বাংলা বানান বলতে বোঝায় 'বর্ণন' বা বর্ণনা করা। অন্যভাবে বলা যায়, বানান হলো বুঝিয়ে বলা। লিখিত ভাষায় এই বলা স্বরবর্ণের পর স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণের পর ব্যঞ্জনবর্ণ অথবা স্বরবর্ণের পর ব্যঞ্জনবর্ণ বা ব্যঞ্জনবর্ণের পর স্বরবর্ণ যোগ করাকে বোঝায়।
যেমন- স্বরবর্ণ + ব্যঞ্জনবর্ণ : আম; ব্যঞ্জনবর্ণ + স্বরবর্ণ : মা (ম্ + আ); ব্যঞ্জনবর্ণ + স্বরবর্ণ + ব্যঞ্জনবর্ণ + ব্যঞ্জনবর্ণ : কষ্ট (ক্+অ+ষ্+ট্)।
বাংলা শুদ্ধ বানান শিখতে বা লিখতে গেলে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, পরিপূর্ণভাবে ধ্বনি অনুযায়ী বানান লেখার নিয়ম বিশ্বের কোনো ভাষায় নেই।
ধ্বনিতত্ত্ব অংশে আমরা দেখেছি যে, আমাদের ভাষায় সব বর্ণ সব ধ্বনির প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু সব বর্ণই আমাদের লিখনপদ্ধতির আশ্রয়।
আমাদের জানতে হবে কোথায় দীর্ঘস্বর (ঈ, ঊ), চন্দ্রবিন্দু (ঁ), কোথায় ন্, কোথায় ণ্, কোথায় শৃ স্ ষ্, কোথায় বিসর্গ (ঃ), কোথায় ঙ, ঞ, ক্ষ, ঘ, ঙ্গ, ক্ষ, ত, ৎ, হ্ম ইত্যাদি বসবে। এসবের ব্যবহার না জানলে বাংলা বানান ভুল হবে।
বাংলা ভাষায় বিভিন্ন উৎস থেকে শব্দ এসেছে, যেমন- সংস্কৃত, আরবি-ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি রয়েছে। বাংলায় আগত শব্দগুলো এসব শব্দের মূল উচ্চারণ এবং বাংলা ভাষার ধ্বনিব্যবস্থা অনুসারে সেগুলো লেখার প্রেরণা থেকেই উদ্ভাবিত হয় বাংলা বানানের নিয়ম।
এক্ষেত্রে প্রথম প্রচেষ্টা গ্রহণ করে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয় 'বাংলা' শব্দের বানানের নিয়ম।
পরবর্তীকালে বাংলা বানানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগী হয়েছে। বাংলাদেশ টেকস্ট বুক বোর্ড, বাংলা একাডেমি বানানরীতি তৈরি করেছে। টেকস্ট বুক বোর্ড ও বাংলা একাডেমির বানানরীতি এক হয়েছে। বাংলা একাডেমির বানানরীতি এখন সর্বত্র মানা হচ্ছে।
আরও পড়ুন :- এককথায় প্রকাশ বলতে কি বুঝায়?
তৎসম শব্দে :
অঙ্গুরি, অটবি, আবির, আশিস্, ঊষা, কিংবদন্তি, কুটির গণ্ডি, গ্রন্থাবলি, চিৎকার, তরণি, তরি, দেশি, পদবি, বিদেশি, ভ্রু, শ্রেণি, সারণি।
অতৎসম শব্দে :
আদমি, আপিল, আমিন, আলমারি, উকিল, উর্দু, কাজি, কারবারি, কারিগরি, কুমির, কেরানি, খ্রিষ্ট, খ্রিষ্টাব্দ, গরিব, গাজি, গাড়ি, গিন্নি, চাকরি, জরুরি, জানুয়ারি ডিগ্রি, দরকারি দাবি, দিঘি, ধুলো, নার্সারি, পড়শি, পদবি, বাড়ি, বাঁশি, বাঙালি, বে-আইনি, ভুতুড়ে মিস্ত্রি, মুলো, মেয়েলি, যিশু, রেশমি, লটারি, লাইব্রেরি, শাশুড়ি, শিকারি, সবজি, সরকারি, সুন্নি, হাঞ্জি, হিজরি।
২ - কয়েকটি স্ত্রীবাচক শব্দের শেষে ঈ-কার (ী) হবে। যেমন:
অভিনেত্রী, কর্ত্রী, কল্যাণী, কিশোরী, গাভী, গুণবতী, চণ্ডী, চতুর্দশী, ছাত্রী, জননী, তরুণী, দাসী, দুঃখিনী, দেবী, নারী, পত্নী, পিশাচী, বিদুষী, বুদ্ধিমতী, মাতামহী, মানবী, যুবতী, লক্ষ্মী, শ্রীমতী, সতী, সরস্বতী, হরিণী, হৈমন্তী।
৩ - ভাষা ও জাতির নামের শেষে ই-কার (ি) হবে। যেমন :
আফগানি, আরবি, ইংরেজি, ইরাকি, ইরানি, ইহুদি, কাশ্মিরি, জাপানি, তুর্কি, নেপালি, পাকিস্তানি, পাঞ্জাবি, ফরাসি, বাঙালি, সাঁওতালি, সিন্ধি, হিন্দি।
৪ - বিশেষণবাচক 'আলি'- প্রত্যয়যুক্ত শব্দে ই-কার (ি) হবে। যেমন:
চৈতালি, পুবালি, বর্ণালি, মিতালি, মেয়েলি, রূপালি, সোনালি।
আরও পড়ুন :- বিরামচিহ্ন কি? এর কাজ?
আনব, করত, খেলব, চলব, দেখত, ধরব, নাচব, পড়ব, বলত, মরব, মরাব, লড়ব, লিখব।
২ - বর্তমান অনুজ্ঞার সামান্যরূপে পদাস্তে ও-কার (ো) প্রদান করা যায়। যেমন :
আনো, করো, খেলো, চলো, দেখো, ধরো, নাচো, পড়ো, বলো, মারো, লড়ো, লেখো।
৩ - ‘আনো’ প্রত্যয়ান্ত শব্দের শেষে ও-কার (ো) হবে। যেমন:
করানো, খাওয়ানো, ঠ্যাঙানো, দেখানো, নামানো, পাঠানো, শোয়ানো।
৪ - অর্থ বা উচ্চারণ বিভ্রান্তির সুযোগ থাকলে কিছু বিশেষ্য, বিশেষণ ও অব্যয় শব্দে ও-কার (ো) দেওয়া আবশ্যক। যেমন :
যেমন - অন্তঃস্থ, দুঃখ, দুঃসহ, নিঃশব্দ, পুনঃপুন, স্বতঃস্ফূর্ত।
২ - পদান্তে বিসর্গ (ঃ) থাকবে না।
যেমন - ক্রমশ, দ্বিতীয়ত, প্রথমত, প্রধানত, বস্তুত, মূলত।
৩ - অভিধানসিদ্ধ হলে পদমধ্যস্থ বিসর্গ বর্জনীয়।
যেমন - দুস্থ, নিশ্বাস, নিস্পৃহ, বহিস্থ, মনস্থ।
কণ্টক, ঘণ্টা, নির্ঘণ্ট, বণ্টন, অকুণ্ঠ, আকণ্ঠ, উৎকণ্ঠা, উপকণ্ঠ, কণ্ঠ, কণ্ঠনালি, লুণ্ঠন, অকালকুষ্মাণ্ড, অণ্ড, কাল্ড, কান্ডারী, কুণ্ডল, খণ্ড, চণ্ডী, দণ্ড, পণ্ডিত, ভণ্ড, ভণ্ডামি।
২ - তৎসম শব্দে ঋ, ঋ-কার (ৃ), র, র-ফলা (), রেফ ( ), ষ, ক্ষ-এর পর মূর্ধন্য-ণ হয়।
যেমন - ঋণ, তৃণ, অরণ্য, ত্রাণ, বর্ণ, বিদূষণ, বিশেষণ, ক্ষণ, ক্ষণিক।
৩ - একই শব্দের মধ্যে ঋ, ঋ-কার, র, র-ফলা, রেফ, ষ, ক্ষ-এর যে কোনোটির পরে স্বরবর্ণ, ক-কৰ্গ, প-বর্গ এবং য, য়, হ, অনুস্বার (ং), – এই বর্ণগুলোর একটি বা একাধিক বর্ণ থাকলেও পরবর্তী ন-ধ্বনি মূর্ধন্য-ণ হয়।
যেমন - কৃপণ, নিরূপণ, অগ্রহায়ণ, অকর্মণ্য, নির্বাণ, সর্বাঙ্গীণ, অপেক্ষমাণ, বক্ষ্যমাণ।
৪ - প্র, পরা, পরি, নির- এই চারটি উপসর্গের পর নম্, নশ্, নী, নু, অন্, হন্ প্রভৃতি ধাতুর দন্ত্য-ন স্বলে মূর্ধন্য-ণ হয়।
যেমন -
যেমন - কর্ম, কার্য, পূর্ব, ফর্দ, মর্মর, শর্ত, সূর্য।
যেমন - অহংকার (অহম্ +কার), কিংকর, কিংবদন্তি, ঝংকার, ভয়ংকর, সংকল্প, সংকীর্ণ, সংগীত, সংঘ, সংঘাত, হুংকার।
২ - উপযুক্ত নিয়মে সন্ধিজাত না হলে, যুক্তব্যঞ্জনে ক-বর্গের পূর্বে স্ স্থানে ঙ (উয়ে)) হবে।
যেমন - আকাঙ্ক্ষা, অঙ্কুর, অঙ্গ, ইঙ্গিত, উচ্ছৃঙ্খল, কঙ্কাল, কাঙ্ক্ষিত, গঙ্গা, জঙ্গি, দাঙ্গা, পঙ্কজ, পঙ্গু, বঙ্গ, ভঙ্গি, লঙ্ঘন, শিক্ষাঙ্গন, সঙ্গী।
৩ - প্রত্যয় ও বিভক্তিহীন শব্দের শেষে (অনুস্বার) ব্যবহৃত হয়।
যেমন - আড়ং, ইদানীং, এবং, ঠ্যাং, ঢং, পালং, ফড়িং, বরং, রং, শিং।
৪ - তবে অনুষারযুক্ত শব্দে প্রত্যয়, বিভক্তি বা স্বরবর্ণ যুক্ত হলে ং স্থলে ঙ লেখা হবে।
যেমন - আড়ঙে, টঙে, ঢঙে, ফড়িঙের, রঙিন, রাঙিয়ে।
যেমন- স্বরবর্ণ + ব্যঞ্জনবর্ণ : আম; ব্যঞ্জনবর্ণ + স্বরবর্ণ : মা (ম্ + আ); ব্যঞ্জনবর্ণ + স্বরবর্ণ + ব্যঞ্জনবর্ণ + ব্যঞ্জনবর্ণ : কষ্ট (ক্+অ+ষ্+ট্)।
বাংলা শুদ্ধ বানান শিখতে বা লিখতে গেলে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, পরিপূর্ণভাবে ধ্বনি অনুযায়ী বানান লেখার নিয়ম বিশ্বের কোনো ভাষায় নেই।
ধ্বনিতত্ত্ব অংশে আমরা দেখেছি যে, আমাদের ভাষায় সব বর্ণ সব ধ্বনির প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু সব বর্ণই আমাদের লিখনপদ্ধতির আশ্রয়।
আমাদের জানতে হবে কোথায় দীর্ঘস্বর (ঈ, ঊ), চন্দ্রবিন্দু (ঁ), কোথায় ন্, কোথায় ণ্, কোথায় শৃ স্ ষ্, কোথায় বিসর্গ (ঃ), কোথায় ঙ, ঞ, ক্ষ, ঘ, ঙ্গ, ক্ষ, ত, ৎ, হ্ম ইত্যাদি বসবে। এসবের ব্যবহার না জানলে বাংলা বানান ভুল হবে।
বাংলা বানানের ধারণা :-
এমন এক সময় ছিল যখন বাংলা বানানের নিয়মের প্রতি কারো আগ্রহ ছিল না। এ অবস্থায় ব্যক্তি নিজের মতো করে বানান ব্যবহার করত। এতে বানানের ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, শুরু হয় বাংলা বানানে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা।বাংলা ভাষায় বিভিন্ন উৎস থেকে শব্দ এসেছে, যেমন- সংস্কৃত, আরবি-ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি রয়েছে। বাংলায় আগত শব্দগুলো এসব শব্দের মূল উচ্চারণ এবং বাংলা ভাষার ধ্বনিব্যবস্থা অনুসারে সেগুলো লেখার প্রেরণা থেকেই উদ্ভাবিত হয় বাংলা বানানের নিয়ম।
এক্ষেত্রে প্রথম প্রচেষ্টা গ্রহণ করে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয় 'বাংলা' শব্দের বানানের নিয়ম।
পরবর্তীকালে বাংলা বানানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগী হয়েছে। বাংলাদেশ টেকস্ট বুক বোর্ড, বাংলা একাডেমি বানানরীতি তৈরি করেছে। টেকস্ট বুক বোর্ড ও বাংলা একাডেমির বানানরীতি এক হয়েছে। বাংলা একাডেমির বানানরীতি এখন সর্বত্র মানা হচ্ছে।
বাংলা শুদ্ধ বানানের নিয়ম :
নিচে বাংলা বানানের কিছু নিয়ম উদাহরণ দিয়ে বোঝানো হলো :আরও পড়ুন :- এককথায় প্রকাশ বলতে কি বুঝায়?
বাংলা বানানে ই ঈ উ ঊ-এর ব্যবহার :-
১ - যেসব তৎসম শব্দের বানানে হ্রস্ব ও দীর্ঘ উভয় স্বর ( ই ঈ উ ঊ ) অভিধানসিদ্ধ, সে ক্ষেত্রে এবং অতৎসম (তদ্ভব, দেশি, বিদেশি, মিশ্র) শব্দের বানানে শুধু হ্রস্বস্বর (ই - ি, উ - ু) হবে। যেমন -তৎসম শব্দে :
অঙ্গুরি, অটবি, আবির, আশিস্, ঊষা, কিংবদন্তি, কুটির গণ্ডি, গ্রন্থাবলি, চিৎকার, তরণি, তরি, দেশি, পদবি, বিদেশি, ভ্রু, শ্রেণি, সারণি।
অতৎসম শব্দে :
আদমি, আপিল, আমিন, আলমারি, উকিল, উর্দু, কাজি, কারবারি, কারিগরি, কুমির, কেরানি, খ্রিষ্ট, খ্রিষ্টাব্দ, গরিব, গাজি, গাড়ি, গিন্নি, চাকরি, জরুরি, জানুয়ারি ডিগ্রি, দরকারি দাবি, দিঘি, ধুলো, নার্সারি, পড়শি, পদবি, বাড়ি, বাঁশি, বাঙালি, বে-আইনি, ভুতুড়ে মিস্ত্রি, মুলো, মেয়েলি, যিশু, রেশমি, লটারি, লাইব্রেরি, শাশুড়ি, শিকারি, সবজি, সরকারি, সুন্নি, হাঞ্জি, হিজরি।
২ - কয়েকটি স্ত্রীবাচক শব্দের শেষে ঈ-কার (ী) হবে। যেমন:
অভিনেত্রী, কর্ত্রী, কল্যাণী, কিশোরী, গাভী, গুণবতী, চণ্ডী, চতুর্দশী, ছাত্রী, জননী, তরুণী, দাসী, দুঃখিনী, দেবী, নারী, পত্নী, পিশাচী, বিদুষী, বুদ্ধিমতী, মাতামহী, মানবী, যুবতী, লক্ষ্মী, শ্রীমতী, সতী, সরস্বতী, হরিণী, হৈমন্তী।
৩ - ভাষা ও জাতির নামের শেষে ই-কার (ি) হবে। যেমন :
আফগানি, আরবি, ইংরেজি, ইরাকি, ইরানি, ইহুদি, কাশ্মিরি, জাপানি, তুর্কি, নেপালি, পাকিস্তানি, পাঞ্জাবি, ফরাসি, বাঙালি, সাঁওতালি, সিন্ধি, হিন্দি।
৪ - বিশেষণবাচক 'আলি'- প্রত্যয়যুক্ত শব্দে ই-কার (ি) হবে। যেমন:
চৈতালি, পুবালি, বর্ণালি, মিতালি, মেয়েলি, রূপালি, সোনালি।
আরও পড়ুন :- বিরামচিহ্ন কি? এর কাজ?
বানানে ও-এর ব্যবহার :-
১ - ক্রিয়াপদের বানানে পদান্তে ও-কার (ো) অপরিহার্য নয়। যেমন :আনব, করত, খেলব, চলব, দেখত, ধরব, নাচব, পড়ব, বলত, মরব, মরাব, লড়ব, লিখব।
২ - বর্তমান অনুজ্ঞার সামান্যরূপে পদাস্তে ও-কার (ো) প্রদান করা যায়। যেমন :
আনো, করো, খেলো, চলো, দেখো, ধরো, নাচো, পড়ো, বলো, মারো, লড়ো, লেখো।
৩ - ‘আনো’ প্রত্যয়ান্ত শব্দের শেষে ও-কার (ো) হবে। যেমন:
করানো, খাওয়ানো, ঠ্যাঙানো, দেখানো, নামানো, পাঠানো, শোয়ানো।
৪ - অর্থ বা উচ্চারণ বিভ্রান্তির সুযোগ থাকলে কিছু বিশেষ্য, বিশেষণ ও অব্যয় শব্দে ও-কার (ো) দেওয়া আবশ্যক। যেমন :
- কাল (সময়), কালো (কৃষ্ণ বর্ণ);
- কোন (কী, কে, কোনটি), কোনো (বহুর মধ্যে এক);
- ভাল (কপাল), ভালো (উত্তম)।
বানানে বিসর্গ (ঃ)-এর ব্যবহার :-
১ - পদমধ্যস্থ বিসর্গ থাকবে।যেমন - অন্তঃস্থ, দুঃখ, দুঃসহ, নিঃশব্দ, পুনঃপুন, স্বতঃস্ফূর্ত।
২ - পদান্তে বিসর্গ (ঃ) থাকবে না।
যেমন - ক্রমশ, দ্বিতীয়ত, প্রথমত, প্রধানত, বস্তুত, মূলত।
৩ - অভিধানসিদ্ধ হলে পদমধ্যস্থ বিসর্গ বর্জনীয়।
যেমন - দুস্থ, নিশ্বাস, নিস্পৃহ, বহিস্থ, মনস্থ।
বানানে মূর্ধন্য-ণ ও দন্ত্য-ন-এর ব্যবহার :-
১ - যুক্তব্যঞ্জনে (তৎসম শব্দে) ট-বর্গীয় বর্ণের (ট ঠ ড ঢ) পূর্ববর্তী দন্ত্য-ন ধ্বনি মূর্ধন্য-ণ হয়। যেমন :কণ্টক, ঘণ্টা, নির্ঘণ্ট, বণ্টন, অকুণ্ঠ, আকণ্ঠ, উৎকণ্ঠা, উপকণ্ঠ, কণ্ঠ, কণ্ঠনালি, লুণ্ঠন, অকালকুষ্মাণ্ড, অণ্ড, কাল্ড, কান্ডারী, কুণ্ডল, খণ্ড, চণ্ডী, দণ্ড, পণ্ডিত, ভণ্ড, ভণ্ডামি।
২ - তৎসম শব্দে ঋ, ঋ-কার (ৃ), র, র-ফলা (), রেফ ( ), ষ, ক্ষ-এর পর মূর্ধন্য-ণ হয়।
যেমন - ঋণ, তৃণ, অরণ্য, ত্রাণ, বর্ণ, বিদূষণ, বিশেষণ, ক্ষণ, ক্ষণিক।
৩ - একই শব্দের মধ্যে ঋ, ঋ-কার, র, র-ফলা, রেফ, ষ, ক্ষ-এর যে কোনোটির পরে স্বরবর্ণ, ক-কৰ্গ, প-বর্গ এবং য, য়, হ, অনুস্বার (ং), – এই বর্ণগুলোর একটি বা একাধিক বর্ণ থাকলেও পরবর্তী ন-ধ্বনি মূর্ধন্য-ণ হয়।
যেমন - কৃপণ, নিরূপণ, অগ্রহায়ণ, অকর্মণ্য, নির্বাণ, সর্বাঙ্গীণ, অপেক্ষমাণ, বক্ষ্যমাণ।
৪ - প্র, পরা, পরি, নির- এই চারটি উপসর্গের পর নম্, নশ্, নী, নু, অন্, হন্ প্রভৃতি ধাতুর দন্ত্য-ন স্বলে মূর্ধন্য-ণ হয়।
যেমন -
- প্র : প্রণাম, প্রণব, প্রণীত, প্ৰণিপাত;
- পরা : পরায়ণ, পরাহ্ণ
- পরি: পরিণতি, পরিণাম, পরিণয়, নির: নির্ণীত, নির্ণয়, নির্ণায়ক।
৫ - যুক্তব্যঞ্জন গঠনে (অতৎসম শব্দে) ট-বর্গের পূর্বে দন্ত্য-ন হয়।
যেমন - ইন্টার, উইন্টার, কারেন্ট, গ্র্যান্ড, টেন্ডার, প্যান্ট, ব্যান্ড, লন্ডন, সেন্ট্রাল।
৬ - যুক্তব্যঞ্জন গঠনে (তৎসম, অতৎসম সকল শব্দে) ত-বর্গের পূর্বে দন্ত্য-ন হয়।
যেমন - অনন্ত, অন্তরঙ্গ, একান্ত, ক্লান্ত, জ্বলন্ত, মন্ত্রী, গ্রন্থ, পান্থ, অনিন্দ্য, পরান্ন, প্রচ্ছন্ন, রান্না, সান্নিধ্য।
৭ - সন্ধি ও সমাসযোগে গঠিত শব্দের বানানে দন্ত্য-ন বহাল থাকে।
যেমন - অগ্রনায়ক, অহর্নিশ, ক্ষুন্নিবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, দুর্নাম, দুর্নিবার, দুর্নীতি, নির্নিমেষ, শিক্ষাঙ্গন।
৮ - তদ্ভব, দেশি ও বিদেশি শব্দে সর্বত্র দন্ত্য-ন হবে।
যেমন - আপন, আয়রন, কুর্নিশ, কোরান, গ্রিন, চিরুনি, ঝরনা, ধরন, বার্নিশ, মেরুন, লণ্ঠন, শিহরন, হর্ন।
আরও পড়ুন :- বাচ্য কি ও কয়টি?
যেমন - ইন্টার, উইন্টার, কারেন্ট, গ্র্যান্ড, টেন্ডার, প্যান্ট, ব্যান্ড, লন্ডন, সেন্ট্রাল।
৬ - যুক্তব্যঞ্জন গঠনে (তৎসম, অতৎসম সকল শব্দে) ত-বর্গের পূর্বে দন্ত্য-ন হয়।
যেমন - অনন্ত, অন্তরঙ্গ, একান্ত, ক্লান্ত, জ্বলন্ত, মন্ত্রী, গ্রন্থ, পান্থ, অনিন্দ্য, পরান্ন, প্রচ্ছন্ন, রান্না, সান্নিধ্য।
৭ - সন্ধি ও সমাসযোগে গঠিত শব্দের বানানে দন্ত্য-ন বহাল থাকে।
যেমন - অগ্রনায়ক, অহর্নিশ, ক্ষুন্নিবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, দুর্নাম, দুর্নিবার, দুর্নীতি, নির্নিমেষ, শিক্ষাঙ্গন।
৮ - তদ্ভব, দেশি ও বিদেশি শব্দে সর্বত্র দন্ত্য-ন হবে।
যেমন - আপন, আয়রন, কুর্নিশ, কোরান, গ্রিন, চিরুনি, ঝরনা, ধরন, বার্নিশ, মেরুন, লণ্ঠন, শিহরন, হর্ন।
আরও পড়ুন :- বাচ্য কি ও কয়টি?
বানানে রেফ ()-এর ব্যবহার :-
রেফ-এর পর কোথাও ( তৎসম, অতৎসম সকল শব্দে) ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না।যেমন - কর্ম, কার্য, পূর্ব, ফর্দ, মর্মর, শর্ত, সূর্য।
বানানে ঙ / ং-এর ব্যবহার :-
১ - সন্ধিতে (তৎসম শব্দে) প্রথম পদের শেষে থাকলে ক-বর্গের পূর্বে ম স্থানে ং (অনুব্বার) হবে।যেমন - অহংকার (অহম্ +কার), কিংকর, কিংবদন্তি, ঝংকার, ভয়ংকর, সংকল্প, সংকীর্ণ, সংগীত, সংঘ, সংঘাত, হুংকার।
২ - উপযুক্ত নিয়মে সন্ধিজাত না হলে, যুক্তব্যঞ্জনে ক-বর্গের পূর্বে স্ স্থানে ঙ (উয়ে)) হবে।
যেমন - আকাঙ্ক্ষা, অঙ্কুর, অঙ্গ, ইঙ্গিত, উচ্ছৃঙ্খল, কঙ্কাল, কাঙ্ক্ষিত, গঙ্গা, জঙ্গি, দাঙ্গা, পঙ্কজ, পঙ্গু, বঙ্গ, ভঙ্গি, লঙ্ঘন, শিক্ষাঙ্গন, সঙ্গী।
৩ - প্রত্যয় ও বিভক্তিহীন শব্দের শেষে (অনুস্বার) ব্যবহৃত হয়।
যেমন - আড়ং, ইদানীং, এবং, ঠ্যাং, ঢং, পালং, ফড়িং, বরং, রং, শিং।
৪ - তবে অনুষারযুক্ত শব্দে প্রত্যয়, বিভক্তি বা স্বরবর্ণ যুক্ত হলে ং স্থলে ঙ লেখা হবে।
যেমন - আড়ঙে, টঙে, ঢঙে, ফড়িঙের, রঙিন, রাঙিয়ে।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.