শ্লেষ অলংকার কাকে বলে :-
একটি শব্দের একটিমাত্র উচ্চারণে একাধিক অর্থ প্রকাশ পেলে যে শ্রুতিমাধুর্যের সৃষ্টি হয়, তার নাম শ্লেষ (শব্দশ্লেষ) অলঙ্কার।শ্লেষ অলংকারের বৈশিষ্ট্য :-
১. উচ্চারিত শব্দটিকে না ভেঙে একাধিক অর্থ পাওয়া যেতে পারে।২. উচ্চারিত শব্দটিকে না ভেঙে একটি অর্থ এবং ভেঙে আর-একটি অর্থ পাওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন :- অর্থান্তনাস অলংকার কি?
শ্লেষ অলংকার কত প্রকার ও কি কি :-
বাংলায় শেষ বলতে শব্দ শ্লেষকেই বোঝায়। এই শ্লেষ বা শব্দশ্লেষ অলংকার দু-রকমের। যথা-- অভঙ্গ শ্লেষ এবং
- সভঙ্গ শ্লেষ।
অভঙ্গ শ্লেষ কাকে বলে :-
যে শ্লেষ অলংকারে উচ্চারিত শব্দটিকে না ভেঙে একাধিক অর্থ পাওয়া যায়, তার নাম অভঙ্গ শ্লেষ।উদাহরণ:
মধুহীন করো নাগো তব মনঃকোকনদে। - মধুসূদন
ব্যাখ্যা :
'বঙ্গভূমির প্রতি' কবিতা থেকে উদ্ধৃত এই চরণটিতে বিদায়-মুহূর্তে কবি মধুসূদন মাতৃভূমির কাছে বিস্মৃত না হবার যে আবেদন রাখছেন, সেই প্রসঙ্গে 'মধু’ শব্দটিকে দুটি অর্থে তিনি প্রয়োগ করছেন। প্রথম অর্থ 'কবি মধুসূদন দত্ত', দ্বিতীয় অর্থ ‘মউ'। একটি প্রয়োগে শব্দটিকে না ভেঙেই দুটি অর্থ পাওয়া গেল। অতএব, এটি অভঙ্গ শ্লেষ।
আরও পড়ুন :- ব্যতিরেক অলংকার কি?
সভঙ্গ শ্লেষ কাকে বলে :-
যে শ্লেষ অলংকারে উচ্চারিত শব্দটিকে না ভেঙে একটি অর্থ এবং ভেঙে আর-একটি অর্থ পাওয়া যায়, তার নাম সভঙ্গ শ্লেষ।উদাহরণ :
অপরূপ রূপ কেশবে -দাশরথি রায়
ব্যাখ্যা :
উদ্ধৃত চরণে 'কেশবে' শব্দটিকে না ভাঙলে এর অর্থ কৃষ্ণ। শব্দটিকে 'কে' - ‘শবে' এই দুটি অংশে ভাঙলে এর আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায়-মৃতদেহের ওপর কে? এর নিহিত অর্থ 'শবরূপী শিবের ওপর দাঁড়িয়ে যে নারী, তিনি কে? এর উত্তর 'কালী'। আর 'কেশবে' অর্থ কৃয়। 'কেশবে' শব্দটিকে না ভেঙে একটি অর্থ আর ভেঙে আর-একটি অর্থ পাওয়া গেল বলে এটি সভঙ্গ শ্লেষ।
আরও পড়ুন :- সমাসোক্তি অলংকার কি?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.