কুয়াশা কাকে বলে :-
জলীয়বাষ্প যখন বায়ুস্তরের ভাসমান ধূলিকণাকে আশ্রয় করে ঘনীভূত হয়ে ধোয়ার আকারে ভাসতে থাকে তখন তাকে কুয়াশা বলে।কুয়াশার শ্রেণিবিভাগ :-
উৎপত্তির বিভিন্নতার উপর ভিত্তি করে কুয়াশাকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা১. বিকিরণজনিত কুয়াশা :
শীতল ভূ-পৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে ভূমি সংলগ্ন আর্দ্র বায়ুস্তর যখন শীতল হয়ে যায় তখন বিকিরণজনিত কুয়াশার সৃষ্টি হয়।
বায়ুপ্রবাহ যদি ঘন্টায় ৬-১০ মাইলের বেশি হয় তখন এই ধরনের কুয়াশা শিল্পনগরীতে বেশি দেখা যায়। কারণ ঐ সব এলাকায় বায়ুতে যে ধোঁয়া থাকে তা জলাকর্ষী কণা হিসেবে কাজ করে।
২. আনুভূমিক বায়ুসঞ্চালন ও বিকিরনজনিত কুয়াশা :
উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু শীতল ভূ-পৃষ্ঠের উপর তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে এই ধরনের কুয়াশার সৃষ্টি হয়। সমুদ্র উপকূল এবং বৃহৎ হ্রদে এই ধরনের কুয়াশা সৃষ্টি হয়। মেরু অঞ্চলে অনুসন্ধানকারীরা এই ধরনের বাষ্পীয় কুয়াশা দেখে উন্মুক্ত জলভাগ এড়িয়ে চলতে পারে।
আরও পড়ুন:- চাপবলয় কাকে বলে?
৩. বায়ুপ্রাচীরজনিত কুয়াশা :
ভিন্ন তাপ ও আর্দ্রতা বিশিষ্ট দুইটি পৃথক বৈশিষ্ট্যের বায়ুপুঞ্জ মিলিত হলে তাদের মধ্যবর্তী স্থানের ঢালু সীমান্তকে বলা হয়। বায়ুপ্রাচীর দুইটি বায়ুপুঞ্জের মধ্যে উষ্ণ বায়ুপুঞ্জ উপরে উঠে যায় এবং শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বৃষ্টির ফলে নিচে অবস্থান করা শীতল বায়ুপুঞ্জ আরও জলীয়বাষ্প সংযোজন করে এবং এভাবে বায়ুপুঞ্জ যখন শীতল হয় তখন বায়ুপ্রাচীরজনিত কুয়াশার সৃষ্টি হয়।
কুয়াশার বৈশিষ্ট্য :-
বায়ুর তাপমাত্রা শিশিরাংকের নিচে নেমে গেলে কুয়াশা সৃষ্টি হয়। বায়ুমণ্ডলের বিকিরণ, তাপ পরিবহন এবং শীতল ও উষ্ণ বায়ুর সংমিশ্রণের ফলে কুয়াশা সৃষ্টি হয়। কুয়াশা মানবজীবনে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় প্রকার প্রভাব বিস্তার করে । যেমন১. সামুদ্রিক জাহাজ, উড়োজাহাজ, সড়কপথে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়।
২. কুয়াশার জলকণা ভূ-পৃষ্ঠের বিকীর্ণ তাপকে শোষণ করে বায়ুকে উষ্ণ রাখে। তবে শীতপ্রধান দেশে কুয়াশা জন্য শস্যের ক্ষতি হয়।
৩. কুয়াশা ঘন হয়ে ইলশেগুড়ির মত জলকণা বর্ষণ হলে তাকে বলা হয় কুজঝটিকা।
আরও পড়ুন :- জলবায়ু কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.