বিশেষণ কাকে বলে :-
যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম এবং ক্রিয়াপদের অবস্থা, দোষ, গুণ, সংখ্যা, পরিমাণ প্রভৃতি উল্লেখ করে, তাকেই বিশেষণ পদ বলে।বিশেষণ পদের উদাহরণ - ভাঙা ঘর, অন্ধকার রাত, চলন্ত গাড়ি - এই উদাহরণ গুলোর মধ্যে ভাঙা, অন্ধকার, চলন্ত এই পদগুলো বিশেষণ পদ।
এগুলো ঘর, রাত, গাড়ি বিশেষ্য পদের পূর্বে বসে বিশেষ্য পদগুলোকে বিশেষিত করেছে। এ ধরনের উদাহরণগুলো হলো বিশেষ্যের বিশেষণ।
উপরে আমরা বিশেষণ পদ কাকে বলে? তা নিয়ে আলোচনা করলাম, এবার বিশেষণ পদ কত প্রকার ও কি কি এবং তার গঠন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।
ক্রিয়াজাত - খাবার পানি, অনাগত দিন, হারানো সম্পতি।
অব্যয়জাত - বড়লোক, আচ্ছা মানুষ, উপরি দেন-পাওনা।
বিশেষণের বিশেষণ কাকে বলে :-
যে বিশেষণ পদ অন্য বিশেষণ পদের গুণ বা অবস্থা প্রকাশ করে তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে।
অথবা আমরা বলতে পারি, যে পদ নাম বিশেষণ কিংবা ক্রিয়া বিশেষণকে সম্পূর্ণ রূপে বিশেষিত করে, তখন তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে।
যেমন - খুব গরম দুধ। নিতান্ত ভালো মানুষ। অতি বড়ো নিন্দুকেও একথা বলতে পারবে না। সামান্য একটু দুধ দাও, অতিশয় মন্দ কথা। রকেট অতি দ্রুত চলে।
অব্যয়ের বিশেষণ কাকে বলে :-
কোনো পদ যখন কোনো অব্যয় পদের গুণ, অবস্থা, সংখ্যা প্রভৃতি উল্লেখ করে, তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে।
অথবা আমরা বলতে পারি, যে ভাব বিশেষণ অব্যয় পদ বা অব্যয় পদের অর্থকে বিশেষিত করে, তখন তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে।
যেমন - ঠিক নীচে, শত ধিক্, ঠিক ওপরে দেখতে পাবে। ধিক্ তারে, শত ধিক নির্লজ্জ যে জন।
বাক্যর বিশেষণ কাকে বলে:-
কখনও কখনও কোনো বিশেষণ পদ একটি সম্পূর্ণ বাক্যকে বিশেষিত করে, তখন তাকে বাক্যে বিশেষণ বলা হয়।
যেমন - দুর্ভাগ্যক্রমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশ আবার নানা সমস্যাজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বাস্তবিকই আজ আমাদের কঠিন পরিশ্রমের খুবই প্রয়োজন।
বিশেষণের অভিশায়ন কাকে বলে:-
বিশেষণ পদ যখন দুইবা ততোধিক বিশেষ্য পদের মধ্যে গুণ, অবস্থা, পরিমাণ প্রভৃতি বিষয়ে তুলনায় একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝিয়ে থাকে, তখন তাকে বিশেষণের অতিশায়ন বলে।
যেমন - যমুনা একটি দীর্ঘ নদী, পদ্মা দীর্ঘতর, কিন্তু মেঘনা বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী। সূর্য, পৃথিবী ও চন্দ্রের মধ্যে তুলনায় সূর্য বৃহত্তম, পৃথিবী চন্দ্রের চেয়ে বৃহত্তর এবং চন্দ্র পৃথিবী অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর।
বিশেষণের গঠন পদ্ধতি :-
বিভিন্ন ভাবে বিশেষণ গঠিত হতে পারে। যেমন -ক্রিয়াজাত - খাবার পানি, অনাগত দিন, হারানো সম্পতি।
অব্যয়জাত - বড়লোক, আচ্ছা মানুষ, উপরি দেন-পাওনা।
সর্বনামঙ্গাত - কোথা-কার কে, কবেকার গল্প, স্থায়ী ঠিকানা।
সমাসসিদ্ধ - আনহারা, চৌচালা ঘর, বেকার।
অনুকার অন্যয়জাত - টসটসে ফল, তকতকে মেঝে, কলকনে শীত, শনশনে হাওয়া, পিকিধিকি আগুন।
কৃদন্ত - কৃতী সন্তান, অতীত কাল, জানাশোনা মানুষ, শায়ে-চলা পথ।
তদ্ধিতান্ত - মেঠো পথ, জাতীয় সম্পদ, নৈতিক বল উপসর্গযুক্ত - অপহৃত সম্পদ, নির্জলা মিথ্যে, নিখুঁত কাজ।
অনুকার অন্যয়জাত - টসটসে ফল, তকতকে মেঝে, কলকনে শীত, শনশনে হাওয়া, পিকিধিকি আগুন।
কৃদন্ত - কৃতী সন্তান, অতীত কাল, জানাশোনা মানুষ, শায়ে-চলা পথ।
তদ্ধিতান্ত - মেঠো পথ, জাতীয় সম্পদ, নৈতিক বল উপসর্গযুক্ত - অপহৃত সম্পদ, নির্জলা মিথ্যে, নিখুঁত কাজ।
আরও পড়ুন :- সর্বনাম পদ কাকে বলে ও কয় প্রকার?
বিদেশি - লাওয়ারিশ কার, দরপত্তনি তালুক, লাখেরাজ দলিল, নাস্তানাবুদ অবস্থা।
বিদেশি - লাওয়ারিশ কার, দরপত্তনি তালুক, লাখেরাজ দলিল, নাস্তানাবুদ অবস্থা।
বিশেষণের প্রকারভেদ :-
বিশেষণ পদকে প্রধানত দুটি শ্রেনীতে ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-- নাম বিশেষণ এবং
- ভাব বিশেষণ।
নাম বিশেষণ কয় প্রকার :-
নাম বিশেষণকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-- বিশেষ্যের বিশেষণ এবং
- সর্বনামের বিশেষণ।
- রূপবাচক - কালো মেঘ, নীল আকাশ, সবুজ মাঠ।
- গুণবাচক - দক্ষ কারিগর, ঠাণ্ডা হাওয়া, চৌকস লোক।
- অবস্থাবাচক - মোটা মেয়ে, রোগা ছেলে, তাজা মাছ, খোঁড়া পা।
- সংখ্যাবাচক - শ টাকা, হাজার লোক, দশ দশা।
- ক্রমবাচক - পঞ্চাশ পৃষ্ঠা, অষ্টম শ্রেণি, প্রথমা কন্যা।
- পরিমাণবাচক - এক কেজি চিনি, তিন কিলোমিটার রাস্তা, বিঘাটেক জমি, দশ শতাংশ ভূমি, হাজার টনী জাহাজ।
- অংশবাচক - খোল আনা দখল, সিকি পথ, অর্ধেক সম্পত্তি।
- উপাদানবাচক - কাঠের দরজা, পাথরের ঘর, কালো মাটি।
- প্রশ্নবাচক - কেমন অবস্থা? কতদূর পথ?
- নির্দিষ্টতা জ্ঞাপক - এই মেয়ে, ষোলই ডিসেম্বর ইত্যাদি।
ভাব বিশেষণ কয় প্রকার :-
ভাব বিশেষণকে আবার চার ভাগে ভাগে করা যায়। যথা-আরও পড়ুন :- বিশেষ্য পদ কি ও কয়টি?
যে বিশেষণ পদ সাধারণত কোনো বিশেষ্য বা সর্বনাম পদকে বিশেষিত করে, তাকেই বলা হয় নাম বিশেষণ।
বিশেষ্যের বিশেষণ কাকে বলে :-
যে পদ বিশেষ্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ, ইত্যাদি প্রকাশ করে তাকে বিশেষ্যের বিশেষণ বলে।
যেমন - মেঘলা দিন, বুদ্ধিমান মানুষ, অসুস্থ লোক, অনেক মানুষ, ভালো ছাত্র-ছাত্রী।
সর্বনামের বিশেষণ কাকে বলে :-
যে বিশেষণ পদ কোনো সর্বনাম পদের গুণ, প্রকৃতি ইত্যাদি বোঝায় তাকে সর্বনামের বিশেষণ বলে।
যেমন - বোকা তুমি, তাই ওদের কথা বিশ্বাস করলে। মূর্খ তুই, এ কথা কী বুঝবি।
- ক্রিয়া বিশেষণ,
- বিশেষণের বিশেষণ,
- অব্যয়ের বিশেষণ এবং
- বাক্যের বিশেষণ।
বিভিন্ন প্রকার বিশেষণের সংজ্ঞা :-
নাম বিশেষণ কাকে বলে:-যে বিশেষণ পদ সাধারণত কোনো বিশেষ্য বা সর্বনাম পদকে বিশেষিত করে, তাকেই বলা হয় নাম বিশেষণ।
বিশেষ্যের বিশেষণ কাকে বলে :-
যে পদ বিশেষ্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ, ইত্যাদি প্রকাশ করে তাকে বিশেষ্যের বিশেষণ বলে।
যেমন - মেঘলা দিন, বুদ্ধিমান মানুষ, অসুস্থ লোক, অনেক মানুষ, ভালো ছাত্র-ছাত্রী।
সর্বনামের বিশেষণ কাকে বলে :-
যে বিশেষণ পদ কোনো সর্বনাম পদের গুণ, প্রকৃতি ইত্যাদি বোঝায় তাকে সর্বনামের বিশেষণ বলে।
যেমন - বোকা তুমি, তাই ওদের কথা বিশ্বাস করলে। মূর্খ তুই, এ কথা কী বুঝবি।
আরও পড়ুন :- পদ কাকে বলে ও কয় প্রকার?
ভাব বিশেষণ কাকে বলে :-
যে পদ সাধারণত বিশেষ্য ও সর্বনাম পদ ভিন্ন অন্য কোনো পদকে বিশেষিত করে তাকেই ভাব বিশেষণ বলে।
ক্রিয়ার বিশেষণ কাকে বলে :-
যে বিশেষণ পদ ক্রিয়ার গুণ, অবস্থা ইত্যাদি নির্ণয় করে তাকে ক্রিয়ার বিশেষণ বলে।
অথবা আমরা বলতে পারি, যে পদ ক্রিয়া সংগঠনের ভাব, কাল বা রূপ নির্দেশ করে, তাই ক্রিয়া বিশেষণ।
যেমন - সে তাড়াতাড়ি লেখে। মিনতি আস্তে আস্তে লেখে। বাতাস ধীরে বইছে। সে খুব তাড়াতাড়ি হাটল। পরে একবার এসো।
ভাব বিশেষণ কাকে বলে :-
যে পদ সাধারণত বিশেষ্য ও সর্বনাম পদ ভিন্ন অন্য কোনো পদকে বিশেষিত করে তাকেই ভাব বিশেষণ বলে।
ক্রিয়ার বিশেষণ কাকে বলে :-
যে বিশেষণ পদ ক্রিয়ার গুণ, অবস্থা ইত্যাদি নির্ণয় করে তাকে ক্রিয়ার বিশেষণ বলে।
অথবা আমরা বলতে পারি, যে পদ ক্রিয়া সংগঠনের ভাব, কাল বা রূপ নির্দেশ করে, তাই ক্রিয়া বিশেষণ।
যেমন - সে তাড়াতাড়ি লেখে। মিনতি আস্তে আস্তে লেখে। বাতাস ধীরে বইছে। সে খুব তাড়াতাড়ি হাটল। পরে একবার এসো।
বিশেষণের বিশেষণ কাকে বলে :-
যে বিশেষণ পদ অন্য বিশেষণ পদের গুণ বা অবস্থা প্রকাশ করে তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে।
অথবা আমরা বলতে পারি, যে পদ নাম বিশেষণ কিংবা ক্রিয়া বিশেষণকে সম্পূর্ণ রূপে বিশেষিত করে, তখন তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে।
যেমন - খুব গরম দুধ। নিতান্ত ভালো মানুষ। অতি বড়ো নিন্দুকেও একথা বলতে পারবে না। সামান্য একটু দুধ দাও, অতিশয় মন্দ কথা। রকেট অতি দ্রুত চলে।
অব্যয়ের বিশেষণ কাকে বলে :-
কোনো পদ যখন কোনো অব্যয় পদের গুণ, অবস্থা, সংখ্যা প্রভৃতি উল্লেখ করে, তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে।
অথবা আমরা বলতে পারি, যে ভাব বিশেষণ অব্যয় পদ বা অব্যয় পদের অর্থকে বিশেষিত করে, তখন তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে।
যেমন - ঠিক নীচে, শত ধিক্, ঠিক ওপরে দেখতে পাবে। ধিক্ তারে, শত ধিক নির্লজ্জ যে জন।
আরও পড়ুন :- অব্যয় পদ কি? উদাহরণ দাও
বাক্যর বিশেষণ কাকে বলে:-
কখনও কখনও কোনো বিশেষণ পদ একটি সম্পূর্ণ বাক্যকে বিশেষিত করে, তখন তাকে বাক্যে বিশেষণ বলা হয়।
যেমন - দুর্ভাগ্যক্রমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশ আবার নানা সমস্যাজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বাস্তবিকই আজ আমাদের কঠিন পরিশ্রমের খুবই প্রয়োজন।
বিশেষণের অভিশায়ন কাকে বলে:-
বিশেষণ পদ যখন দুইবা ততোধিক বিশেষ্য পদের মধ্যে গুণ, অবস্থা, পরিমাণ প্রভৃতি বিষয়ে তুলনায় একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝিয়ে থাকে, তখন তাকে বিশেষণের অতিশায়ন বলে।
যেমন - যমুনা একটি দীর্ঘ নদী, পদ্মা দীর্ঘতর, কিন্তু মেঘনা বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী। সূর্য, পৃথিবী ও চন্দ্রের মধ্যে তুলনায় সূর্য বৃহত্তম, পৃথিবী চন্দ্রের চেয়ে বৃহত্তর এবং চন্দ্র পৃথিবী অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.