ব্যতিরেক অলংকার কাকে বলে :-
উপমান অপেক্ষা উপমেয়ের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ দেখানো হলে যে অর্থ-সৌন্দর্য ফুটে ওঠে, তার নাম ব্যতিরেক অলংকার।ব্যতিরেক অলংকারের বৈশিষ্ট্য :-
১. উপমান অপেক্ষা উপমেয় উৎকৃষ্ট হতে পারে। তখন অলংকার হবে উৎকর্ষাত্মক ব্যতিরেক।
২. উপমান অপেক্ষা উপমেয় নিকৃষ্ট হতে পারে। তখন অলংকার হবে অপকর্ষাত্মক ব্যতিরেক।
৩. অধিক চেয়ে অপেক্ষা, নিন্দি-নিন্দিত-নিন্দু জিনি-জিতল, গঞ্জি-গঞ্জন, লাজ-লজ্জা, হার ইত্যাদি তারতম্যবোধক শব্দের প্রয়োগে উৎকর্ষ-অপকর্য বোঝানো হয়।
২. উপমান অপেক্ষা উপমেয় নিকৃষ্ট হতে পারে। তখন অলংকার হবে অপকর্ষাত্মক ব্যতিরেক।
৩. অধিক চেয়ে অপেক্ষা, নিন্দি-নিন্দিত-নিন্দু জিনি-জিতল, গঞ্জি-গঞ্জন, লাজ-লজ্জা, হার ইত্যাদি তারতম্যবোধক শব্দের প্রয়োগে উৎকর্ষ-অপকর্য বোঝানো হয়।
আরও পড়ুন :- রূপক অলংকার কাকে বলে?
৪. সাদৃশাবাচক শব্দের প্রয়োগও ক্ষেত্রবিশেষে থাকে।
৫. কখনো কখনো বর্ণনায় অন্তর্নিহিত থাকে উৎকর্ষ-অপকর্য, ভাব বা অর্থ থেকে বুঝে নিতে হয়।
৬. ব্যতিরেক অলংকারে উপমেয়-উপমানের ভেদ মেনে নিয়ে তারতম্য দেখানো হয়। এটি সাদৃশ্যের দ্বিতীয় স্তর। (প্রথম স্তর উপমায়, যেখানে কেবল সাদৃশ্যটুকু দেখানো হয় )
৫. কখনো কখনো বর্ণনায় অন্তর্নিহিত থাকে উৎকর্ষ-অপকর্য, ভাব বা অর্থ থেকে বুঝে নিতে হয়।
৬. ব্যতিরেক অলংকারে উপমেয়-উপমানের ভেদ মেনে নিয়ে তারতম্য দেখানো হয়। এটি সাদৃশ্যের দ্বিতীয় স্তর। (প্রথম স্তর উপমায়, যেখানে কেবল সাদৃশ্যটুকু দেখানো হয় )
কলকল্লোলে লাজ দিল আজ নারীকন্ঠের কাকলি। —রবীন্দ্রনাথ (কথা/ সামান্য ক্ষতি)
ব্যাখ্যা :
উদ্ধৃত চরণে উপমেয় 'নারীকণ্ঠের কাকলি, উপমান 'কলকল্লোল'। এখানে সাদৃশ্যবাচক শব্দ নেই, আছে তারতম্য বোধক 'লাজ দিল' কথাটি—এর সাহায্যে উৎকর্ষ-অপকর্ষ বোঝা যাচ্ছে।
উপমেয় 'নারীকন্ঠের কাকলি লজ্জা দিল' উপমান 'কলকল্লোল'কে। লজ্জা যে দেয়, সে তার শ্রেষ্ঠত্ব বা উৎকর্ষের কারণেই দেয়। এখানে ‘নারীকন্ঠের কাকলি’রই উৎকর্ষ। কিন্তু, কোন গুণে এই উৎকর্ষ, সে কারণটির স্পষ্ট উল্লেখ না থাকলেও তা অনুমান করা যায়।
আরও পড়ুন :- যমক অলংকার কি?
কলধ্বনি নারীর কন্ঠেও আছে, কল্লোলের (ঢেউ) মৃদু আঘাতেও আছে। এই ধ্বনির উচ্চতায় ‘কলকল্লোল অপেক্ষা নারীকণ্ঠের কাকলি'রই উৎকর্ষ। উপমান অপেক্ষা উপমেঘের উৎকর্ষ দেখানো হয়েছে বলে এ উদাহরণে উৎকর্ষাত্মক ব্যতিরেক অলংকার হয়েছে।
উদাহরণ (ii)
কি ছার ইহার কাছে, হে দানবপতি
ময়, মণিময় সভা, ইন্দ্রপ্রস্থে যাহা
স্বহস্তে গড়িলা তুমি তুষিতে পৌরবে। —মধুসূদন (মেঘনাদবধকার / ১ম সর্গ)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা :
উপমেয় 'রাবণের রাজসভা' (ইহ), উরমান 'ইন্দ্রপ্রস্থের পাণ্ডব-সভা'। দুটি সভাই ঐশ্বর্যময়। তবে, তারতম্য-বোধক ‘ছার' শব্দের প্রয়োগে ঐশ্বর্যের পরিমাণের দিক থেকে দুটি রাজ্যসভার উৎকর্ষ অপকর্ষ বোঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে 'রাবণের রাজসভারই উৎকর্ষ। উপমান অপেক্ষা উপমেয়ের উৎকর্ষ দেখানো হয়েছে বলে এখানকার অলংকার উৎকর্ষাত্মক ব্যতিরেক।
কলধ্বনি নারীর কন্ঠেও আছে, কল্লোলের (ঢেউ) মৃদু আঘাতেও আছে। এই ধ্বনির উচ্চতায় ‘কলকল্লোল অপেক্ষা নারীকণ্ঠের কাকলি'রই উৎকর্ষ। উপমান অপেক্ষা উপমেঘের উৎকর্ষ দেখানো হয়েছে বলে এ উদাহরণে উৎকর্ষাত্মক ব্যতিরেক অলংকার হয়েছে।
উদাহরণ (ii)
কি ছার ইহার কাছে, হে দানবপতি
ময়, মণিময় সভা, ইন্দ্রপ্রস্থে যাহা
স্বহস্তে গড়িলা তুমি তুষিতে পৌরবে। —মধুসূদন (মেঘনাদবধকার / ১ম সর্গ)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা :
উপমেয় 'রাবণের রাজসভা' (ইহ), উরমান 'ইন্দ্রপ্রস্থের পাণ্ডব-সভা'। দুটি সভাই ঐশ্বর্যময়। তবে, তারতম্য-বোধক ‘ছার' শব্দের প্রয়োগে ঐশ্বর্যের পরিমাণের দিক থেকে দুটি রাজ্যসভার উৎকর্ষ অপকর্ষ বোঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে 'রাবণের রাজসভারই উৎকর্ষ। উপমান অপেক্ষা উপমেয়ের উৎকর্ষ দেখানো হয়েছে বলে এখানকার অলংকার উৎকর্ষাত্মক ব্যতিরেক।
আরও পড়ুন :- বক্রোক্তি অলংকার ৃ
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.