আরোহী পদ্ধতি কি বা কাকে বলে :-
সুদীর্ঘকাল ধরে আরোহী পদ্ধতি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ইংল্যান্ডের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ লর্ড বেকন এ পদ্ধতির উদ্ভাবক। এ পদ্ধতির মূল দর্শন হলো উদাহরণ থেকে সূত্রে জানা থেকে অজানায়, সহজ থেকে কঠিন বিষয়ে, বিশেষ সত্য থেকে সাধারণ সত্যে এবং মূর্ত থেকে বিমূর্ত বিষয়ে গমন।আরও পড়ুন :- অবরোহী পদ্ধতি কি?
এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পরিচিত পরিবেশ বা অভিজ্ঞতা থেকে কতকগুলো উদাহরণ পরীক্ষা বা পর্যালোচনা করে সে সকল উদাহরণ থেকে যুক্তির মাধ্যমে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়।
যেমন- রাতুলের বাবা মারা গিয়েছেন। তার আগে তার দাদাও মারা গিয়েছেন। গত বছর তার চাচা মারা গিয়েছেন। এ সব উদাহরণ থেকে প্রমাণিত হয় যে, মৃত্যুর হাত থেকে কেউ বাঁচতে পারে না। অতএব আমরা বলতে পারি 'মানুষ মরণশীল'।
বাংলা ব্যাকরণ পাঠদানের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি বেশ উপযোগী। এ পদ্ধতিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিচিত পরিবেশ থেকে উদাহরণগুলো বাছাই করে নিয়ে পাঠে অগ্রসর হতে হয়। ফলে পাঠ উপস্থাপন সফল, আনন্দদায়ক ও কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন :- পেশাগত উন্নয়ন বলতে কি বুঝায়?
আরোহী পদ্ধতির সুবিধা :-
- বিশেষ সত্য থেকে সাধারণ সত্যে উপনীত হওয়া আরোহী পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্য যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিষয়বস্তু উপলব্ধিতে সহজ হয়।
- এ পদ্ধতিতে উপস্থাপিত উদাহরণ/ঘটনাগুলো শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে এবং বাস্তব ঘটনার সঙ্গে সামঞ্জস্য।
- শিক্ষার্থীদের নিজের অভিজ্ঞতা ও ধারণা ব্যক্ত করার সুযোগ থাকে।
- নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারে বলে পাঠে আনন্দ পায়।
- মুখস্থ বিদ্যায় পাশ করার বিড়ম্বনা থেকে শিক্ষার্থীরা মুক্তি পায়।
- শিক্ষার্থীদের চিন্তার দ্বার উন্মোচিত হয় এবং তাদের অনুসন্ধানী হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
আরোহী পদ্ধতির অসুবিধা :-
- জীবন চলার পথে অসংখ্য সমস্যার সমাধান এ পদ্ধতি দ্বারা সম্ভব নয়।
- বাংলা বিষয়ের পাঠ উপস্থাপনের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অবরোহী পদ্ধতির প্রাধান্য দেখা যায়। সীমিত কিছু ক্ষেত্রে আরোহী পদ্ধতি কার্যকর।
- এ পদ্ধতি দীর্ঘ এবং সময়সাপেক্ষ।
- ক্ষীণ মেধার শিক্ষার্থীরা এতে আনন্দ ও আগ্রহ কম পায়।
- বাংলা বিষয়ের শিক্ষকের এ পদ্ধতির শর্তসমূহ জানা না থাকলে এর প্রয়োগ ফলপ্রসূ হয় না।
আরও পড়ুন :- গাঠনিক পদ্ধতি কি?
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.