ব্যবসায়ের উৎপত্তির ইতিহাস শুরু হয় সেই সুদূর প্রাচীন কালেই। সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষ প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে জীবন ধারণ করতো। পৃথিবীতে তখন মানুষের সংখ্যা ছিল কম এবং প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে প্রাপ্ত ফলমূলই তাদের ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য যথেষ্ট ছিল। মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের প্রয়োজনেও বৈচিত্র্য আসতে শুরু করে। নিজেদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী ছাড়া অন্যান্য পণ্যসামগ্রীর অভাব দেখা দিতে শুরু করলো। অভাব পূরণের স্বার্থেই প্রয়োজন দেখা দিল পণ্য বিনিময়ের।
দিন গড়িয়ে যায়, মানুষের রুচির পরিবর্তন আসে। মুদ্রা ব্যবস্থার প্রচলন হয়। শিল্পক্ষেত্রেও দেখা দেয় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে। ব্যবসায় ধীরে ধীরে আধুনিক রূপ পরিগ্রহ করে।
ব্যবসায়ের এ ক্রমোন্নয়নকে আমরা তিনটি যুগে বিভক্ত করবো এবং পুরো বিবর্তনকে কয়েকটি স্তরে বিভাজন করে আলোচনা করবো:
প্রাচীন যুগে মানুষ প্রকৃতি-নির্ভর জীবনযাপন করত। প্রকৃতি প্রদত্ত ফলমূল খেয়ে এবং শিকার কার্য করে তারা জীবন ধারণ করত। অধিকাংশ মানুষ ছিল যাযাবর জীবন ব্যবস্থায় অভ্যস্ত। কেউ কেউ সমাজবদ্ধভাবে বাস করলেও ব্যবসায়ের প্রচলন তখন ছিল না।
(খ) বিনিময় স্তর (Exchange stage) :-
ব্যবসাদের শুরু মূলত এ স্তরেই যাযাবর ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে মানুষ পরিবার কেন্দ্রিক উৎপাদন শুরু করে। শুরু করে পণ্য বিনিময় কার্য। এভাবেই Barter system বা পণ্য বিনিময় ব্যবস্থার র্যাপক প্রচলন ঘটে। তবে এ ব্যবস্থা স্থায়ী আসন গাড়তে সক্ষম হয়নি।
Barter system বা পণ্য বিনিময় ব্যবস্থা অকার্যকর হবার ফলে মানুষ বিনিময়ের বিকল্প পন্থা বের করতে সচেষ্ট হয়। প্রথম দিকে মানুষ মূল্যবান শামুক, ঝিনুক, পাথর, কড়ি এ সবকেই বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। পরবর্তীতে শুরু হয় ধাতব মুদ্রা যেমন তামা, ব্রোঞ্জ, সোনা, রূপা ইত্যাদির ব্যবহার।
দ্রব্য বিনিময়ের সমস্যা দূরীকরণের জন্য কালক্রমে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে শুরু হয় মুদ্রার প্রচলন। শাসক শ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতায় এ ব্যবস্থার প্রচলন হয়। ফলে ব্যবসায় কার্য ছাড়াও শ্রমিকদের মজুরি প্রদান, খাজনা ও কর আদায় এতে সহজতর হয়।
(খ) বাজার ব্যবস্থার উদ্ভব (Growth of market system) :-
মুদ্রা ব্যবস্থার প্রসারের ফলে ব্যবসায় আরও বিস্তৃতি লাভ করে। বিনিময়ের জন্য তখন প্রয়োজন হয় হাটবাজারের বাজার হচ্ছে এমন একটি কেন্দ্র যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা সমবেত হয়ে তাদের উৎপাদিত ও প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় ও ক্রয়ের সুযোগ পায়।
বাজার সম্প্রাসরণের ফলে গড়ে ওঠে বড় বড় ব্যবসায় কেন্দ্র ও শহর বন্দর। পণ্য পরিবহনের জন্য হল ও নৌপথের অধিক ব্যবহার শুরু হয়। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সৃষ্টি হলো Merchant guild (বণিক সমবায় সংঘ), Craft Guild (কারিগরি সমবায় সংঘ্য) ইত্যাদি ব্যবসায়ী জোটের।
(গ) ঔপনিবেশিক স্তর (Colonial stage) :-
মধ্যযুগে পৃথিবীর বিভিন্ন জনপদে ব্যবসায়ের বিস্তৃতি ঘটলেও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে তার ব্যাপক সমৃদ্ধি ঘটে। ব্যবসায়ীগণ তাদের পণ্যের অধিক প্রসারের জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজতে থাকে।
কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার ও ভাস্কো-ডি-গামার ভারত মহাদেশ আবিষ্কার নৌপথে ব্যবসায়ের সম্প্রাসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সময়ে ইউরোপের অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উপনিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে প্রভুত্ব স্থাপনে সচেষ্ট হয়।
ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, আমেরিকায় হাডসন কোম্পানি, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে নেডাল্ড কোম্পানি এ ধরনের ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা কায়েমে তাদের ব্যাবসাবাণিজ্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিস্তার ঘটায়।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে বিশ্বের সর্বত্র ব্যবসায়িক যোগযোগ সাধিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আজ কম্পিউটারভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ক্রয় বিক্রয় কার্যও সম্পাদিত হচ্ছে।
দিন গড়িয়ে যায়, মানুষের রুচির পরিবর্তন আসে। মুদ্রা ব্যবস্থার প্রচলন হয়। শিল্পক্ষেত্রেও দেখা দেয় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে। ব্যবসায় ধীরে ধীরে আধুনিক রূপ পরিগ্রহ করে।
ব্যবসায়ের এ ক্রমোন্নয়নকে আমরা তিনটি যুগে বিভক্ত করবো এবং পুরো বিবর্তনকে কয়েকটি স্তরে বিভাজন করে আলোচনা করবো:
১. প্রাচীন যুগ (Ancient period) :-
(ক) আদিম স্তর (Primitive stage) :-প্রাচীন যুগে মানুষ প্রকৃতি-নির্ভর জীবনযাপন করত। প্রকৃতি প্রদত্ত ফলমূল খেয়ে এবং শিকার কার্য করে তারা জীবন ধারণ করত। অধিকাংশ মানুষ ছিল যাযাবর জীবন ব্যবস্থায় অভ্যস্ত। কেউ কেউ সমাজবদ্ধভাবে বাস করলেও ব্যবসায়ের প্রচলন তখন ছিল না।
(খ) বিনিময় স্তর (Exchange stage) :-
ব্যবসাদের শুরু মূলত এ স্তরেই যাযাবর ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে মানুষ পরিবার কেন্দ্রিক উৎপাদন শুরু করে। শুরু করে পণ্য বিনিময় কার্য। এভাবেই Barter system বা পণ্য বিনিময় ব্যবস্থার র্যাপক প্রচলন ঘটে। তবে এ ব্যবস্থা স্থায়ী আসন গাড়তে সক্ষম হয়নি।
২. মধ্যযুগ (Middle age) :-
(ক) মুদ্রার ব্যবহার (Use of coin) :-Barter system বা পণ্য বিনিময় ব্যবস্থা অকার্যকর হবার ফলে মানুষ বিনিময়ের বিকল্প পন্থা বের করতে সচেষ্ট হয়। প্রথম দিকে মানুষ মূল্যবান শামুক, ঝিনুক, পাথর, কড়ি এ সবকেই বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। পরবর্তীতে শুরু হয় ধাতব মুদ্রা যেমন তামা, ব্রোঞ্জ, সোনা, রূপা ইত্যাদির ব্যবহার।
আরও পড়ুন:- রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় কাকে বলে?
দ্রব্য বিনিময়ের সমস্যা দূরীকরণের জন্য কালক্রমে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে শুরু হয় মুদ্রার প্রচলন। শাসক শ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতায় এ ব্যবস্থার প্রচলন হয়। ফলে ব্যবসায় কার্য ছাড়াও শ্রমিকদের মজুরি প্রদান, খাজনা ও কর আদায় এতে সহজতর হয়।
(খ) বাজার ব্যবস্থার উদ্ভব (Growth of market system) :-
মুদ্রা ব্যবস্থার প্রসারের ফলে ব্যবসায় আরও বিস্তৃতি লাভ করে। বিনিময়ের জন্য তখন প্রয়োজন হয় হাটবাজারের বাজার হচ্ছে এমন একটি কেন্দ্র যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা সমবেত হয়ে তাদের উৎপাদিত ও প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় ও ক্রয়ের সুযোগ পায়।
বাজার সম্প্রাসরণের ফলে গড়ে ওঠে বড় বড় ব্যবসায় কেন্দ্র ও শহর বন্দর। পণ্য পরিবহনের জন্য হল ও নৌপথের অধিক ব্যবহার শুরু হয়। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সৃষ্টি হলো Merchant guild (বণিক সমবায় সংঘ), Craft Guild (কারিগরি সমবায় সংঘ্য) ইত্যাদি ব্যবসায়ী জোটের।
(গ) ঔপনিবেশিক স্তর (Colonial stage) :-
মধ্যযুগে পৃথিবীর বিভিন্ন জনপদে ব্যবসায়ের বিস্তৃতি ঘটলেও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে তার ব্যাপক সমৃদ্ধি ঘটে। ব্যবসায়ীগণ তাদের পণ্যের অধিক প্রসারের জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজতে থাকে।
কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার ও ভাস্কো-ডি-গামার ভারত মহাদেশ আবিষ্কার নৌপথে ব্যবসায়ের সম্প্রাসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সময়ে ইউরোপের অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উপনিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে প্রভুত্ব স্থাপনে সচেষ্ট হয়।
ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, আমেরিকায় হাডসন কোম্পানি, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে নেডাল্ড কোম্পানি এ ধরনের ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা কায়েমে তাদের ব্যাবসাবাণিজ্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিস্তার ঘটায়।
আরও পড়ুন:- সমবায় সমিতির বৈশিষ্ট্য ও উদ্দেশ্য লিখ?
১৭৫০ সাল থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত ছিল শিল্প বিপ্লব কাল যা ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে বিশল পরিবর্তন সাধন করে। এ সময়ের কতিপয় যুগান্তকারী আবিষ্কার, যেমন- জেমস ওয়াট এর বাষ্পীয় ইঞ্জিন, হারমিনের স্পিনিং জেলি, কে (Kay) এর পাওয়ার হুম, আর্করাইটের স্পিনিং ফ্রেম ইত্যাদি শিল্পের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে অকল্পনীয় ভূমিকা রাখে।
শিল্প বিপ্লবের ফলে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবসায়ের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়। গড়ে ওঠে নতুন নতুন শিল্প কারখানা। যান্ত্রিক শক্তির বলে উৎপাদন বেড়ে যায় বহুগুণে। ব্যবসায়ের পারিবারিক উৎপাদন ব্যবস্থা কারখানায় স্থানান্তরিত হয়। বিকাশ ঘটে গুদামজাতকরণ, ব্যাংকিং, বিমা, বিজ্ঞাপনী সংস্থা ইত্যাদি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের। ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বিস্তার লাভ করে এক দেশ থেকে অন্য দেশে।
(খ) প্রযুক্তি ও তথ্য ব্যবস্থা স্তর (Stage of technology and information system) :-
শিল্প বিপ্লব পরবর্তী স্তরে শিল্প ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়ন এর ফলে ব্যবসায় বাণিজ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়; উৎপাদিত হয় নতুন নতুন পণ্য। প্রযুক্তির আধুনিকায়নের ফলে ব্যবসায়ের পরিধি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যাপ্তি লাভ করছে।
প্রযুক্তির ছোঁয়া ক্ষুদ্রায়তন ব্যবসায়ের পাশাপাশি বৃহদায়তনের যৌথ মূলধনী ব্যবসায় সৃষ্টিতে সহায়ক হয়েছে। সাম্প্রতিক কালে কম্পিউটারভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থা আধুনিক যুগের ব্যবসায় বাণিজে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
আরও পড়ুন:- সংগঠন কাকে বলে?
৩. আধুনিক যুগ (Modern period) :-
(ক) শিল্প বিপ্লব (Industrial revolution) :-১৭৫০ সাল থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত ছিল শিল্প বিপ্লব কাল যা ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে বিশল পরিবর্তন সাধন করে। এ সময়ের কতিপয় যুগান্তকারী আবিষ্কার, যেমন- জেমস ওয়াট এর বাষ্পীয় ইঞ্জিন, হারমিনের স্পিনিং জেলি, কে (Kay) এর পাওয়ার হুম, আর্করাইটের স্পিনিং ফ্রেম ইত্যাদি শিল্পের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে অকল্পনীয় ভূমিকা রাখে।
শিল্প বিপ্লবের ফলে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবসায়ের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়। গড়ে ওঠে নতুন নতুন শিল্প কারখানা। যান্ত্রিক শক্তির বলে উৎপাদন বেড়ে যায় বহুগুণে। ব্যবসায়ের পারিবারিক উৎপাদন ব্যবস্থা কারখানায় স্থানান্তরিত হয়। বিকাশ ঘটে গুদামজাতকরণ, ব্যাংকিং, বিমা, বিজ্ঞাপনী সংস্থা ইত্যাদি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের। ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বিস্তার লাভ করে এক দেশ থেকে অন্য দেশে।
(খ) প্রযুক্তি ও তথ্য ব্যবস্থা স্তর (Stage of technology and information system) :-
শিল্প বিপ্লব পরবর্তী স্তরে শিল্প ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়ন এর ফলে ব্যবসায় বাণিজ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়; উৎপাদিত হয় নতুন নতুন পণ্য। প্রযুক্তির আধুনিকায়নের ফলে ব্যবসায়ের পরিধি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যাপ্তি লাভ করছে।
প্রযুক্তির ছোঁয়া ক্ষুদ্রায়তন ব্যবসায়ের পাশাপাশি বৃহদায়তনের যৌথ মূলধনী ব্যবসায় সৃষ্টিতে সহায়ক হয়েছে। সাম্প্রতিক কালে কম্পিউটারভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থা আধুনিক যুগের ব্যবসায় বাণিজে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
আরও পড়ুন:- সংগঠন কাকে বলে?
ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে বিশ্বের সর্বত্র ব্যবসায়িক যোগযোগ সাধিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আজ কম্পিউটারভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ক্রয় বিক্রয় কার্যও সম্পাদিত হচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.