পাঠ্যসূচি কি বা কাকে বলে :-
ইংরেজি Syllabus এর বাংলা আভিধানিক অর্থ হলো পাঠ্যসূচি, শিক্ষাক্রমের অংশ, সংক্ষিপ্তসার, অধ্যয়নসূচির তালিকা ইত্যাদি।সুতরাং সহজভাবে বলা যায়, সিলেবাস হলো শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুর তালিকা বা সূচি। অর্থাৎ নির্দিষ্ট শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট বিষয়ের সূচিবদ্ধ সংক্ষিপ্ত রূপরেখাকেই পাঠ্যসূচি বা Syllabus বলে।
সিলেবাস শ্রেণিভিত্তিক হয়। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে শ্রেণিশিক্ষক বা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষাক্রমের আলোকে পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করেন। আমাদের দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও বিভিন্ন শিক্ষাস্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচি বা সিলেবাস পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ও জাতীয় শিক্ষাক্রম কর্তৃক প্রণীত হয়।
পাঠ্যপুস্তক কি বা কাকে বলে :-
শিক্ষা ক্ষেত্রে নির্ধারিত শ্রেনীর নির্ধারিত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী রচিত পড়ার পুস্তককেই পাঠ্যপুস্তক বলা হয়।শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে পরিচিত এবং বহুল ব্যবহৃত একটি সহায়ক সামগ্রী হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশসমূহের শ্রেণিকক্ষে যেখানে অন্যান্য শিখন সামগ্রীর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, পাঠ সহায়ক উপকরণেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে, সেখানে পাঠ্যপুস্তকই একমাত্র ও প্রধান শিক্ষা উপকরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিশ্বের প্রায় সব দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্যপুস্তকের বহুল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। সকল দেশেই বিশেষ কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে পাঠ্যপুস্তক লেখা হয়। আর এ পাঠ্যপুস্তক রচনায় অনুসরণ করা হয় একটি নির্দিষ্ট শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি।
পাঠ্যপুস্তকের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা যায়- A textbook is a book designed for classroom use, carefully prepared by experts in the field and equipped with the usual teaching devices.
উদ্দেশ্যমুখী শিক্ষাক্রমের আলোকে বাছাইকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী রচিত বই বা পুস্তককে পাঠ্যপুস্তক বলা হয়।
প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা হচ্ছে উদ্দেশ্যমূলক। সমাজ ও দেশের চাহিদাকে সামনে রেখে নির্বাচিত শিক্ষার জাতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনের জন্য মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পাঠ্যবিষয়, পাঠ্যসূচি ও শিক্ষাক্রমপ্রণয়ন করা হয়। আর উদ্দেশ্যমুখী এ শিক্ষাক্রমের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাছাইকৃত পাঠ্যসূচি নিয়ে শিক্ষা পদ্ধতির উপযোগী করে উপস্থাপনকারী পুস্তককে পাঠ্যপুস্তক বলা হয়।
পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনা কি :-
পর্যালোচনা শব্দের আভিধানিক অর্থ অনুশীলন, 'সমস্ত বিষয় চর্চা', 'সর্বতোভাবে আলোচনা বা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করাকে বোঝায়।পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনা বলতে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়-বৈশিষ্ট্য, অঙ্গসংগঠন, ধারাবাহিকতা রক্ষা, উপস্থাপন কৌশল, মুখপাঠ্যতা ইত্যাদি বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণকে বোঝায়।
আরও পড়ুন :- পঠন কাকে বলে?
পাঠ্যপুস্তকের গুরুত্ব :-
শিক্ষাক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য পাঠ্যপুস্তক অপরিহার্য। পাঠ্যপুস্তক ছাড়া পাঠ্যসূচিও অর্থহীন হয়ে পড়ে আমাদের দেশে এখনও অনেকে পাঠ্যপুস্তককে শিক্ষাক্রম মনে করেন। এটি শিক্ষাক্রম সম্পর্কে ধারণা না থাকা বা পাঠ্যপুস্তকের গুরুত্ব অনুধাবন করতে না পারা থেকে হতে পারে।আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই পাঠ্যপুস্তকের উপর নির্ভরশীল। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক পাঠ্যপুস্তক অনুসরণ করেই মূলত পাঠদান করে থাকেন। শিক্ষার্থীরা নিজে নিজে পাঠ্যপুস্তক পড়ে জ্ঞান লাভ করে এবং শিক্ষকপ্রদত্ত বাড়ির কাজ তৈরি করে।
পিতা-মাতা পাঠ্যপুস্তক দেখে সন্তানদের লেখাপড়ার সাহায্য করে থাকেন। শিক্ষার্থীদের অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতার মূল্যায়ন করার জন্য পরীক্ষকেরও পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজন হয়।
তাছাড়া শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক প্রশিক্ষকগণ পাঠ্যপুস্তক নিয়ে নানা রকম গবেষণা করেন এবং তাঁদের সুদূরপ্রসারী চিন্তা ভাবনা ও বক্তব্যকে শিক্ষার্থীদের সামনে পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমেই তুলে ধরেন।
পাঠ্যপুস্তকের বৈশিষ্ট্য :-
শিক্ষার পূর্বনির্ধারিত বিষয়ভিত্তিক সাধারণ ও বিশেষ উদ্দেশ্যসমূহকে সামনে রেখে নির্বাচন করা হয় শিখনফল। শিখনফলের নিরিখে তালিকাভুক্ত করা হয় ভাববস্তুর। ভাববস্তুর আলোকে নির্ণীত হয় বিষয়বস্তু। আর বিষয়বস্তুর সামগ্রিক চিত্র হিসেবেই লেখা হয়ে থাকে পাঠ্যপুস্তক।আরও পড়ুন :- বক্তৃতা পদ্ধতি কি?
পাঠ্যপুস্তকের কতিপয় সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক, কেননা এ পাঠ্যপুস্তকই শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাক্রম ও শ্রেণিকক্ষের মধ্যে সেতুবন্ধন বা যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে এবং জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিম্নে পাঠ্যপুস্তকের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করা হলো -
১. সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মৌলিক ধারণা ও নীতি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হয়।
2. পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে শিক্ষার্থীদের বয়স, সামর্থ্য, ধারণক্ষমতা ও মানসিক পরিপকৃতা বিবেচনা করা হয়।
৩. পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট পাঠ্যসূচি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়।
8. পাঠ্যপুস্তকের অধ্যায়গুলোর বিন্যাস শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় সহায়ক হবে।
৫. বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের চাহিদা আগ্রহ পুরণ করে থাকে।
৬. পাঠ্যপুস্তকটি মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে সহায়ক হবে।
পাঠ্যপুস্তকের কতিপয় সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক, কেননা এ পাঠ্যপুস্তকই শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাক্রম ও শ্রেণিকক্ষের মধ্যে সেতুবন্ধন বা যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে এবং জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিম্নে পাঠ্যপুস্তকের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করা হলো -
১. সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মৌলিক ধারণা ও নীতি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হয়।
2. পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে শিক্ষার্থীদের বয়স, সামর্থ্য, ধারণক্ষমতা ও মানসিক পরিপকৃতা বিবেচনা করা হয়।
৩. পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট পাঠ্যসূচি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়।
8. পাঠ্যপুস্তকের অধ্যায়গুলোর বিন্যাস শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় সহায়ক হবে।
৫. বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের চাহিদা আগ্রহ পুরণ করে থাকে।
৬. পাঠ্যপুস্তকটি মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে সহায়ক হবে।
৭. পাঠ্যপুস্তক বিতর্কিত ধ্যান ধারণা মুক্ত হবে।
৮. শিক্ষাক্রমে নির্ধারিত উদ্দেশ্য ও শিখনফলের আলোকে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু নির্বাচিত হবে।
৯. পাঠ্যপুস্তকের আকার, আয়তন, ডিজাইন, বাধাই, মুদ্রণ, ছাপার অক্ষরের আকার, কাগজের মান, দাম ইত্যাদি যুক্তিসঙ্গত ও উপযোগী হবে।
আরও পড়ুন :- বদ্ধ প্রশ্ন কাকে বলে?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.