কম্পিউটার সংগঠনের কয়টি অংশ ও কি কি?

কম্পিউটার সংগঠনের কয়টি অংশ ও কি কি :-

কম্পিউটারের সংগঠন বলতে মূলত হার্ডওয়্যারের সংগঠনকেই বোঝানো হয়। কম্পিউটার বিভিন্ন প্রকার যন্ত্র বা যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে গঠিত। বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রয়োজনে কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্র ও যন্ত্রাংশকে পারস্পরিক সংযোগ দ্বারা সংযুক্ত করা অবস্থাকেই কম্পিউটার সংগঠন বলা হয়। কম্পিউটার সংগঠনের প্রধান অংশ পাঁচটি। যথা -

  1. ইনপুট অংশ (Input Unit)
  2. নিয়ন্ত্রণ অংশ (Control Unit)
  3. গাণিতিক যুক্তি অংশ (Arithmetic Logic Unit)
  4. স্মৃতি অংশ (Memory Unit)
  5. আউটপুট অংশ (Output Unit)

অবশ্য স্মৃতি, গাণিতিক যুক্তি অংশ ও নিয়ন্ত্রণ অংশকে একত্রে কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ বা সিপিইউ (CPU) বলা হয়। নিম্নে চিত্রের মাধ্যমে কম্পিউটারের সাংগঠনিক অংশসমূহ দেখানো হলো
কম্পিউটার সংগঠনের কয়টি অংশ ও কি কি

ইনপুট অংশ :-

ইনপুট ইউনিট ব্যবহারকারী প্রদত্ত উপাত্ত বা বিভিন্ন উৎস থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করে সিপিইউ বা কেন্দ্রীয় প্রত্রিন্যাকরণ অংশের প্রধান স্মৃতিতে সংরক্ষণ করে।

অর্থাৎ ইনপুট অংশের কাজ হলো ব্যবহারকারী বা বিভিন্ন উৎস থেকে ডেটা বা নির্দেশ গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশে প্রেরণ করা।

বিভিন্ন ধরনের ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে ইনপুট ইউনিট কম্পিউটারকে ডেটা বা নির্দেশ প্রদানের কাজটি সম্পাদন করে। এ ধরনের কিছু ইনপুট ডিভাইসের উদাহরণ হলো কি-বোর্ড, মাউস, স্ক্যানার, ওএমআর (OMR), ওসিআর (OCR), জয়স্টিক, পাঞ্চকার্ড, লাইটপেন ইত্যাদি।

আরও পড়ুন :- কম্পিউটার রেজিস্টার কি?

নিয়ন্ত্রণ অংশ :-

কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ ইউনিট কম্পিউটারের সকল অংশকে নিয়ন্ত্রণের ও পরিচালনার কাজে নিয়োজিত থাকে। এটি কম্পিউটারের প্রতিটি নির্দেশ পরীক্ষা করে এবং কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় সংকেত তৈরি করে।

মেমরিতে কখন তথ্যের প্রয়োজন হবে, সহায়ক মেমরি হতে কখন প্রধান মেমরিতে তথ্য নিতে হবে, কখন ইনপুট হতে উপাত্ত নিতে হবে, কখন ফলাফল দিতে হবে- এ সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে।

নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের প্রধান কাজই হলো মেমরি হতে ইনস্ট্রাকশন কোড পড়া ও ডিকোড করা এবং মাইক্রোপ্রসেসরের অন্য অংশসমূহকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় কন্ট্রোল সিগন্যাল তৈরি করা। যেমন- গাণিতিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য মাইক্রোপ্রসেসরের গাণিতিক যুক্তি অংশকে কন্ট্রোল সিগন্যালের মাধ্যমে নির্দেশ প্রদান করা।

গাণিতিক যুক্তি অংশ :-

নিয়ন্ত্রণ অংশের তত্ত্বাবধানে গাণিতিক যুক্তি অংশ বা ALI বিভিন্ন ধরনের গাণিতিক বা লজিক্যাল অপারেশনের কাজ সম্পাদন করে। বেশির ভাগ গাণিতিক অপারেশনগুলো হলো যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ এবং লজিক্যাল অপারেশনগুলো হলো তুলনা, সত্য-মিথ্যা যাচাই ইত্যাদি।

আবার কোনো রেজিস্টার পরিষ্কারকরণ এবং রেজিস্টারে সংরক্ষিত তথ্য বা সংখ্যাকে ডানে-বামে সরানো ইত্যাদি কাজও এ অংশের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়।

বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক বর্তনীর সহায়তায় গাণিতিক যুক্তি অংশ এই কার্যাবলি সম্পাদান করে থাকে এবং প্রয়োজনে ফলাফল অস্থায়ীভাবে রেজিস্টারে সংরক্ষিত রাখে। বর্তমানের মাইক্রোপ্রসেসরগুলোতে কাজের গতি বাড়ানোর প্রয়োজনে একাধিক গাণিতিক যুক্তি অংশ ব্যবহৃত হয়।


মেমরি বা স্মৃতি অংশ :-

কোনো সমস্যা সমাধান করার জন্য কম্পিউটারে যে সমস্ত উপাত্ত বা নির্দেশাবলি ইনপুট ডিভাইসের সাহায্যে দেওয়া হয় তা কম্পিউটারের স্মৃতি অংশে জমা হয়। কম্পিউটারে সাধারণত প্রধান ও সহায়ক স্মৃতি অংশ বিদ্যমান। প্রধান স্মৃতি একটি পঠন/লিখন অর্ধপরিবাহী স্মৃতি প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রেগ্রাম ও উপাত্তকে এ অংশে সংরক্ষণ করা হয়।

এছাড়া প্রোগ্রাম নির্বাহের সময় অন্তর্বর্তীকালীন ফলাফলকে এ ধরনের স্মৃতি অংশে সংরক্ষণ করা হয়। তথ্যকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য সহায়ক স্মৃতির প্রয়োজন হয়। র‍্যাম হচ্ছে প্রধান স্মৃতি, হার্ডডিস্ক ও ফ্লপি ডিস্ক হচ্ছে সহায়ক স্মৃতি।

আউটপুট ইউনিট :-

আউটপুট ইউনিট কম্পিউটারের প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল ব্যবহারকারীর কাছে উপস্থাপন করে। আউটপুট ইউনিটের এ ধরনের কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের আউটপুট ডিভাইস ব্যবহৃত হয়।

মনিটর, প্রিন্টার, প্লটার, স্পিকার, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ইত্যাদি হলো আউটপুট ডিভাইসের উদাহরণ। এছাড়া হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইভ ইত্যাদিতেও ফলাফল রেকর্ড করে রাখা যায়।

যখন কোনো আউটপুট কাগজে ছাপা হয় তখন তাকে হার্ডকপি বলে এবং যখন মনিটরে দেখা হয় তাকে সফটকপি বলে।

আরও পড়ুন :- মেমরি কাকে বলে?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ