আমরা যদি আমাদের চারপাশে লক্ষ্য করি তাহলে দেখব যে, প্রতিনিয়ত মানুষ তার প্রয়োজনের তাগিদে একস্থান থেকে অন্যস্থানে গমন করছে। যেমন- জীবিকা নির্বাহ, চাকুরি, চিকিৎসা, বিনোদন, হাট-বাজার প্রভৃতি কারণে একস্থান থেকে অন্যস্থানে ছুটে যাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে মানুষ নিজের আবাসস্থল পরিবর্তন করে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করছে।
জাতিসংঘের মতে, “ এক বা একাধিক বছরের জন্য বাসস্থানের পরিবর্তনকে অভিবাসন বলে”।
বিশেষজ্ঞগণের মতে, “বাসস্থানের স্থায়ী বা অস্থায়ী পরিবর্তনকে অভিবাসন বলে"।
সুতরাং আমরা বলতে পারি, অভিবাসনের প্রধান বৈশিষ্ট্যই হলো বাসস্থান পরিবর্তন যা স্থায়ী বা অস্থায়ী যে কোনোটিই হতে পারে।
১. অবাধ অভিবাসন (Free Migration) :
অনেক সময় আমরা নিজেদের পছন্দমতো জায়গায় গিয়ে বসবাস করি। যখন নিজের ইচ্ছায় আবাসস্থান ত্যাগ করে অন্য কোনো পছন্দমতো স্থানে আবাস গড়ে তোলা হয় তখন তাকে অবাধ অভিবাসন বলে।
মানুষ যে স্থান পরিত্যাগ করে তাকে উৎসস্থল (Place of Origin) এবং নতুন যে স্থানে গমন করে সে স্থানকে গন্তব্যস্থল (Place of Destination) বলে।
উৎস স্থলের বিভিন্ন অভাব, অসুবিধা এবং গন্তব্যস্থলের অধিক সুযোগ-সুবিধা এ ধরনের অভিবাসনের মূল কারণ। যেমন- আমাদের দেশের অনেক লোক শিক্ষা, চিকিৎসা প্রভৃতি সুবিধার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়ে থাকে।
অভিবাসন কাকে বলে :-
সাধারণত মানুষের বাসস্থানের এরূপ স্থায়ী বা অস্থায়ী পরিবর্তনকে অভিবাসন বলা হয়ে থাকে।জাতিসংঘের মতে, “ এক বা একাধিক বছরের জন্য বাসস্থানের পরিবর্তনকে অভিবাসন বলে”।
বিশেষজ্ঞগণের মতে, “বাসস্থানের স্থায়ী বা অস্থায়ী পরিবর্তনকে অভিবাসন বলে"।
সুতরাং আমরা বলতে পারি, অভিবাসনের প্রধান বৈশিষ্ট্যই হলো বাসস্থান পরিবর্তন যা স্থায়ী বা অস্থায়ী যে কোনোটিই হতে পারে।
অভিবাসনের প্রকারভেদ :-
জনসংখ্যা পরিবর্তনের একটি অন্যতম উপায় হলো অভিবাসন। এই অভিবাসন বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। নিম্নের ছকে অভিবাসনের প্রধান শ্রেণিবিভাগ দেখানো হলো।ক. প্রকৃতি অনুযায়ী অভিবাসন :
প্রকৃতি অনুযায়ী অভিবাসন দুই প্রকার। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো।১. অবাধ অভিবাসন (Free Migration) :
অনেক সময় আমরা নিজেদের পছন্দমতো জায়গায় গিয়ে বসবাস করি। যখন নিজের ইচ্ছায় আবাসস্থান ত্যাগ করে অন্য কোনো পছন্দমতো স্থানে আবাস গড়ে তোলা হয় তখন তাকে অবাধ অভিবাসন বলে।
মানুষ যে স্থান পরিত্যাগ করে তাকে উৎসস্থল (Place of Origin) এবং নতুন যে স্থানে গমন করে সে স্থানকে গন্তব্যস্থল (Place of Destination) বলে।
উৎস স্থলের বিভিন্ন অভাব, অসুবিধা এবং গন্তব্যস্থলের অধিক সুযোগ-সুবিধা এ ধরনের অভিবাসনের মূল কারণ। যেমন- আমাদের দেশের অনেক লোক শিক্ষা, চিকিৎসা প্রভৃতি সুবিধার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন :- অভিগমন কাকে বলে?
২. বলপূর্বক অভিবাসন (Forced Migration) :
প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিক চাপের কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে যদি তার আবাসস্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র আবাস গড়ে তোলে তখন তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে।
উদাহরণস্বরূপ, ইরাক যুদ্ধের ফলে কয়েক লক্ষ লোক নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। এ ধরনের অভিবাসনের ফলে যে সমস্ত ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে এবং স্থায়ী আবাস স্থাপন করে তাদেরকে উদ্বাস্তু (Refugee) বলে। আর যারা সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুবিধামত সময়ে নিজ দেশে ফিরে যায় তাদের বলা হয় শরনার্থী (Emigree)।
১. অন্তঃরাষ্ট্রীয় অভিবাসন( Intrastate Migration) এবং
১. অন্তঃরাষ্ট্রীয় অভিবাসন :
একটি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে যখন কোনো ব্যক্তি স্থানান্তরিত হয় তখন তাকে অন্তঃরাষ্ট্রীয় অভিবাসন বলে।
যেমন- পঞ্চগড় থেকে কেউ যদি ঢাকায় এসে বসবাস করে তখন তাকে অন্ত:রাষ্ট্রীয় অভিবাসন বলে। অন্ত:রাষ্ট্রীয় অভিবাসনকে আবার কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। নিম্নের ছকে তা দেখানো হলো।
ক. গ্রাম থেকে গ্রামে ( Rural to Rural) :
একই দেশের অভ্যন্তরে যখন কোনো মানুষ এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে স্থানান্তরিত হয় তখন তাকে বলা হয় গ্রাম থেকে গ্রামে অভিবাসন। পুরুষের তুলনায় মহিলাদের এ ধরনের অভিগমন বেশি করতে দেখা যায়। এর কারণ মহিলারা স্বল্প দূরত্বে যেতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বৈবাহিক কারণেও মহিলারা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে অভিগমন করে থাকে।
২. বলপূর্বক অভিবাসন (Forced Migration) :
প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিক চাপের কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে যদি তার আবাসস্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র আবাস গড়ে তোলে তখন তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে।
উদাহরণস্বরূপ, ইরাক যুদ্ধের ফলে কয়েক লক্ষ লোক নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। এ ধরনের অভিবাসনের ফলে যে সমস্ত ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে এবং স্থায়ী আবাস স্থাপন করে তাদেরকে উদ্বাস্তু (Refugee) বলে। আর যারা সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুবিধামত সময়ে নিজ দেশে ফিরে যায় তাদের বলা হয় শরনার্থী (Emigree)।
খ. স্থানভেদে অভিবাসন :-
স্থানভেদেও অভিবাসন প্রধানত দুই প্রকার। নিম্নে স্থানভেদে অভিবাসনের প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো।১. অন্তঃরাষ্ট্রীয় অভিবাসন( Intrastate Migration) এবং
২. আন্তর্জাতিক অভিবাসন (International Migration)।
১. অন্তঃরাষ্ট্রীয় অভিবাসন :
একটি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে যখন কোনো ব্যক্তি স্থানান্তরিত হয় তখন তাকে অন্তঃরাষ্ট্রীয় অভিবাসন বলে।
যেমন- পঞ্চগড় থেকে কেউ যদি ঢাকায় এসে বসবাস করে তখন তাকে অন্ত:রাষ্ট্রীয় অভিবাসন বলে। অন্ত:রাষ্ট্রীয় অভিবাসনকে আবার কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। নিম্নের ছকে তা দেখানো হলো।
ক. গ্রাম থেকে গ্রামে ( Rural to Rural) :
একই দেশের অভ্যন্তরে যখন কোনো মানুষ এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে স্থানান্তরিত হয় তখন তাকে বলা হয় গ্রাম থেকে গ্রামে অভিবাসন। পুরুষের তুলনায় মহিলাদের এ ধরনের অভিগমন বেশি করতে দেখা যায়। এর কারণ মহিলারা স্বল্প দূরত্বে যেতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বৈবাহিক কারণেও মহিলারা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে অভিগমন করে থাকে।
আরও পড়ুন :- বসতি কাকে বলে?
খ. গ্রাম থেকে শহরে (Rural to Urban) :
একই রাষ্ট্রে গ্রামীন এলাকা থেকে যখন কোনো ব্যক্তি শহরে স্থানান্তরিত হয়ে বসবাস করে তখন তা গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন। একই রাষ্ট্রীয় সীমানায় সাধারণত গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের অভিবাসন প্রবনতা বেশি দেখা যায়।
গ. শহর থেকে গ্রামে (Urban to Rural) :
শহর থেকে কোনো মানুষ যখন গ্রামে স্থানান্তরিত হয়ে বসবাস করে তখন তাকে শহর থেকে গ্রামে অভিবাসন বলে। আমাদের দেশে এ ধরনের অভিবাসন খুব কম দেখা যায়। তবে উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের অভিবাসন দেখা যায়।
ঘ. শহর থেকে শহরে (Urban to Urban) :
একই দেশের অভ্যন্তরে এক শহর থেকে যখন অন্য শহরে গিয়ে বসবাস করে তখন তাকে শহর থেকে শহরে অভিবাসন বলে। সাধারণত চাকুরি, উন্নত জীবনযাত্রা প্রভৃতি কারণে এ ধরনের অভিবাসন বেশি দেখা যায়।
২. আন্তর্জাতিক অভিবাসন (International Migration) :
কোনো দেশের নাগরিক যখন তার নিজ দেশের রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম করে অন্য দেশে বাস করে তখন তাকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন বলে। এক্ষেত্রে একটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য।
আন্তর্জাতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। মানুষ ইচ্ছা করলেই আন্তর্জাতিক অভিবাসন করতে পারে না। কারণ এ ধরনের অভিবাসনের একটি নীতি রয়েছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, বাংলাদেশ, ভারত, চীন, জাপান প্রভৃতি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন আবার দুই প্রকার। যথা
ক. অন্তঃমহাদেশ (Intra Continent Migration) :
একই মহাদেশভুক্ত এক দেশ থেকে যখন অন্য মহাদেশে গমন করে বসবাস করে তখন তাকে অন্ত:মহাদেশ অভিবাসন বলে। যেমন- এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় অভিবাসন।
খ. আন্তঃমহাদেশ (Intercontinental Migration) :
কোনো একটি মহাদেশ থেকে যখন অন্য মহাদেশে দেশে গিয়ে বসবাস করে তখন তাকে আন্ত:মহাদেশ অভিবাসন বলে। যেমন-এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের জার্মানিতে অভিবাসন।
খ. গ্রাম থেকে শহরে (Rural to Urban) :
একই রাষ্ট্রে গ্রামীন এলাকা থেকে যখন কোনো ব্যক্তি শহরে স্থানান্তরিত হয়ে বসবাস করে তখন তা গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন। একই রাষ্ট্রীয় সীমানায় সাধারণত গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের অভিবাসন প্রবনতা বেশি দেখা যায়।
গ. শহর থেকে গ্রামে (Urban to Rural) :
শহর থেকে কোনো মানুষ যখন গ্রামে স্থানান্তরিত হয়ে বসবাস করে তখন তাকে শহর থেকে গ্রামে অভিবাসন বলে। আমাদের দেশে এ ধরনের অভিবাসন খুব কম দেখা যায়। তবে উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের অভিবাসন দেখা যায়।
ঘ. শহর থেকে শহরে (Urban to Urban) :
একই দেশের অভ্যন্তরে এক শহর থেকে যখন অন্য শহরে গিয়ে বসবাস করে তখন তাকে শহর থেকে শহরে অভিবাসন বলে। সাধারণত চাকুরি, উন্নত জীবনযাত্রা প্রভৃতি কারণে এ ধরনের অভিবাসন বেশি দেখা যায়।
২. আন্তর্জাতিক অভিবাসন (International Migration) :
কোনো দেশের নাগরিক যখন তার নিজ দেশের রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম করে অন্য দেশে বাস করে তখন তাকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন বলে। এক্ষেত্রে একটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য।
আন্তর্জাতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। মানুষ ইচ্ছা করলেই আন্তর্জাতিক অভিবাসন করতে পারে না। কারণ এ ধরনের অভিবাসনের একটি নীতি রয়েছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, বাংলাদেশ, ভারত, চীন, জাপান প্রভৃতি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন আবার দুই প্রকার। যথা
ক. অন্তঃমহাদেশ (Intra Continent Migration) :
একই মহাদেশভুক্ত এক দেশ থেকে যখন অন্য মহাদেশে গমন করে বসবাস করে তখন তাকে অন্ত:মহাদেশ অভিবাসন বলে। যেমন- এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় অভিবাসন।
খ. আন্তঃমহাদেশ (Intercontinental Migration) :
কোনো একটি মহাদেশ থেকে যখন অন্য মহাদেশে দেশে গিয়ে বসবাস করে তখন তাকে আন্ত:মহাদেশ অভিবাসন বলে। যেমন-এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের জার্মানিতে অভিবাসন।
আরও পড়ুন :- বাস্তুসংস্থান কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.