ইকোলজি কাকে বলে :-
প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে জীবজগতের যে আন্তঃসম্পর্ক এবং সেই সম্পর্কিত গবেষণা ও পঠন-পাঠনের শাস্ত্রকেই বলা হয় ইকোলজি বা বাস্তুতন্ত্র।ইকোলজি হলো এমনই এক বিজ্ঞান যা জৈব ও অজৈব উপাদানসমূহের পারস্পরিক সম্পর্ক, পারস্পরিক মিথগ্রিয়া ব্যাখ্যা করে।
ইকোসিস্টেম বা বাস্তুসংস্থান কাকে বলে :-
মানুষ, পশু-পাখি, জীবজন্তু প্রাকৃতিক নানা উপকরণ যেমন গাছপালা, মাটি, সূর্যালোক, পানি, বাতাসের উপর পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দ্বারা নির্ভরশীল। জীব ও জড় পরিবেশের এই পারস্পরিক আন্তঃসম্পর্ককেই বলা হয় বাস্তুসংস্থান।পরিবেশ ও জীবের এই সম্পর্ক অবিচ্ছেনা এবং মানুষ, জীব ও পরিবেশ একে অন্যের জীবনধারণের প্রতিটি করে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। কখনো কখনো এই প্রভাব হতে পারে ইতিবাচক আবার কখনো তা হতে পারে জীবন বিপন্নকারী।
আরও পড়ুন :- বসতি কাকে বলে?
নিচে স্থলজ, জলজ ও কৃত্রিম বাস্তুসংস্থান নিয়ে আলোচনা করা হলো।
স্থলজ বাস্তুসংস্থান :
স্থলজ বাস্তুসংস্থান আবার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন- তৃণভূমির বাস্তুসংস্থান, বনভূমির বাস্তুসংস্থান, মরুভূমির বাস্তুসংস্থান ইত্যাদি।
জলজ বাস্তুসংস্থান :
জলজ বাস্তুসংস্থান বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যথা- পুকুরের বাস্তুসংস্থান, নদ-নদী বাস্তুসংস্থান ও সমুদ্রের বাস্তুসংস্থান। জলজ বাস্তুসংস্থানের জ্ঞান লাভে সবচেয়ে উপযোগী স্থান হলো পুকুরের বাস্তুসংস্থান।
কৃত্রিম বাস্তুসংস্থান :
প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানুষ যে কৃত্রিম পদ্ধতিতে উদ্ভিদ বা প্রাণি চাষাবাদের ব্যবস্থা করেন তাকে কৃত্রিম বাস্তুসংস্থান বলে। কৃত্রিম বাস্তুসংস্থানের আদর্শ উদাহরণ হিসেবে এ্যাকোরিয়াম, চন্দ্রযান ইত্যাদি উল্লেখ করা যেতে পারে।
ক. সজীব উপাদান এবং
খ. জড় উপাদান।
১. উৎপাদক
২. খাদক এবং
৩. বিয়োজক।
১. উৎপাদক :
সবুজ উদ্ভিদ পরিবেশ থেকে পানি, কার্বন ডাই-অক্সাইড, খনিজ লবণ প্রভৃতি জীব উপাদান গ্রহণ করে সৌরশক্তির মাধ্যমে নিজেদের শর্করা জাতীয় খাদ্য নিজেরা তৈরি করে। এ সবুজ উদ্ভিদই উৎপাদক।
২. খাদক :
ইকোসিস্টেম প্রক্রিয়ায় উৎপাদক কর্তৃক তৈরি খাদ্যের উপর নির্ভরশীল জীবগোষ্ঠিকে বলে খাদক। খাদক তিন প্রকার। যথা- প্রথম স্তরের খাদক, দ্বিতীয় স্তরের খাদক এবং তৃতীয় স্তরের খাদক।
৩. বিয়োজক :
ইকোসিস্টেম প্রক্রিয়ায় উৎপাদক ও বালকের মৃতদেহ মাটিতে মিশে ব্যাকটেরিয়া, ক্ষুদ্র পোকামাকড় ইত্যাদির দ্বারা বিয়োজক স্তর গড়ে উঠে। পরিশেষে উৎপাদক জীবগোষ্ঠি পুনরায় বিয়োজক স্তর হতে খাদ্য গ্রহণ করে দেহে পুষ্টি জোগায়।
উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় পরিবেশ থেকে সংগৃহীত অজীব উপাদানের পুনঃপূরণ ঘটে এবং নির্দিষ্ট স্থানে অর্জীব ও সঞ্জীব পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বজায় থাকে।
১. অজৈব উপাদান : মাটি, পানি, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, খনিজ লবণ ইত্যাদি হচ্ছে বাস্তুসংস্থানের অজৈব উপাদান।
২. জৈব উপাদান : উদ্ভিদ ও প্রাণির মৃতদেহ হতে তৈরি হিউমাস ও ইউরিয়া হলো মাটির জৈব উপাদান।
৩. ভৌত উপাদান : আবহাওয়া, জলবায়ু, মাটির গুণাগুণ বাস্তুসংস্থানের ভৌত উপাদান।
পুকুরের বাড়সংস্থানের উৎপাদক হচ্ছে সাধারণ ভাসমান ও অগভীর পানির বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ। যেমন- কচুরিপানা, শাপলা, হাইড্রিলা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার ভাসমান ক্ষুদ্র পোকা, মশার শুককীট প্রভৃতি প্রথম শ্রেণির খাদক। দ্বিতীয় শ্রেণির খাদক হলো খামারি আকৃতির মাছ, ব্যাঙ, কচ্ছপ ইত্যাদি। আর তৃতীয় শ্রেণির খাদকের মধ্যে রয়েছে বড় মাছ, বক, গাংচিল প্রভৃতি।
মৃত্যুর পর একই নিয়মে জীবাণু, মৃতজীবি ছত্রাক, কাদায় বসবাসকারী পোকা বিয়োজকের কাজ করে। বিয়োজিত অজৈব লবণ পুকুরের উৎপাদক সম্প্রদায় খাদ্য উপাদান হিসেবে গ্রহণ করে।
এভাবে পুকুরের প্রত্যেকটি উপাদান স্বাভাবিক নিয়মে নিজ নিজ কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকে। সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, একটি পুকুরের বাস্তুসংস্থান তার সুশৃঙ্খল ধারা বজায় রেখে ভারসাম্য বজায় রাখছে। কোনো কারণে এই শৃঙ্খলের ব্যত্যয় ঘটলে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। পুকুরের বাস্তুসংস্থানের অন্তর্গত কোনো একটি শ্রেণি নষ্ট বা ধ্বংশ হলে শৃঙ্খলা ভেঙ্গে যাবে।
আরও পড়ুন :- প্রাকৃতিক পরিবেশ কাকে বলে?
বাস্তুসংস্থানের প্রকারভেদ :-
পরিবেশ অনুসারে বাস্তুসংস্থান প্রধানত দু'ধরনের। যথা- স্থলজ বাস্তুসংস্থান ও জলজ বাস্তুসংস্থান। এছাড়া মানুষ কৃত্রিমভাবে বিভিন্ন ধরনের বাস্তুসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারে।নিচে স্থলজ, জলজ ও কৃত্রিম বাস্তুসংস্থান নিয়ে আলোচনা করা হলো।
স্থলজ বাস্তুসংস্থান :
স্থলজ বাস্তুসংস্থান আবার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন- তৃণভূমির বাস্তুসংস্থান, বনভূমির বাস্তুসংস্থান, মরুভূমির বাস্তুসংস্থান ইত্যাদি।
জলজ বাস্তুসংস্থান :
জলজ বাস্তুসংস্থান বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যথা- পুকুরের বাস্তুসংস্থান, নদ-নদী বাস্তুসংস্থান ও সমুদ্রের বাস্তুসংস্থান। জলজ বাস্তুসংস্থানের জ্ঞান লাভে সবচেয়ে উপযোগী স্থান হলো পুকুরের বাস্তুসংস্থান।
কৃত্রিম বাস্তুসংস্থান :
প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানুষ যে কৃত্রিম পদ্ধতিতে উদ্ভিদ বা প্রাণি চাষাবাদের ব্যবস্থা করেন তাকে কৃত্রিম বাস্তুসংস্থান বলে। কৃত্রিম বাস্তুসংস্থানের আদর্শ উদাহরণ হিসেবে এ্যাকোরিয়াম, চন্দ্রযান ইত্যাদি উল্লেখ করা যেতে পারে।
বাস্তুসংস্থানের উপাদান :-
বাস্তুসংস্থানের উপাদান মূলত দুটি। যথাক. সজীব উপাদান এবং
খ. জড় উপাদান।
ক. সজীব উপাদান :
সজীব সম্প্রদায় হলো বাস্তুসংস্থানের জীব উপাদান। সজীব উপাদান আবার তিন প্রকার। যথা১. উৎপাদক
২. খাদক এবং
৩. বিয়োজক।
১. উৎপাদক :
সবুজ উদ্ভিদ পরিবেশ থেকে পানি, কার্বন ডাই-অক্সাইড, খনিজ লবণ প্রভৃতি জীব উপাদান গ্রহণ করে সৌরশক্তির মাধ্যমে নিজেদের শর্করা জাতীয় খাদ্য নিজেরা তৈরি করে। এ সবুজ উদ্ভিদই উৎপাদক।
২. খাদক :
ইকোসিস্টেম প্রক্রিয়ায় উৎপাদক কর্তৃক তৈরি খাদ্যের উপর নির্ভরশীল জীবগোষ্ঠিকে বলে খাদক। খাদক তিন প্রকার। যথা- প্রথম স্তরের খাদক, দ্বিতীয় স্তরের খাদক এবং তৃতীয় স্তরের খাদক।
৩. বিয়োজক :
ইকোসিস্টেম প্রক্রিয়ায় উৎপাদক ও বালকের মৃতদেহ মাটিতে মিশে ব্যাকটেরিয়া, ক্ষুদ্র পোকামাকড় ইত্যাদির দ্বারা বিয়োজক স্তর গড়ে উঠে। পরিশেষে উৎপাদক জীবগোষ্ঠি পুনরায় বিয়োজক স্তর হতে খাদ্য গ্রহণ করে দেহে পুষ্টি জোগায়।
উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় পরিবেশ থেকে সংগৃহীত অজীব উপাদানের পুনঃপূরণ ঘটে এবং নির্দিষ্ট স্থানে অর্জীব ও সঞ্জীব পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বজায় থাকে।
আরও পড়ুন :- খাদক কাকে বলে?
খ. জড় উপাদান :
পরিবেশের সকল অজৈব ও জৈব উপাদান হলো বাস্তুসংস্থানের জড় উপাদান। জড় উপাদান আবার তিন প্রকার। যথা১. অজৈব উপাদান : মাটি, পানি, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, খনিজ লবণ ইত্যাদি হচ্ছে বাস্তুসংস্থানের অজৈব উপাদান।
২. জৈব উপাদান : উদ্ভিদ ও প্রাণির মৃতদেহ হতে তৈরি হিউমাস ও ইউরিয়া হলো মাটির জৈব উপাদান।
৩. ভৌত উপাদান : আবহাওয়া, জলবায়ু, মাটির গুণাগুণ বাস্তুসংস্থানের ভৌত উপাদান।
বাস্তুসংস্থানের উদাহরণ :-
একটি পুকুরে বসবাসকারী জীব সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রধান হচ্ছে ভাসমান ও সঞ্চারমান ক্ষুদ্র জীব অর্থাৎ পাঙ্কটন। এছাড়া রয়েছে সবুজ শেওলা ও ক্ষুদ্র জলজ প্রাণি। আর জড় উপাদানের মধ্যে রয়েছে পানি, মাটি ও সৌরশক্তি ইত্যাদি।পুকুরের বাড়সংস্থানের উৎপাদক হচ্ছে সাধারণ ভাসমান ও অগভীর পানির বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ। যেমন- কচুরিপানা, শাপলা, হাইড্রিলা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার ভাসমান ক্ষুদ্র পোকা, মশার শুককীট প্রভৃতি প্রথম শ্রেণির খাদক। দ্বিতীয় শ্রেণির খাদক হলো খামারি আকৃতির মাছ, ব্যাঙ, কচ্ছপ ইত্যাদি। আর তৃতীয় শ্রেণির খাদকের মধ্যে রয়েছে বড় মাছ, বক, গাংচিল প্রভৃতি।
মৃত্যুর পর একই নিয়মে জীবাণু, মৃতজীবি ছত্রাক, কাদায় বসবাসকারী পোকা বিয়োজকের কাজ করে। বিয়োজিত অজৈব লবণ পুকুরের উৎপাদক সম্প্রদায় খাদ্য উপাদান হিসেবে গ্রহণ করে।
এভাবে পুকুরের প্রত্যেকটি উপাদান স্বাভাবিক নিয়মে নিজ নিজ কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকে। সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, একটি পুকুরের বাস্তুসংস্থান তার সুশৃঙ্খল ধারা বজায় রেখে ভারসাম্য বজায় রাখছে। কোনো কারণে এই শৃঙ্খলের ব্যত্যয় ঘটলে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। পুকুরের বাস্তুসংস্থানের অন্তর্গত কোনো একটি শ্রেণি নষ্ট বা ধ্বংশ হলে শৃঙ্খলা ভেঙ্গে যাবে।
আরও পড়ুন :- প্রাকৃতিক পরিবেশ কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.