ছত্রাক কাকে বলে :-
ফানজাই (Fungi) এর বাংলা হলো ছত্রাক। ক্লোরোফিলবিহীন অসবুজ সমাঙ্গদেহী উদ্ভিদগুলোই ছত্রাক নামে পরিচিত। ছত্রাক সম্পর্কিত বিদ্যাকে মাইকোলজি বলা হয়।বিখ্যাত ছত্রাকবিদ সি. জে. অ্যালেক্ট্রোপোলাস (১৯৬২) এর মতে নিউক্লিয়াসযুক্ত, স্পোর ধারণকারী, ক্লোরোফিলবিহীন জীবগোষ্ঠী, যারা অযৌন ও যৌন প্রক্রিয়ায় বংশবৃদ্ধি করে এবং যারা শাখান্বিত সূত্রাকৃতি, হেমিসেলুলোজ বা কাইটিন বা উভয় প্রকার পদার্থযুক্ত কোষ প্রাচীর দিয়ে পরিবেষ্টিত সেরূপ জীবগোষ্ঠীই ছত্রাক।
যথা- Saccharomyces Penicillium, Agaricus, Mucor, Puccinia Candida Botrytis, Helminthosporium, Areyria, Saprolegnia ইত্যাদি ছত্রাকের উদাহরণ।
আর্দ্রতা, উষ্ণতা, খাদ্যসমৃদ্ধ ছায়াযুক্ত বা অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশেই ছত্রাকের উপযুক্ত বাসস্থান। ছত্রাকের অঙ্গজদেহ লম্বা সুতার ন্যায় নালিকা বা হাইফি (Hyphae) দিয়ে গঠিত। হাইফিকে একবচনে হাইফা (Hypa) বলা হয়। এসব হাইফিগুলো প্রচুর শাখা প্রশাখাবিশিষ্ট হয়ে একত্রে অবস্থান করে একটি জটের সৃষ্টি করে। একে মাইসেলিয়াম বলা হয়। মাইসেলিয়ামকে বহুবচনে মাইসেলিয়া বলে।
ছত্রাকের বৈশিষ্ট্য :-
আরও পড়ুন :- লাইকেন কাকে বলে?ছত্রাকের বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ-
১. ছত্রাক অপুষ্পক উদ্ভিদ।
২. এরা ক্লোরোফিলবিহীন, অসবুজ এবং সালোকসংশ্লেষণে অক্ষম।
৩. এরা মৃতজীবী, পরজীবী বা মিথোজীবী হিসেবে বাস করে।
৫. এদের কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস ও বিভিন্ন অঙ্গাণু থাকে।
এদের কোষ প্রাচীর কাইটিন দিয়ে গঠিত।
৬. ছত্রাকের সঞ্চিত খাদ্য গ্লাইকোজেন বা চর্বি।
৭. এদের পরিবহনতন্ত্র বা ভাস্কুলার টিস্যু থাকে না।
৮. এদের জননাঙ্গ এককোষী।
৯. স্ত্রীজননাঙ্গে থাকা অবস্থায় জাইগোট বহুকোষী ভ্রূণে পরিণত হয় না।
১০. হ্যাপ্লয়েড স্পোর দিয়ে বংশবিস্তার হয় এবং
১১. জাইগোটে মায়োসিস ঘটে।
ছত্রাকের হাইফাগুলো আবার দু'রকমের। যথা-
কিছু কিছু ছত্রাকের হাইফাতে আড়াআড়ি প্রাচীর দেখা যায়। এদেরকে বহুবচনে সেপ্টা (Septa) এবং একবচনে সেপ্টাম (Septum) বলা হয়।
যে সব হাইফাতে সেপ্টা উপস্থিত থাকে তাদেরকে মনে করা হয় একাধিক কোষ দিয়ে গঠিত এবং যে সব ক্ষেত্রে হাইফাতে কোন সেপ্টা থাকে না তাদেরকে মনে করা হয় এককোষী।
আরও পড়ুন :- শৈবাল কাকে বলে?
১. ছত্রাক অপুষ্পক উদ্ভিদ।
২. এরা ক্লোরোফিলবিহীন, অসবুজ এবং সালোকসংশ্লেষণে অক্ষম।
৩. এরা মৃতজীবী, পরজীবী বা মিথোজীবী হিসেবে বাস করে।
৫. এদের কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস ও বিভিন্ন অঙ্গাণু থাকে।
এদের কোষ প্রাচীর কাইটিন দিয়ে গঠিত।
৬. ছত্রাকের সঞ্চিত খাদ্য গ্লাইকোজেন বা চর্বি।
৭. এদের পরিবহনতন্ত্র বা ভাস্কুলার টিস্যু থাকে না।
৮. এদের জননাঙ্গ এককোষী।
৯. স্ত্রীজননাঙ্গে থাকা অবস্থায় জাইগোট বহুকোষী ভ্রূণে পরিণত হয় না।
১০. হ্যাপ্লয়েড স্পোর দিয়ে বংশবিস্তার হয় এবং
১১. জাইগোটে মায়োসিস ঘটে।
ছত্রাকের গঠন :-
অধিকাংশ ছত্রাকই বহুকোষী। ছত্রাকের অঙ্গজাদেহ সূত্রাকার, শাখান্বিত এবং আণুবীক্ষণিক। এদের সূত্রাকার শাখাকে একবচনে হাইফা এবং বহুবচনে হাইফি বলা হয়। এগুলো সরু, স্বচ্ছ এবং নলাকার। হাইফাগুলো প্রচুর শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট হয়ে পরস্পরের সাথে একত্রে অবস্থান করে একটি জটের সৃষ্টি করে। একে একবচনে মাইসেলিয়াম এবং বহুবচনে মাইসেলিয়া বলা হয়।ছত্রাকের হাইফাগুলো আবার দু'রকমের। যথা-
কিছু কিছু ছত্রাকের হাইফাতে আড়াআড়ি প্রাচীর দেখা যায়। এদেরকে বহুবচনে সেপ্টা (Septa) এবং একবচনে সেপ্টাম (Septum) বলা হয়।
যে সব হাইফাতে সেপ্টা উপস্থিত থাকে তাদেরকে মনে করা হয় একাধিক কোষ দিয়ে গঠিত এবং যে সব ক্ষেত্রে হাইফাতে কোন সেপ্টা থাকে না তাদেরকে মনে করা হয় এককোষী।
আরও পড়ুন :- শৈবাল কাকে বলে?
যেহেতু সেপ্টাবিহীন ছত্রাকের দেহের গঠন কম জটিল সেহেতু একে নিম্নস্তরের ছত্রাক (Lower Fungi) বলা হয়।
অপরদিকে সেপ্টাযুক্ত হাইফাবিশিষ্ট ছত্রাককে উচ্চস্তরের ছত্রাক (Higher Fungi) বলা হয়।
ছত্রাকের কোষে এক বা একাধিক নিউক্লিয়াস থাকে। কোষে একাধিক নিউক্লিয়াস থাকলে তাকে সিনোসাইট (Coenocyte) বলা হয়। এ ধরনের ছত্রাককে সিনোসাইটিক ছত্রাক বলা হয়।
পরজীবী ছত্রাক পোষকদেহ থেকে যে হাইফা দ্বারা খাদ্য শোষণ করে তাকে হস্টোরিয়াম (Hostorium) বলা হয়।
উচ্চশ্রেণির কিছু ছত্রাকে মাইসেলিয়াম শক্ত রশির ন্যায় গঠন করে, একে রাইজোম (Rhizomorph) বলা হয়।
অনেক সময় মাইসেলিয়ামে পাশাপশি দুটি কোষের মধ্যে সংযোগ সাধনের উদ্দেশ্যে এদের প্রস্থ প্রাচীরের কাছে সেতুর ন্যায় একটি হাইফাল সংযোগ নল উৎপন্ন হয়। এ সংযোগ নলকে ক্যাম্প যোজক বলা হয়।
কিছু উদ্ভিদের সরু মূল বা মূলরোমের চারদিকে বা অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট ছত্রাক জালের ন্যায় আবৃত করে রাখে। এ ধরনের ছত্রাককে মাইকোরাইজাল (Mycorrhizal) ছত্রাক বলা হয়।
ছত্রাকের গুরুত্ব :-
মানব জীবনে ছত্রাকের গুরুত্ব অপরিসীম। ছত্রাক আমাদের (ক) উপকার এবং (খ) অপকার দুটোই করে থাকে।ক) ছত্রাকের উপকারিতা :-
ছত্রাক বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের উপকার করে। যেমন১। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি :
বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক এককভাবে ও ব্যাকটেরিয়ার সাথে যৌথভাবে মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষের দ্রুত পঁচন ঘটায়। বিভিন্ন ধরনের জৈব বস্তুর পচনের ফলে যে সকল পদার্থ তৈরি হয় সেগুলো মাটিতে মিশে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। ছত্রাক মাটিতে বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক বস্তুর ভারসাম্য রক্ষা করে এবং জৈব বস্তুর পঁচনের ফলে সৃষ্ট দুর্গন্ধ থেকে পরিবেশকে রক্ষা করে। এজন্য মৃতজীবী ছত্রাককে ঝাড়ুদার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২। শিল্পজাত দ্রব্য উৎপাদন :-
i. অ্যালকোহল প্রস্তুতে : ঈষ্ট কোষে জাইমেজ এনজাইম বিদ্যমান। ঈষ্ট কোষ হতে নিঃসৃত জাইমেজ এনজাইম গাঁজানো প্রক্রিয়ায় শর্করা থেকে অ্যালকোহল প্রস্তুতে ব্যবহৃত হয়। এ প্রক্রিয়ায় ইথাইল অ্যালকোহল, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও শক্তি নির্গত হয়। ওষুধ শিল্প ও বিভিন্ন বিজ্ঞান গবেষণাগারে অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয়।
ii. বিয়ার প্রস্তুতে : Saccharomyces cerevisiae প্রয়োগ করে বিয়ার প্রস্তুত করা হয়। আঙ্গুরের রস থেকে ওয়াইন এবং আপেলের রস থেকে সিডার প্রস্তুতেও ঈষ্ট ব্যবহৃত হয়। iii. রুটি শিল্পে : পাউরুটি তৈরিতে ঈষ্ট ব্যবহৃত হয়। ময়দার সাথে ঈষ্ট পাউডার মিশ্রণের ফলে, ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় ঈষ্ট কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন করে। কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস বুটি ফুলাতে সাহায্য করে।
iv. পনির উৎপাদনে- Penicillium camemberti এবং P. roqueforti এ দুটি প্রজাতি পনির উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
v. জৈব অ্যাসিড তৈরিতে : Aspergillus এবং Penicillium এর বিভিন্ন প্রজাতি কয়েক প্রকার জৈব অ্যাসিড, যেমন-
সাইট্রিক অ্যাসিড, ফিউমারিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন:- ভাইরাস কি?
৩. অ্যান্টিবায়োটিক ও ওষুধ শিল্পে :
Penicillium griseofulvum নামক প্রজাতি থেকে গ্রাইসিওফুলভিন নামক ওষুধ প্রস্তুত হয়। এ ওষুধ মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর দাদ ও কয়েক ধরনের ছত্রাকজনিত রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।
আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৯২৯) অ্যান্টিবায়োটিক 'পেনিসিলিন' (Penicillin)-এর উৎস Penicillium notatum থেকে প্রথমে পেনিসিলিন তৈরি করেন। এর উৎপাদন কম হওয়ায় পরবর্তীতে P. chrysogenum হতে উৎকৃষ্ট মানের এবং অধিক পরিমাণে পেনিসিলিন বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা হয়।
৪. খাদ্য হিসেবে ছত্রাক :
৩. অ্যান্টিবায়োটিক ও ওষুধ শিল্পে :
Penicillium griseofulvum নামক প্রজাতি থেকে গ্রাইসিওফুলভিন নামক ওষুধ প্রস্তুত হয়। এ ওষুধ মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর দাদ ও কয়েক ধরনের ছত্রাকজনিত রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।
আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৯২৯) অ্যান্টিবায়োটিক 'পেনিসিলিন' (Penicillin)-এর উৎস Penicillium notatum থেকে প্রথমে পেনিসিলিন তৈরি করেন। এর উৎপাদন কম হওয়ায় পরবর্তীতে P. chrysogenum হতে উৎকৃষ্ট মানের এবং অধিক পরিমাণে পেনিসিলিন বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা হয়।
৪. খাদ্য হিসেবে ছত্রাক :
ঈষ্টে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ( যেমন- ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি, ও ভিটামিন-সি) থাকায় ঈষ্ট পুষ্টিকর ও মূল্যবান খাদ্যরূপে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও Agaricus সহ আরও বেশ কিছু ছত্রাককে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৫. অনিষ্টকারী কীটপতঙ্গের জীবজ নিয়ন্ত্রণে :
মাটিতে বসবাসকারী রোগ সৃষ্টির ছত্রাকসমূহকে দমন করতে বা জীবজ নিয়ন্ত্রণে কতিপয় ছত্রাক ব্যবহার করা হয়।
১. খাদ্যদ্রব্য বিনষ্টকরণে :
রান্না করা খাদ্যসামগ্রী বিশেষ করে মাছ, মাংস, নানা ধরনের সবজি, মুখ রোচক খাদ্য, জ্যাম-জেলি আচার ও চাটনি ইত্যাদি নষ্ট করে। আপেল, কমলা, আঙ্গুর, নাশপতি ইত্যাদি ফল Penicillium দিয়ে আক্রান্ত হয়ে দ্রুত পঁচে যায়। সব প্রকার লেবুর পঁচনের জন্য P digitatum এবং P. italicum পায় ।
২. নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিনষ্টকরণে :
পরিধেয় বস্ত্র যেমন চামড়ার জুতা, চামড়ার ব্যাগ, বই, কাগজ, চশমা, ক্যামেরা, লেন্স, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ছত্রাক দ্বারা নষ্ট হয়। বই, কাগজ, কাপড়, চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্যে Penicillium. জন্মানোর ফলে দাগ পড়ে ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়।
৩. ফসল এবং শস্য জাতীয় উদ্ভিদের রোগ সৃষ্টি :
ছত্রাক ফসলী উদ্ভিদের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে। ফলে ফসলের ফলন অনেকখানি কমে।
৫. অনিষ্টকারী কীটপতঙ্গের জীবজ নিয়ন্ত্রণে :
মাটিতে বসবাসকারী রোগ সৃষ্টির ছত্রাকসমূহকে দমন করতে বা জীবজ নিয়ন্ত্রণে কতিপয় ছত্রাক ব্যবহার করা হয়।
খ) ছত্রাকের অপকারিতা :-
ছত্রাক বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অপকার করে। যেমন১. খাদ্যদ্রব্য বিনষ্টকরণে :
রান্না করা খাদ্যসামগ্রী বিশেষ করে মাছ, মাংস, নানা ধরনের সবজি, মুখ রোচক খাদ্য, জ্যাম-জেলি আচার ও চাটনি ইত্যাদি নষ্ট করে। আপেল, কমলা, আঙ্গুর, নাশপতি ইত্যাদি ফল Penicillium দিয়ে আক্রান্ত হয়ে দ্রুত পঁচে যায়। সব প্রকার লেবুর পঁচনের জন্য P digitatum এবং P. italicum পায় ।
২. নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিনষ্টকরণে :
পরিধেয় বস্ত্র যেমন চামড়ার জুতা, চামড়ার ব্যাগ, বই, কাগজ, চশমা, ক্যামেরা, লেন্স, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ছত্রাক দ্বারা নষ্ট হয়। বই, কাগজ, কাপড়, চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্যে Penicillium. জন্মানোর ফলে দাগ পড়ে ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়।
৩. ফসল এবং শস্য জাতীয় উদ্ভিদের রোগ সৃষ্টি :
ছত্রাক ফসলী উদ্ভিদের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে। ফলে ফসলের ফলন অনেকখানি কমে।
আরও পড়ুন:- লিপিড কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.