জীববৈচিত্র্য কাকে বলে :-
পৃথিবী পৃষ্ঠের জল ও স্থলভাগে বসবাসকারী সকল প্রকার জীবের মধ্যে বিরাজমান জীনগত, প্রজাতিগত ও বাস্তুতান্ত্রিক বিভিন্নতা ও সংখ্যা প্রাচুর্যতা রয়েছে এবং কালের ক্রমধারায় পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেদের বৈচিত্র্যময় অবস্থার পরিবর্তন ও বিকাশ ঘটানোকে বলা হয় জীববৈচিত্র্য।ভৌগোলিক বৈচিত্র্যময় পরিবেশে বিভিন্ন প্রজাতিসমূহের মধ্যে আন্তঃগোষ্ঠিয় বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। প্রাকৃতিক পরিবেশে মানবসৃষ্ঠ কারণে নানা রকম পরিবর্তনের সাথে সাথে তাই জীবজগত ও পরিবেশের বিকাশ, বসবাস, বংশবিস্তারের মধ্যেও ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
পৃথিবীতে সময়ের সাথে সাথে হাজার হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণির আবির্ভাব হয়েছে। তবে জীবের প্রয়োজনে অন্য জীবের সৃষ্টি ও বিলুপ্তির প্রক্রিয়াও প্রচলিত রয়েছে।
জীববৈচিত্র্যের প্রকারভেদ :-
জীববৈচিত্র্যকে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা১. বাস্তুতান্ত্রিক জীববৈচিত্র্য :
কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিরাজমান জীবের ভৌত ও পারিবেশগত বিভিন্নতাকে বাস্তুতান্ত্রিক জীববৈচিত্র্য বলে।
পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশ বিরাজমান। প্রত্যেকটি বাস্তুতন্ত্রে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যমন্ডিত বৈচিত্র্যময় জীবজগতের সৃষ্টি হয়।
২. প্রজাতিগত জীববৈচিত্র্য :
ভিন্ন প্রজাতির জীবের মধ্যে যে বৈচিত্র্যতা বিদ্যমান তাকে প্রজাতিগত জীববৈচিত্র্য বলা হয় ।
এরূপ বৈচিত্র্য কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় বিরাজমান মোট প্রজাতির সংখ্যা দ্বারা পরিমাপিত হয়।
৩. জীনগত জীববৈচিত্র্য :
উদ্ভিদ ও প্রাণির প্রতিটি সদস্যই তাদের জীনগত বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে পরস্পর আলাদা। জীবগোষ্ঠির এই জীনগত বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্র্যতাই জীনগত জীববৈচিত্র্য।
জীনগত ভিন্নতার কারণেই আমেরিকান শ্বেতাঙ্গ ও আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের গায়ের রং, চুলের প্রকৃতি, নাক ও ঠোঁটের আকৃতি, উচ্চতা ইত্যাদির অনেক পার্থক্য বিদ্যমান।
আরও পড়ুন :- খাদক কাকে বলে?
জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব :-
পৃথিবীর জীবকূল এবং অজীব উপাদান পারস্পরিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে জীব প্রবাহকে অক্ষুণ্ণ রাখে। সুতরাং জীবকূলের মধ্যে বৈচিত্র্যের আধিক্য অজীব উপাদানের সাথে আদান-প্রদানের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে জীবজগতের শক্তির প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। এতে মানুষসহ সকল জীবই বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পায়।এছাড়া মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিভিন্ন প্রজাতির জীবকে ব্যবহার করে উপকৃত হয়। এভাবে বহুমুখী দিক থেকে জীবজগতের প্রতিটি জীবেরই রয়েছে স্বকীয় ভূমিকা। সুতরাং বলা যায় যে, জীববৈচিত্র্যের বাস্তুতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।
জীববৈচিত্র্যের অবনতির কারণ :-
জীববৈচিত্র্যের অবনতির অর্থ হলো জীবগত বৈচিত্র্যের অবলুপ্তি এবং পরিবেশগত পদ্ধতিসমূহের ক্ষতিসাধন, যা জীবগোষ্ঠির পুনরুৎপাদনকে প্রতিহত করে। ফলে প্রাথমিক অবস্থায় আঞ্চলিক প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে এবং চরম পর্যায়ে সমগ্র প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে। জীববৈচিত্র্য অবনতির কারণসমূহকে দুইভাবে ভাগ করা যায়। যথাক. প্রাকৃতিক কারণ :
জীববৈচিত্র্য অবনতির প্রাকৃতিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, দাবানল প্রভৃতি।
আরও পড়ুন :- বায়োম কাকে বলে?
খ. মানব সৃষ্ট কারণ :
মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ড এবং এসব কর্মকান্ডের প্রতিক্রিয়া জীববৈচিত্র্যের অবনতি ঘটায়। যেমন দূষণ, এসিড বৃষ্টি, খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান, জৈবিক সম্পদের অতিমাত্রায় ব্যবহার, হাইব্রিড প্রজাতি, জনসচেতনতার অভাব প্রভৃতি।
ক. স্ব-স্থানে সংরক্ষণ এবং
খ. অন্যস্থানে সংরক্ষণ।
এগুলো সম্পর্কে নীচে সংক্ষিপ্ত ভাবে আলোচলা করা হলো
ক. স্ব-স্থানে সংরক্ষণ (In-Situ Conservation) :
মূল বাসস্থানে অর্থাৎ নিজের স্বাভাবিক পরিবেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে স্ব-স্থানে সংরক্ষণ বলে।
যেমন- সুন্দরবনের সুন্দরী গাছকে সুন্দরবনের সিক্ত, কর্দমাক্ত ও লবণাক্ত পরিবেশে সংরক্ষণ করাই - স্থানে সংরক্ষণ।
খ. অন্যস্থানে সংরক্ষণ (Ex-Situ Conservation) :
জীববৈচিত্রোর উপাদানসমূহকে তাদের মূল বাসস্থান বা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশের বাইরে বাঁচিয়ে রাখাই হলো অন্যস্থানে সংরক্ষণ।
যেমন- সুন্দরবনের সুন্দরী গাছকে ঢাকার বোটানিক্যাল গার্ডেনে লাগিয়ে সংরক্ষণ করাই হলো অন্যস্থানে সংরক্ষণ।
খ. মানব সৃষ্ট কারণ :
মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ড এবং এসব কর্মকান্ডের প্রতিক্রিয়া জীববৈচিত্র্যের অবনতি ঘটায়। যেমন দূষণ, এসিড বৃষ্টি, খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান, জৈবিক সম্পদের অতিমাত্রায় ব্যবহার, হাইব্রিড প্রজাতি, জনসচেতনতার অভাব প্রভৃতি।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ :-
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের দুইটি পদ্ধতি রয়েছে। যথাক. স্ব-স্থানে সংরক্ষণ এবং
খ. অন্যস্থানে সংরক্ষণ।
এগুলো সম্পর্কে নীচে সংক্ষিপ্ত ভাবে আলোচলা করা হলো
ক. স্ব-স্থানে সংরক্ষণ (In-Situ Conservation) :
মূল বাসস্থানে অর্থাৎ নিজের স্বাভাবিক পরিবেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে স্ব-স্থানে সংরক্ষণ বলে।
যেমন- সুন্দরবনের সুন্দরী গাছকে সুন্দরবনের সিক্ত, কর্দমাক্ত ও লবণাক্ত পরিবেশে সংরক্ষণ করাই - স্থানে সংরক্ষণ।
খ. অন্যস্থানে সংরক্ষণ (Ex-Situ Conservation) :
জীববৈচিত্রোর উপাদানসমূহকে তাদের মূল বাসস্থান বা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশের বাইরে বাঁচিয়ে রাখাই হলো অন্যস্থানে সংরক্ষণ।
যেমন- সুন্দরবনের সুন্দরী গাছকে ঢাকার বোটানিক্যাল গার্ডেনে লাগিয়ে সংরক্ষণ করাই হলো অন্যস্থানে সংরক্ষণ।
আরও পড়ুন :- বাস্তুসংস্থান কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.