কথ্য ভাষা কি বা কাকে বলে :-
শিক্ষক যখন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন, কিংবা কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে আমরা বক্তব্য উপস্থাপন করি তখন ভাষা ব্যবহারে সচেতনতা দেখা যায়। তাই বিশেষ পরিবেশ ও প্রয়োজনের বাইরে যখন ভাষা ব্যবহার করা হয় তাকে কথ্য ভাষা বলে।অথবা আমরা বলতে পারি, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ যে ভাষায় কথা বলি তাই কথ্য ভাষা।
আরও পড়ুন :- ভাষা কাকে বলে?
কথ্য ভাষার একটি বৈশিষ্ট্য হল অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে বন্ধু কিংবা সহকর্মী বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এই কথ্য ভাষারূপ ব্যবহার করা হয়।
কথ্য ভাষার একটি বৈশিষ্ট্য হল অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে বন্ধু কিংবা সহকর্মী বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এই কথ্য ভাষারূপ ব্যবহার করা হয়।
কথ্য ভাষা কত প্রকার :-
কথ্য বা ন্যারেটিভ ভাষার মূলত ৪ প্রকার রয়েছে:1. অভিধানমূলক কথ্য (Descriptive Narrative): এই ধরনের কথ্যে কোন ঘটনা বা ব্যক্তিকে বর্ণনা করা হয়। এখানে বিবরণমূলক শব্দাবলী ব্যবহৃত হয়।
2. ঐতিহাসিক কথ্য (Historical Narrative): এই ধরনের কথ্যে ঐতিহাসিক ঘটনা বা ব্যক্তিদের কথা বলা হয়। এখানে সময়ক্রম অনুসারে ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়।
3. প্রতিক্রিয়ামূলক কথ্য (Reactional Narrative): এই ধরনের কথ্যে কোন ঘটনা বা অভিজ্ঞতার প্রতি লেখকের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়। এখানে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ পায়।
4. পরামর্শমূলক কথ্য (Advisory Narrative): এই ধরনের কথ্য হলো পাঠকদের জন্য পরামর্শ বা প্রস্তাবনা। এখানে কোন বিষয়ে সংক্ষিপ্ত তথ্য এবং পরামর্শ প্রদান করা হয়।
সাধারণত, এই চারটি প্রকারের মিশ্রণ দিয়েই কথ্য রচনা তৈরি করা হয়।
কথ্য ভাষার বৈশিষ্ট্য :-
কথ্য বা ন্যারেটিভ ভাষার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:১. সহজ ও স্বাভাবিক ভাষার প্রয়োগ: কথ্য ভাষায় সাধারণত বিভিন্ন ঘটনা, অনুভূতি বা বিষয়বস্তু সহজ ভাবে তুলে ধরা হয়। এখানে দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো সহজ শব্দাবলী ব্যবহার করা হয়।
২. সহজ বাক্যগঠন ও ভাষার নড়াচাড়ার প্রয়োগ: কথ্য ভাষায় সাধারণত সহজ এবং নড়াচাড়া পূর্ণ বাক্যগঠনের প্রয়োগ করা হয়।
৩. একদল বিশেষ শ্রোতা বা পাঠকের জন্যের লেখা: কথ্য ভাষায় একদল বিশেষ শ্রোতা বা পাঠকের জন্যের লেখা লিখা হয়।
৪. সংবেদনশীলতা ও সহানুভূতির প্রকাশ: কথ্য ভাষায় বক্তার ব্যক্তিগত অনুভূতি, মনোভাব এবং সংবেদনশীলতার প্রকাশ ঘটে।
৫. উপসংহারমূলক শেষাংশ: কথ্য ভাষার শেষে সাধারণত লেখকের বা বক্তার মতামত বা উপসংহারমূলক মন্তব্য থাকে।
কথ্য ভাষা ও লেখ্য ভাষার পার্থক্য :-
কথ্য ভাষা ও লেখ্য ভাষার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে:১) কথ্য ভাষায় বাক্যাংশ নড়াচাড়া ও সহজ শব্দাবলী ব্যবহার করা হয়। লেখ্য ভাষায় নির্দিষ্ট সাজানো বাক্য ও ফুটিয়ে তোলা শব্দাবলীর প্রয়োগ করা হয়।
২) কথ্য ভাষা অত্যন্ত সহজ, স্বাভাবিক এবং আড়ালহীন। লেখ্য ভাষায় এমন নয়, বরং সেখানে সংকোচপূর্ণতা দেখা যায়।
৩) কথ্য ভাষায় ব্যবহৃত বানান-বিন্যাস ও বাক্য-গঠন অনেক ক্ষেত্রেই ভুল থাকতে পারে। আবার লেখ্য ভাষায় সবসময়ই সঠিক বানান বিন্যাস এবং বাক্যগঠনের জোর দেয়া থাকে।
৪) কথ্য ভাষায় অনেক সময় ভাষিক ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করা হয়, যেমন হাসি, কাঁদা, চিৎকার করা ইত্যাদি। আর লেখ্য ভাষায় তা থাকে না।
৫) কথ্য ভাষা শ্রোতার কাছে বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়, আর লেখ্য ভাষা পাঠকের কাছে বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
0 মন্তব্যসমূহ
Please do not enter any spam link in the comment box.