টর্নেডো কাকে বলে :-
টর্নেডো মূলত অতি দ্রুত আবর্তনশীল ক্ষুদ্র আকারের অথচ প্রলয়ঙ্কারী বজ্রঝড়। এটি চোঙ আকৃতির হয়ে থাকে এবং এই বজ্রঝড়ের মধ্যভাগে বায়ু অতিদ্রুত বেগে উপরে উঠতে থাকে। এই চোঙ যদি ভূমি স্পর্শ করে তখন ধ্বংসলীলা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। তবে চোঙ ভূমি স্পর্শ না করলে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয় না।টর্নেডোর ব্যাস ভূ-পৃষ্ঠের উপরে ১০০ থেকে ৫০০ গজ পর্যন্ত হয়। টর্নেডোর ভিতরে ও বাইরের বায়ু চাপের গড় পার্থক্য প্রায় ২ ইঞ্চি। তবে কখনো কখনো তা ৫ ইঞ্চি হয়ে যায়। টর্নেডোর চোঙ মাটি স্পর্শ করলে ব্যাপক শব্দে সবকিছু ধূলিসাৎ হয়ে যায় এবং কালো মেঘে ছেঁয়ে যায়।
টর্নেডোর উৎপত্তি :-
সাধারণত উত্তর গোলার্ধের কোনো স্থানীয় স্থল নিম্নচাপের দক্ষিণ-পূর্ব অংশেই টর্নেডোর উৎপত্তির হয়।টর্নেডো শীতল বায়ুপ্রাচীরের সাথে সমান্তরালভাবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। আবার টর্নেডো সংঘটিত হওয়ার সময় ঊর্ধ্ব বায়ুস্থ পশ্চিমা জেট প্রবাহের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়।
আরও পড়ুন :- মেঘ কাকে বলে?
টর্নেডোর বৈশিষ্ট্য :-
টর্নেডোর বৈশিষ্ট্যসমূহ নিয়ে আলোচিত হলো১. টর্নেডোতে প্রথমত আকস্মিকভাবে বায়ু চাপের হ্রাস ঘটে বলেই বড় বড় ইমারতে ফাটল ধরে।
২. বায়ুর আবর্তন হয় অত্যন্ত দ্রুতবেগের ফলে বায়ুপ্রবাহের সম্মুখে প্রতি বর্গফুটে বায়ুচাপের পরিমাণ হয় ১৬০ থেকে ১০০০ পাউন্ড।
৩. টর্নেডোর উত্তোলন ক্ষমতা অনেক ভয়ঙ্কর। ভয়ঙ্কর বেগে টর্নেডোর বায়ু উপরের দিকে উত্থিত হয় এবং পথে যা পায় তাই তুলে নেয়।
৪. ভূমিতে টর্নেডোর রৈখিক গতিবেগ বিভিন্ন টর্নেডোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের হয়। যেমন- উত্তর গোলার্ধে টর্নেডো দক্ষিণ পশ্চিম দিক থেকে আসে।
৫. টর্নেডোর গতিপথ অর্ধবৃত্তাকার হতে পারে এবং উত্তর গোলার্ধে টর্নেডো ডানদিকে আবর্তিত হয়।
৬. টর্নেডোর গতিবেগ ঘণ্টায় ৫ হতে ৬৫ মাইল হয়ে থাকে। তবে কখনো কখনো গড় গতিবেগ ঘন্টায় ৩৫ থেকে ৪৫
মাইল হয়।
৭. পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি টর্নেডোপ্রবণ এলাকা উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া।
৮. সমুদ্রের উপর টর্নেডো সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের নিকটস্থ সমুদ্রে, মেক্সিকো উপসাগরে এবং চীন ও জাপানের উপকূলের নিকটস্থ সমুদ্রে গ্রীষ্মকালে টর্নেডোর প্রকোপ দেখা যায় ।
৯. টর্নেডো ব্যাপক জানমাল ও পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে।
আরও পড়ুন :- সুনামি কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.