শ্রেণিবদ্ধকরণ কাকে বলে? শ্রেণিবদ্ধকরণ কত প্রকার ও কি? শ্রেণিবদ্ধকরণের প্রয়োজনীয়তা?

শ্রেণিবদ্ধকরণ কাকে বলে :-

তথ্যের সংজ্ঞা থেকে আমরা জেনেছি, কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যর উপর ভিত্তি করে তথা সংগ্রহ করা হয়। অতঃপর সেই বৈশিষ্ট্য আমরা বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবহার করি। অর্থাৎ সমগ্রকের প্রতিটি একক যেমন, পদবিশেষ, বস্তুর গুণ ইত্যাদি হল সমগ্রকের বৈশিষ্ট্য। বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তথ্য সমূহকে সাজানোর পদ্ধতিকে বলা হয় শ্রেণিবদ্ধকরণ।

অর্থাৎ শ্রেণিবন্ধকরণের সংজ্ঞা হল: কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে তথ্য সারির এককগুলোকে কতকগুলো শ্রেণি বা দলে সাজিয়ে উপস্থাপন করার পদ্ধতি বা কৌশলকে বলা হয় শ্রেণিবদ্ধকরণ।

শ্রেণিবদ্ধকরণ কোন অনুসন্ধানের প্রকৃতি বা উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে প্রস্তুত করা হয়। শ্রেণিবদ্ধকরণ সম্পর্কে পরিসংখ্যানবিদ connor বলেছেন, শ্রেণিবন্ধকরণ বলতে প্রকৃত অর্থে বা ভাবগত অর্থে সাদৃশ্য ও যোগ্যতা অনুযায়ী উপাত্তসমূহের কতকগুলো দলে বা শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা।

অর্থাৎ তথ্যসমূহকে সংগ্রহ করার পর একই ধরণের তথ্যকে এক সাথে নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করে শ্রেণিবন্ধকরণ করা হয়।

আরও পড়ুন :- বিস্তার পরিমাপ কাকে বলে?

শ্রেণিবদ্ধকরণ কত প্রকার ও কি কি :-

পরিসংখ্যানিক তথ্যসমূহের বৈশিষ্ট্য বা লক্ষণের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকার শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয়। সাধারণত চারটা ভিত্তির উপর নির্ভর করে শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয়।

১. স্থানভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ (Classification on the basis of area)

২. সময়ভিত্তিক শ্রেণিবন্ধকরণ (Classification on the basis of time)

৩. গুণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ (Qualitative [Classification)

৪. পরিমাণগত শ্রেণিবন্ধক (Quantitative [Classification)
শ্রেণিবদ্ধকরণ কাকে বলে

স্থানভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ কাকে বলে :-

বিভিন্ন এলাকা বা অবস্থানের উপর ভিত্তি করে প্রাপ্ত তথ্য সমূহকে যে শ্রেণিতে বিভক্ত করে সাজানো হয়। তাকে স্থানভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ বলে।

স্থানভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণকে ভৌগোলিক অবস্থান ভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণও বলা হয়ে থাকে। যেমন, বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত ধান বা পাট ইত্যাদির তথ্যসমূহ।

সময়ভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ কাকে বলে :-

বিভিন্ন সময়ের ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্যসমূহকে শ্রেণিবদ্ধা করার পদ্ধতি বা কৌশলকে সময় ভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ বলে তথ্যকে সময়ের উপর নির্ভর করে অর্থাৎ দিন, মাস, বছর ইত্যাদি সময় অনুযায়ী ভাগ করে শ্রেণিবন্ধকরণ করা হয়।

আরও পড়ুন :- পরিঘাত কাকে বলে?

গুণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ কাকে বলে :-

তথ্য সমগ্রকের গুণ বা প্রকৃতিগত পার্থক্য অনুসারে যে শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয় তাকে গুণগত শ্রেণিবন্ধকরণ বলা হয়।

গুণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ দু' ধরনের:

১. সরল গুণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ

২. জটিল গুণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ

সরল গুণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ :

কোন সময়কের তথ্যসমূহকে গুণগত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী দু'টি শ্রেণি বা দলে ভাগ করে যে শ্রেণি পাওয়া যায় তাকে সরল গুণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ বলে।

জটিল গুনগত শ্রেণিবদ্ধকরণ :

কোন সমগ্রকের তথ্যসমূহকে একাধিক গুণের ভিত্তিতে বিভক্ত করে যে শ্রেণিবিন্যাস পাওয়া যায় তাকে জটিল গুণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ বলা হয়।

যেমন: কোন কোম্পানীর শ্রমিকসমূহকে শুধুমাত্র দক্ষতার উপর নির্ভর না করে শিক্ষা বা একাধিক গুণের উপর নির্ভর শ্রেণিতে বিভক্ত করে যে তথ্য পাওয়া যায় তাকে জটিল গুনগত শ্রেণিবদ্ধকরণ বলা হয়।

আরও পড়ুন :- উদ্ভিদ শ্রেনীবিন্যাস কি?

পরিমাণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ কাকে বলে :-

কোন অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ যখন কোন পরিমাণগত বৈশিষ্ট্য (যেটাকে পরিমাপ করা হয় যেমন, উচ্চতা, ওজন, আয়, বায়, উৎপাদন ইত্যাদি) এর উপর ভিত্তি করে কতগুলো শ্রেণিতে ভাগ করা হয় তখন তাকে পরিমাণগত শ্রেণিবদ্ধকরণ বলা হয়।

শ্রেণিবদ্ধকরণের প্রয়োজনীয়তা :-

শ্রেণিবন্ধকরণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করা হল:

১. শ্রেণিবদ্ধকরণ অসংখ্য বিক্ষিপ্ত ও এলোমেলো তথ্যকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করে।

২. একই বৈশিষ্ট্যের তথ্যগুলোকে আলাদাভাবে সহজ আকারে শ্রেণি বা দলে প্রকাশ করে।

৩. তথ্যবিশ্বের বিভিন্ন শ্রেণির প্রাধান্য সম্পর্কে ধারণা দেয়।

৪. দু' বা ততোধিক তথ্যসমূহ শ্রেণিবদ্ধকরণে তুলনা করতে সাহায্য করে।

৫. তথ্যর মাধ্যমে তথাবিশ্বের ধারণা দিতে শ্রেণিবদ্ধকরণ সাহায্যে করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ