ভূ-আন্দোলন কাকে বলে :-
ভূ-অভ্যন্তরস্থ প্রচন্ড তাপ ও চাপের ফলে ভূ-অভ্যন্তরে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়। এই পরিচলন স্রোতের ফলে ভূ-অভ্যন্তরে প্রবল শক্তির উদ্ভব হয়। পৃথিবীর অভ্যন্তরের এই শক্তি ভূ-পৃষ্ঠে বা ভূ-ত্বকে এবং সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপে আঞ্চলিক বা মহাদেশীয় ভূ-গঠন কাঠামোর যে পরিবর্তন ঘটায় তাকে ভূ-আন্দোলন বলে।ভূ-আন্দোলনের ফলে গঠিত ভূমিরূপের উপর ভিত্তি করে ভূ-আন্দোলনকে প্রধান দুইটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। যথা
১. মহীভাবক আন্দোলন এবং
২ গিরিজনি আন্দোলন।
এগুলো সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হলো -
১. মহীভাবক আন্দোলন (Epeirogenic Movement) :
মহীভাবক আন্দোলন মহাদেশসমূহের ভূ-পৃষ্ঠে লম্বভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করে মালভূমি, চ্যুতি, ছাতি ভূক্ত তট, গ্রস্ত উপত্যকা, স্তূপ পর্বত প্রভৃতি ভূমিরূপ তৈরি করে।
যেমন- পূর্ব আফ্রিকা ও জর্ডানের স্রস্ত উপত্যকাসমূহ, রাইন নদীর প্রস্ত উপত্যকা। এছাড়াও উত্তর আমেরিকার হাডসন উপসাগরের দ্বীপসমূহ মহাভাবক আন্দোলনের ফলে ভূ-ভাগ নিমজ্জিত হয়ে গঠিত হয়েছে।
মহীভাবক আন্দোলন মহাদেশসমূহের ভূ-পৃষ্ঠে লম্বভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করে মালভূমি, চ্যুতি, ছাতি ভূক্ত তট, গ্রস্ত উপত্যকা, স্তূপ পর্বত প্রভৃতি ভূমিরূপ তৈরি করে।
যেমন- পূর্ব আফ্রিকা ও জর্ডানের স্রস্ত উপত্যকাসমূহ, রাইন নদীর প্রস্ত উপত্যকা। এছাড়াও উত্তর আমেরিকার হাডসন উপসাগরের দ্বীপসমূহ মহাভাবক আন্দোলনের ফলে ভূ-ভাগ নিমজ্জিত হয়ে গঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন:- জীব ভূ রাসায়নিক চক্র কি?
২. গিরিজনি বা আনুভূমিক আন্দোলন ( Orogenic or Horizontal Movement) :
সমুদ্রগর্ভের বিশাল অঞ্চল জুড়ে আনুভূমিকভাবে গিরিজনি আন্দোলন ঘটে। গিরিজনি আন্দোলনে সংকোচনের ফলে ভূ-পৃষ্ঠের কোথাও সংকোচন এবং টানের ফলে কোথাও প্রসারণ ঘটে। ফলে সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত পলি সংকুচিত হয়ে ভাঁজের সৃষ্টি হয় এবং কালক্রমে ভূ-পৃষ্ঠের ওপর উত্থিত হয়ে বিশালাকার ভঙ্গিল পর্বত গঠন করে। বিশালায়তনের ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টি হয় বলেই একে গিরিজনি আন্দোলন বলে।
যেমন- ইউরোপের আল্পস, উত্তর আমেরিকার রকি এবং দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ প্রভৃতি ভঙ্গিল পর্বত। ভঙ্গিল পর্বতের প্রত্যেক ভাঁজের সর্বোচ্চ অংশকে উর্ধ্বভঙ্গ বা ঊর্ধ্বভাঁজ (Anticline) এবং সর্বনিম্ন অংশকে অধঃ ভঙ্গ বা অধ:ভাজ (Syncline) বলে।
ভূ-আন্দোলনের সৃষ্ট ভূমিরূপ :-
ভূ-আন্দোলনের ফলে ভূ-ত্বকের শিলাসমূহের পরিবর্তনকে প্রধান চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-১. ভাঁজ
২ সাধারণ বক্রতা
৩. ফাটল
৪ ছাতি ।
১. ভাঁজ (Fold) :
পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে সংকুচিত হয়। ফলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়। এই ভাঁজের দৈর্ঘ্য ও বিস্তার এক ইঞ্চি হতে কয়েক মাইল পর্যন্ত হয়। গিরিজনি আন্দোলনের ফলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়। সাধারণত পাঁচ ধরনের ভাঁজ সৃষ্টি হতে পারে। যথা: সরল ভাঁজ, সুষম ভাঁজ, বিষম ভাঁজ, হেলান ভাঁজ ও শায়িত ভাঁজ।
২. সাধারণ বক্রতা (Gentle Fold):
গিরিজনি আন্দোলনের সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে পৃথিবীর বিশাল অংশ বক্রভাবে উর্ধ্বদিকে ও নিম্নদিকে অবস্থান করে। এই বক্রতার দৈর্ঘ্য ও বিস্তার কয়েক কিলোমিটার হতে কয়েকশত কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। বক্রতার ঊর্ধ্বে উত্থিত অংশকে উর্ধ্বভঙ্গ (Anticline) এবং নিয়ে অবনত অংশকে অধঃ ভঙ্গ (Syncline) বলে।
কিন্তু বহুদূর ব্যাপী বিস্তৃত ঊর্ধ্বে উত্থিত অংশকে ব্যাপ্ত ঊর্ধ্বভাজ (Geo Anticline) এবং নিচে অবনমিত অংশকে ব্যাপ্ত অধ: ভাজ (Geosyncline) বলে।
৩. ফাঁটল (Crack) :
ভূ-আন্দোলনের ফলে ভূ-পৃষ্ঠে ফাটল সৃষ্টি হয়। এই ফাটল খাড়া বা হেলানভাবে হতে পারে। ফাঁটল বরাবর চ্যুতি গঠিত হয়।
৪. চ্যুতি ( Fault) :
ভূ-আলোড়নের ফলে ভূ-পৃষ্ঠের ফাঁটলের একদিকের অংশ স্থানচ্যুত হয়ে ভূ-গর্ভে বসে যায়। একে চ্যুতি বলে।
আরও পড়ুন :- মৃত্তিকা দূষণ কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.