কোষ কাকে বলে :-
এককথায় জীবদেহের গাঠনিক এবং কার্যকরী একককে কোষ বলা হয়।
প্রতিটি জীবদেহ এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত। একটি মাত্র কোষ দ্বারা গঠিত জীবকে বলা হয় এককোষী জীব এবং একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত জীবকে বলা হয় বহুকোষী জীব।
কোষ জীবদেহের গাঠনিক এবং কার্যকরী একক। কোষের অভ্যন্তরেই জীবের জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় জৈবিক কার্যকলাপ সম্পন্ন হয়। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী রবার্ট হুক ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে বোতলের কর্ক পরীক্ষাকালে মৌচাকের ন্যায় অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এবং পরস্পর সংযুক্ত প্রকোষ্ঠ দেখতে পান। তিনি প্রকোষ্ঠগুলোর নাম দেন "Cell"। Cell এর বাংলা অর্থ কুঠুরী বা কোষ।
একটির পর একটি ইটের গাথুনি দিয়ে যেমন একটি দালান তৈরি হয় তেমনি উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহও তৈরি হয় এক বা একাধিক একক দিয়ে। জীবের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সবরকম কার্যকলাপও সম্পন্ন হয় এই এককেই। এই এককই হচ্ছে কোষ।
আরও পড়ুন :- কোষ বিভাজন কাকে বলে?
প্রতিটি জীবদেহ এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত। একটি মাত্র কোষ দ্বারা গঠিত জীবকে বলা হয় এককোষী জীব এবং একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত জীবকে বলা হয় বহুকোষী জীব।
কোষ জীবদেহের গাঠনিক এবং কার্যকরী একক। কোষের অভ্যন্তরেই জীবের জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় জৈবিক কার্যকলাপ সম্পন্ন হয়। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী রবার্ট হুক ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে বোতলের কর্ক পরীক্ষাকালে মৌচাকের ন্যায় অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এবং পরস্পর সংযুক্ত প্রকোষ্ঠ দেখতে পান। তিনি প্রকোষ্ঠগুলোর নাম দেন "Cell"। Cell এর বাংলা অর্থ কুঠুরী বা কোষ।
একটির পর একটি ইটের গাথুনি দিয়ে যেমন একটি দালান তৈরি হয় তেমনি উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহও তৈরি হয় এক বা একাধিক একক দিয়ে। জীবের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সবরকম কার্যকলাপও সম্পন্ন হয় এই এককেই। এই এককই হচ্ছে কোষ।
আরও পড়ুন :- কোষ বিভাজন কাকে বলে?
আধুনিক এবং প্রাসরাসায়নিক দৃষ্টিকোণ থেকে জীবিত কোষগুলোকে একটি সুসংগঠিত রাসায়নিক কারখানা হিসাবে আখ্যায়িত করা যেতে পারে যা জীবন পরিচালনার জন্য সব রকম কাজ সম্পন্ন করতে এবং সব রকম দ্রব্যাদি তৈরি করতে সক্ষম। অর্থাৎ জীবের মূল দৈহিক কাঠামো এবং জৈবিক ক্রিয়ার এককই হচ্ছে কোষ।
কোষ কত প্রকার ও কি কি :-
ক) অবস্থান এবং কাজের উপর নির্ভর করে কোষকে দু'ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-১. দেহ কোষ এবং
২. জনন কোষ।
এগুলো সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হলো -
১. দেহ কোষ কাকে বলে :-
যে সকল কোষ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও অঙ্গতন্ত্র গঠন করে তাদেরকে বলা হয় দেহ কোষ। যেমন- পেশি কোষ, জাইলেম কোষ ইত্যাদি।
দেহ কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা জনন কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার দ্বিগুণ থাকে। তাই দেহ কোষকে ডিপ্লয়েড কোষ বলা হয়।
২. জনন কোষ কাকে বলে :-
জীব দেহের যে সকল কোষ জনন কার্যে অংশ নেয় তাদেরকে বলা হয় জনন কোষ। জনন কোষ কেবল মাত্র যৌন জননক্ষম জীবে সৃষ্টি হয়। যেমন- শুক্রাণু, ডিম্বাণু, পরাগরেণু ইত্যাদি।
জনন কোষে ক্রোমোসোম সংখ্যা দেহ কোষের ক্রোমোসোম সংখ্যার অর্ধেক। তাই জনন কোষকে হ্যান্ড্রয়েড কোষ বলা হয়।
(খ) নিউক্লিয়াসের গঠনের উপর নির্ভর করে কোষকে দু'ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
১. আদি কোষ এবং
২. প্রকৃত কোষ।
আরও পড়ুন :- কোষ প্রাচীর কাকে বলে?
এগুলো সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হয়েছে -
১. আদি কোষ কাকে বলে :-
যে সকল কোষে সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস অনুপস্থিত থাকে তাদেরকে বলা হয় আদি কোষ। এ সকল কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া, গলগি বডি সেন্ট্রিয়াল, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইতাদি অনুপস্থিত থাকে। তবে বিক্ষিপ্ত DNA এবং রাইবোসোম থাকে। Mycoplasma নামক PPLO (Pleuropneumonia like organism), ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ সবুজ ব্যাকটেরিয়া, ইত্যাদি আদি কোষীয় জীব।
২. প্রকৃত কোষ কাকে বলে :-
যে সকল কোষে সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে তাদেরকে বলা হয় প্রকৃত কোষ। শৈবাল, ছত্রাক, প্রায়োফাইটস, টেরিডোফাইটস, জিমনোস্পার্মস, অ্যানজিও স্পার্মস ইত্যাদি প্রকৃত কোষ দ্বারা গঠিত।
মানবদেহের স্নায়ুর কাজ পরিচালনায় বিভিন্ন প্রকার কোষের ভূমিকা :-
মানবদেহে বিভিন্ন রকমের কোষ রয়েছে। এদের কাজও আবার বিভিন্ন রকমের। যেমন- স্নায়ু কোষ মানবদেহে জালের ন্যায় ছড়িয়ে রয়েছে। স্নায়ু কোষের একককে নিউরন বলে। এরা বাহ্যিক পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে দেহের অভ্যন্তরে তথা মেরুদন্ড ও মস্তিষ্কে পরিবাহিত করে এবং সে অনুযায়ী প্রতিবেদন সৃষ্টি এবং তা বাস্তবায়ন করে থাকে।আবার মস্তিষ্কের কোন বার্তা শরীরের নির্দিষ্ট অংশে প্রেরণ করে। যে সমস্ত স্নায়ু কোষ বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থেকে বার্তা মস্তিষ্কে নিয়ে যায় তাদের 'সেনসরি নিউরন এবং যে সমস্ত স্নায়ু কোষ মস্তিষ্ক থেকে বার্তা সারাদেহে ছড়িয়ে দেয় তাদেরকে 'মটর নিউরন' বলে। এরা উচ্চতর প্রাণীতে স্মৃতি সংরক্ষণ করে, দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
আরও পড়ুন :- কোষ ঝিল্লি কাকে বলে?
চোখের স্নায়ু কোষগুলো দেখতে এবং কানের স্নায়ু কোষগুলো শ্রবণে সহায়তা করে। মানুষের চোখের ন্যায় স্নায়ু কোষ না থাকার অনেক প্রাণী দিনে অথবা রাত্রে দেখতে পায় না। আবার কোন কোন প্রাণী কখনই দেখতে পারে না।
মানব দেহের পেশির কাজ পরিচালনায় বিভিন্ন প্রকার কোষের ভূমিকা :-
পেশি কোষগুলো সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে অঙ্গ সঞ্চালন, চলন এবং অভ্যন্তরীণ পরিবহনে অংশগ্রহণ করে। বিভিন্ন প্রকার পেশি কোষ বিভিন্ন রকমের কাজ করে। যেমন ঐচ্ছিক পেশি কোষগুলো অস্থির নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গের সঞ্চালন এবং চলন নিয়ন্ত্রণ করে। অনৈচ্ছিক পেশি কোষগুলো দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গাদির সঞ্চালনে অংশ নেয়।কার্ডিয়াক পেশি কোষগুলো একটা বিশেষ ছন্দে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে হৃদপিণ্ডের স্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে দেহের মধ্যে রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয়।।
মানব দেহের রক্তের কাজ পরিচালনায় প্রকার ভূমিকা :-
তিন প্রকারের রক্ত কণিকা (যেমন- কণিকা, শ্বেত রক্ত কণিকা এবং অণুচক্রিকা) তথা রক্ত কোষ প্রাণী দেহে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। ধমনী, শিরা এবং কৈশিক নালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রক্ত অভ্যন্তরীণ পরিবহনে অংশ নেয়।লোহিত রক্ত কণিকা কোষগুলো ফুসফুসে অক্সিজেন গ্রহণ করে হৃদযন্ত্র, ধমনী এবং কৈশিকনালির মাধ্যমে দেহের প্রতিটি কোষে অক্রিজেন সরবরাহ করে।
শ্বেত রক্ত কণিকা জীবাণু ধ্বংস করে আত্মরক্ষায় অংশ নেয়, রোগ প্রতিরোধ করে এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গ গঠনেও অংশ নেয়।
অনুচক্রিকা কোষগুলো রক্ততঞ্চন অথবা রক্ত জমাট বাঁধায় অংশ নেয়।
মানব দেহের ত্বকের কাজ পরিচালনায় বিভিন্ন প্রকার কোষের ভূমিকা :-
প্রাণী দেহের প্রতিটি অংশে ত্বর্কীয় টিস্যু অবস্থান করে। ত্বর্কীয় টিস্যুর প্রধান কাজ কোন অঙ্গ বা নালীর ভেতরের এবং বাইরের আবরণ তৈরি করা। ত্বর্কীয় টিস্যু রূপান্তরিত হয়ে রক্ষণ, ক্ষরণ, শোষণ, ব্যাপন এবং পরিবহন ইত্যাদি কাজে অংশ নেয়। এটি রূপান্তরিত হয়ে গ্রন্থি টিস্যু এবং জার্মিনাল টিস্যুতে পরিণত হয়ে বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ কাজ করে।আরও পড়ুন:- ট্যিসু কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.