জৈবিক আবহবিকার কাকে বলে :-
যে প্রক্রিয়ায় মানুষ ও জীবজন্তু শিলা ও খনিজের বিচূর্ণীভবন ঘটায় তাকে জৈবিক আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন বলে।যেমন বৃক্ষের শিকড় মাটিতে প্রবেশের ফলে মাটি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়।
নিম্নে জৈবিক বিচূর্ণীভবন প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হলো:
১. উদ্ভিদের কার্য (Work of Plant) :
শিলার বিচূর্ণন কাজে গাছের শিকড় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। শিলার সংযোগ স্থল বা ফাটল বরাবর গাছের শিকড়ের আয়তন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফাটলে চাপ বাড়তে থাকে। ফলে এক সময়ে শিলা ফাটল বরাবর ভেঙ্গে যায়। এভাবে উদ্ভিদ প্রতিনিয়ত শিলাকে বিশ্লিষ্ট এবং চূর্ণ-বিচূর্ণ করছে।
তাছাড়া মসৃ শৈবাল, লাইকেন প্রভৃতি নানা প্রকার উদ্ভিদের দ্বারা শিলার উপরিভাগে পানি আবদ্ধ হয়ে যায় এবং উদ্ভিদের দেহ পচে হিউমাস (Humas) তৈরি করে। হিউমাস বৃষ্টির পানির সংস্পর্শে আসলে জৈব এসিড উৎপন্ন করে যা শিলার সাথে বিক্রিয়ায় শিলাকে ক্ষয় করে। এছাড়া জীবাণু ও কীটপতঙ্গের দেহ নিঃসৃত রস দ্বারা জৈবিক বিচূর্ণীভবন ঘটে।
২. জীবজন্তুর কার্য (Works of Animal) :
জীবজন্তু সর্বদা শিলাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করছে। বিভিন্ন প্রকার জীবজন্তুর মধ্যে। কেঁচো, ইঁদুর, ছুঁচো, পিঁপড়া প্রভৃতি সর্বদা মাটি খুঁটে উলট-পালট করে। এছাড়া উইপোকা, ইঁদুর, সজারুগর্ত করে মাটির অভ্যন্তর হতে পৃথিবীর উপরে মাটি তোলে। এভাবে জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গের দ্বারাও ভূ-ত্বক চূর্ণ-বিচূর্ণ হচ্ছে। ভূ-ত্বকের এরূপ পরিবর্তন সূক্ষ্ম বলে এই বিচূর্ণীভবন সহজে দৃষ্টিগোচর হয় না।
৩. মানুষের কার্য (Works of Man) :
মানুষ বিভিন্ন উপায়ে ভূ-ত্বকের পরিবর্তন সাধন করছে। যেমন রাস্তাঘাট, খাল, গৃহ, শহর, বন্দর প্রভৃতি নির্মাণ করার জন্য মানুষ সর্বদা ভূ-ত্বককে খন্ড-বিখন্ড করছে। এভাবে মানুষও জৈবিক বিচূর্ণীভবনে সহায়তা করে থাকে।
আরও পড়ুন :- ক্ষয়ীভবন কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.