ছোটো আকৃতির ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যেখানে লেনদেনের সংখ্যা কম সে সকল প্রতিষ্ঠানে সাধারণ জাবেদার মাধ্যমে হিসাব রাখা সম্ভব। কিন্তু বৃহৎ কারবার প্রতিষ্ঠান যেখানে অসংখ্য লেনদেন সংগঠিত হয় সেখানে সাধারণ জাবেদার পাশাপাশি বিশেষ জাবেদায় কতিপয় বিশেষ ধরণের লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি বিশেষ ভাবেদায় একটি নির্দিষ্ট প্রকৃতির লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয়।
বিশেষ জাবেদা কাকে বলে :-
C. T. Horngren, WT Harrison, Jr. and L.S Bomber (1999) এর মতে “A special journal is an accounting journal designed to record one specific type of transaction" (একটি বিশেষ জাবেদা হচ্ছে বিশেষ ধরনের লেনদেন লিপিবদ্ধ করার জন্য জাবেদা)।
Pyle & Lerson এর মতে, “বিশেষ জাবেদা হলো একই ধরনের লেনদেন লিপিবদ্ধ করার জন্য একটি বছরে বিশিষ্ট প্রাথমিক বই" (Special Journal is a columnar book of original entry for recording one kind of transaction.)
সুতরাং একই ধরনের যেমন: সকল প্রকার বাকিতে পণ্য বিক্রয়, সকল প্রকার নগদ প্রাপ্তি (নগদ বিক্রয়সহ), সকল প্রকার বাকিতে পণ্য ক্রয় এবং সকল প্রকার নগদ প্রদান (নগদ ক্রয়সহ) ইত্যাদি বিশেষ বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত লেনদেনগুলো একই আবেদায় লিপিদ্ধ করার কৌশলকে বিশেষ জাবেদা বলে (special journal)।
Pyle & Lerson এর মতে, “বিশেষ জাবেদা হলো একই ধরনের লেনদেন লিপিবদ্ধ করার জন্য একটি বছরে বিশিষ্ট প্রাথমিক বই" (Special Journal is a columnar book of original entry for recording one kind of transaction.)
সুতরাং একই ধরনের যেমন: সকল প্রকার বাকিতে পণ্য বিক্রয়, সকল প্রকার নগদ প্রাপ্তি (নগদ বিক্রয়সহ), সকল প্রকার বাকিতে পণ্য ক্রয় এবং সকল প্রকার নগদ প্রদান (নগদ ক্রয়সহ) ইত্যাদি বিশেষ বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত লেনদেনগুলো একই আবেদায় লিপিদ্ধ করার কৌশলকে বিশেষ জাবেদা বলে (special journal)।
আরও পড়ুন :- চালানি কারবার কাকে বলে?
১. বিক্রয় জাবেদা :-
সকল প্রকার বাকিতে পণ্য বিক্রয় এ জাবেদায় লিপিবন্ধ করা হয়।
২. ক্রয় জাবেদা :-
সকল প্রকার বাকিতে পণ্য ক্রয় Single column purchase Journal এ এবং সকল প্রকার বাকিতে পণ্য ক্রয় ছাড়াও অন্য কোনো প্রকার বাকিতে সম্পত্তি জন্য Multicolumn purchase journal এ লিপিবদ্ধ হয়।
৩. নগদপ্রাপ্তি জাবেদা :-
সকল প্রকার নগদ গ্রহণ এই জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। নগদ পণ্য বিক্রয় কিংবা অন্য কিছু নগদ বিক্রয় করলেও নগদপ্রাপ্তি জাবেদার অন্তর্ভূক্ত হবে।
৪. নগদ প্রদান জাবেদা :-
সকল প্রকার নগদ প্রদান এবং নগদ জন্য এই জাবেদায় লিপিবন্ধ করা হয়।
এছাড়াও কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন অনুযায়ী আরো কয়েকটি বিশেষ জাবেদা ব্যবহার করে থাকে।
যেমন:
বিশেষ জাবেদা কত প্রকার ও কি কি :-
বিশেষ ধরনের লেনদেনেসমূহ লিপিবদ্ধ করার জন্য ব্যবহৃত জাবেদাকে বিশেষ জাবেদা বলে। বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে সাধারণত যে সকল বিশেষ জাবেদা সংরক্ষণ করে থাকে সেগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-১. বিক্রয় জাবেদা :-
সকল প্রকার বাকিতে পণ্য বিক্রয় এ জাবেদায় লিপিবন্ধ করা হয়।
২. ক্রয় জাবেদা :-
সকল প্রকার বাকিতে পণ্য ক্রয় Single column purchase Journal এ এবং সকল প্রকার বাকিতে পণ্য ক্রয় ছাড়াও অন্য কোনো প্রকার বাকিতে সম্পত্তি জন্য Multicolumn purchase journal এ লিপিবদ্ধ হয়।
৩. নগদপ্রাপ্তি জাবেদা :-
সকল প্রকার নগদ গ্রহণ এই জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। নগদ পণ্য বিক্রয় কিংবা অন্য কিছু নগদ বিক্রয় করলেও নগদপ্রাপ্তি জাবেদার অন্তর্ভূক্ত হবে।
৪. নগদ প্রদান জাবেদা :-
সকল প্রকার নগদ প্রদান এবং নগদ জন্য এই জাবেদায় লিপিবন্ধ করা হয়।
এছাড়াও কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন অনুযায়ী আরো কয়েকটি বিশেষ জাবেদা ব্যবহার করে থাকে।
যেমন:
ক্রয় ফেরত জাবেদা (Purchase return journal),
বিক্রয় ফেরত জাবেদা (Sales return journal),
প্রাপ্য বিলের জাবেদা (Bills receivable journal),
প্রদেয় বিলের জাবেদায় (Bills payable journal) ইত্যাদি।
১. শ্রম বিভাগের সুবিধা :-
বিশেষ জাবেদার মাধ্যমে লেনদেনগুলো লিপিবদ্ধ করা হলে আলাদা জনবল দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন বিশেষ জাবেদায় অতি অল্প সময়ে এবং স্বল্প শ্রমে লেনদেন সমূহ দ্রুত লিপিবদ্ধ করা সম্ভব।
২. লেনদেনের স্থায়ী রেকর্ড :-
লেনদেনসমূহ সংঘটনের পরপরই তারিখের ক্রমানুসারে স্থায়ীভাবে হিসাবের প্রাথমিক বই বিশেষ জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। তাই কোনো লেনদেন হিসাবভুক্ত না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৩. প্রয়োজনীয় তথ্য দ্রুত প্রাপ্তি :-
লেনদেনসমূহ পৃথক পৃথক জাবেদা বহিতে লিপিবদ্ধ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য খুব দ্রুত পাওয়া যায়।
যেমন- ধারে বিক্রয়ের কোনো তথ্য পেতে চাইলে বিক্রয় বই হতে দ্রুত পাওয়া যায়। নগদ প্রাপ্তি জানতে চাইলে নগদ প্রাপ্তি বই হতে অতি অল্পসময়ে তা জানা যায়।
৪. ভুলত্রুটি উদ্ঘাটন ও সংশোধন :-
ভিন্ন ভিন্ন কর্মচারীর ওপর বিশেষ জাবেদা হিসাবভুক্ত হওয়ার দায়িত্ব অর্পিত থাকে বিধায় ভুলভ্রান্তি উদ্ঘাটন ও সংশোধন করা সহজ।
বিশেষ জাবেদার সুবিধা :-
লেনদেনসমূহ সুষ্ঠু ও সুশৃংখলভাবে সংরক্ষণ করতে হলে লেনদেনসমূহে ধারাবাহিকভাবে হিসাবের প্রাথমিক বই বিশেষ জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। নিম্নে জাবেদার সুবিধাসমূহ বর্ণনা করা হলো১. শ্রম বিভাগের সুবিধা :-
বিশেষ জাবেদার মাধ্যমে লেনদেনগুলো লিপিবদ্ধ করা হলে আলাদা জনবল দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন বিশেষ জাবেদায় অতি অল্প সময়ে এবং স্বল্প শ্রমে লেনদেন সমূহ দ্রুত লিপিবদ্ধ করা সম্ভব।
২. লেনদেনের স্থায়ী রেকর্ড :-
লেনদেনসমূহ সংঘটনের পরপরই তারিখের ক্রমানুসারে স্থায়ীভাবে হিসাবের প্রাথমিক বই বিশেষ জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। তাই কোনো লেনদেন হিসাবভুক্ত না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৩. প্রয়োজনীয় তথ্য দ্রুত প্রাপ্তি :-
লেনদেনসমূহ পৃথক পৃথক জাবেদা বহিতে লিপিবদ্ধ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য খুব দ্রুত পাওয়া যায়।
যেমন- ধারে বিক্রয়ের কোনো তথ্য পেতে চাইলে বিক্রয় বই হতে দ্রুত পাওয়া যায়। নগদ প্রাপ্তি জানতে চাইলে নগদ প্রাপ্তি বই হতে অতি অল্পসময়ে তা জানা যায়।
৪. ভুলত্রুটি উদ্ঘাটন ও সংশোধন :-
ভিন্ন ভিন্ন কর্মচারীর ওপর বিশেষ জাবেদা হিসাবভুক্ত হওয়ার দায়িত্ব অর্পিত থাকে বিধায় ভুলভ্রান্তি উদ্ঘাটন ও সংশোধন করা সহজ।
আরও পড়ুন :- কার্যপত্র কাকে বলে?
৫. লেনদেনের শ্রেণিবিন্যাস :-
জাবেদায় লেনদেনসমূহকে খাতওয়ারি শ্রেণি বিন্যাস করে সংরক্ষণ করা হয়। ফলে যে কোনো সময় লেনদেনের প্রকৃতি জানা যায়।
৬. খতিয়ান হিসাব-এ পোস্টিং সংখ্যা হ্রাস ও সময় বাঁচানো :-
বিশেষ জাবেদাসমূহ থেকে সাধারণ খতিয়ানে হিসাবকাল শেষে পোস্টিং দেওয়া হয়, তাতে পোস্টিং সংখ্যা হ্রাস পায় ও সময় বাঁচে।
৭. কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি :-
একই কাজ একজনকে করতে হয় বলে কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
৮. ধারাবাহিকতা রক্ষা :-
লেনদেনসমূহকে ক্রমানুযায়ী জবেদায় সংরক্ষণ করা হয় বলে ধারাবাহিকতা রক্ষা পায়।
৯. লেনদেনের দৈনিক চিত্র :-
তারিখের ক্রমানুসারে লেনদেনগুলো লিপিবদ্ধ হয় বলে এটি লেনদেনের দৈনিক চিত্রস্বরূপ।
উপরোক্ত সুবিধাগুলোর কারণে হিসাব সংরক্ষণে বিশেষ জাবেদার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
৫. লেনদেনের শ্রেণিবিন্যাস :-
জাবেদায় লেনদেনসমূহকে খাতওয়ারি শ্রেণি বিন্যাস করে সংরক্ষণ করা হয়। ফলে যে কোনো সময় লেনদেনের প্রকৃতি জানা যায়।
৬. খতিয়ান হিসাব-এ পোস্টিং সংখ্যা হ্রাস ও সময় বাঁচানো :-
বিশেষ জাবেদাসমূহ থেকে সাধারণ খতিয়ানে হিসাবকাল শেষে পোস্টিং দেওয়া হয়, তাতে পোস্টিং সংখ্যা হ্রাস পায় ও সময় বাঁচে।
৭. কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি :-
একই কাজ একজনকে করতে হয় বলে কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
৮. ধারাবাহিকতা রক্ষা :-
লেনদেনসমূহকে ক্রমানুযায়ী জবেদায় সংরক্ষণ করা হয় বলে ধারাবাহিকতা রক্ষা পায়।
৯. লেনদেনের দৈনিক চিত্র :-
তারিখের ক্রমানুসারে লেনদেনগুলো লিপিবদ্ধ হয় বলে এটি লেনদেনের দৈনিক চিত্রস্বরূপ।
উপরোক্ত সুবিধাগুলোর কারণে হিসাব সংরক্ষণে বিশেষ জাবেদার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
আরও পড়ুন :- জাবেদার কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.