উদ্ভিদ কোষের আকৃতি প্রদান করে মূলত সেলুলোজ দ্বারা গঠিত (সবুজ উদ্ভিদে) সেই বহিঃকোষীয় ধাত্রটিকে কোষপ্রাচীর বলা হয়।
উদ্ভিদ কোষ প্রাচীরের বৈশিষ্ট্য :-
উদ্ভিদ কোষ প্রাচীর প্রোটোপ্লাজমেরই নিঃসৃত দ্রব্য দিয়ে গঠিত। কোষের আকার ও আয়তন প্রধানত কোষ প্রাচীরের উপরই নির্ভর করে। কোষের কার্য, অবস্থান ও বয়স ভেদে কোষ প্রাচীর সূক্ষ্ম অথবা স্কুল, মসৃণ অথবা বিভিন্ন ধরনের কারুকার্যময় হতে পারে। এটি উদ্ভিদ কোষের অনন্য একটি বৈশিষ্ট্য।আরও পড়ুন :- কোষ কাকে বলে?
কোষ প্রাচীরের কাজ :-
১. কোষের নির্দিষ্ট আকৃতি প্রদান করে,২. বাইরের প্রতিকূল পরিবেশ থেকে প্রোটোপ্লাজমকে রক্ষা করে,
৩. প্রয়োজনীয় শক্তি ও দৃঢ়তা প্রদান করে,
৪. কোষের ভেতরে ও বাইরে পানি ও খনিজ লবণ যাতায়াত কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে এবং
৫. কোষগুলোকে পরস্পর থেকে পৃথক রাখে।
কোষ প্রাচীরের ভৌত গঠন :-
প্রোটোপ্লাজমের নিঃসৃত দ্রব্য দিয়ে কোষ প্রাচীর গঠিত হলেও এটি নির্জীব বা জড় পদার্থ। পরিণত কোষে কোষ প্রাচীর সাধারণত তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথা- মধ্যপর্দা, প্রাথমিক প্রাচীর ও সেকেন্ডারি প্রাচীর।মধ্যপর্দা :
দুটি কোষের মধ্যবর্তী সাধারণ পর্দাকে মধ্য পর্দা বলে। মধ্য পর্দা দু'টি কোষকে সংযুক্ত রাখে। এটি বিগলিত হলে দুটি কোষ পৃথক হয়ে যায়।
প্রাথমিক প্রাচীর :
এটি কোষ প্রাচীরের দ্বিতীয় স্তর। মধ্যপর্দার উপর সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ, গ্লাইকোপ্রোটিন ইত্যাদি জমা হয়ে এ স্তর তৈরি হয়। এ স্তরটি পাতলা। সেকেন্ডারি পর্দা এবং মধ্যপর্দার ভেতরের দিকে অবস্থিত।
আরও পড়ুন :- উদ্ভিদ ও প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য কি?
সেকেন্ডারি প্রাচীর :
কোষের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রাথমিক কোষ প্রাচীরের উপর বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ জমা হয়ে আর একটি স্তর তৈরি হয়। এ স্তরটি অধিকতর পুরু। এতে সাধারণত সুবেরিন, মোম, ক্যালসিয়াম অভ্রালেট ইত্যাদি জমা হয়।
পিট মেমব্রেন :
উপরোক্ত তিনটি অংশ ছাড়াও কোষ প্রাচীরে পিট এলাকা বিদ্যমান। পিট এলাকাটি হলো কোষ প্রাচীরের সবচেয়ে পাতলা এলাকা। দুটি পাশাপাশি কোষের কূপ একটি অপরটির মুখোমুখি ও উল্টোদিকে অবস্থিত। কূপ দু'টির মাঝখানে কেবলমাত্র একটি মধ্যপর্দা থাকে যাকে পিট মেমব্রেন বলে। মুখোমুখি দু'টি কূপকে পিট পেয়ার বলে। আসলে কূপ অঞ্চলে প্রাথমিক প্রাচীর গঠিত হয় না।
সেকেন্ডারি প্রাচীর :
কোষের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রাথমিক কোষ প্রাচীরের উপর বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ জমা হয়ে আর একটি স্তর তৈরি হয়। এ স্তরটি অধিকতর পুরু। এতে সাধারণত সুবেরিন, মোম, ক্যালসিয়াম অভ্রালেট ইত্যাদি জমা হয়।
পিট মেমব্রেন :
উপরোক্ত তিনটি অংশ ছাড়াও কোষ প্রাচীরে পিট এলাকা বিদ্যমান। পিট এলাকাটি হলো কোষ প্রাচীরের সবচেয়ে পাতলা এলাকা। দুটি পাশাপাশি কোষের কূপ একটি অপরটির মুখোমুখি ও উল্টোদিকে অবস্থিত। কূপ দু'টির মাঝখানে কেবলমাত্র একটি মধ্যপর্দা থাকে যাকে পিট মেমব্রেন বলে। মুখোমুখি দু'টি কূপকে পিট পেয়ার বলে। আসলে কূপ অঞ্চলে প্রাথমিক প্রাচীর গঠিত হয় না।
কোষ প্রাচীরের রাসায়নিক গঠন :-
মধ্যপর্দায় অধিক পরিমাণ পেকটিক অ্যাসিড থাকে। এছাড়া ক্যালসিয়াম পেকটেট এবং ম্যাগনেসিয়াম পেকটেট থাকে। একে পেকটিন বলা হয়। অল্প পরিমাণে প্রোটোপেকটিনও মধ্যপর্দায় থাকে। প্রাথমিক প্রাচীরে প্রধানত সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ এবং গ্লাইকোপেকটিন থাকে। সেকেন্ডারি কোষ প্রাচীরে লিগনিন (Lignin), কিউটিন, সুবেরিন মোম, ক্যালসিয়াম অক্সালেট ইত্যাদি থাকে।আরও পড়ুন :- কোষ ঝিল্লি কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.